গত রোববার রাতে লিভারপুলের কাছে হেরে প্রিমিয়ার লিগ থেকে অবনমন নিশ্চিত হয়েছে লেস্টার সিটির। বাংলাদেশের জাতীয় দলের মিডফিল্ডার হামজা চৌধুরী খেলতেন লেস্টারে। অবশ্য গত জানুয়ারিতে লেস্টার থেকে ধারে ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় স্তরের লিগ চ্যাম্পিয়নশিপের দল শেফিল্ড ইউনাইটেডে খেলছেন হামজা। চলতি মৌসুম শেষে ধারের মেয়াদও শেষ হবে। লেস্টারের অবনমনে তাই পরের মৌসুমে হামজাকে প্রিমিয়ার লিগে পুনরায় দেখার স্বপ্নে একটা ধাক্কা লেগেছিল।
স্বপ্ন অবশ্য তখনও পুরোপুরি শেষ হয়ে যায়নি। চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে প্রিমিয়ার লিগে সরাসরি জায়গা করে নেওয়ার দৌড়ে ছিল শেফিল্ড। আর শেফিল্ড শীর্ষ লিগে উঠে ধারের মেয়াদ বাড়ালে, হামজাকে প্রিমিয়ার লিগে দেখা যাবে আবারও- এমন সমীকরণই হয়তো মেলানোর কথা ভাবছিলেন হামজা সমর্থকেরা।
কিন্তু ভবিষ্যতের এতসব হিসেব-নিকেষ করার আগে সমীকরণে নতুন জট লেগেছে। গতকাল চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচে বার্নলির কাছে ২-১ ব্যবধানে হেরেছে শেফিল্ড। এতে প্রিমিয়ার লিগে সরাসরি জায়গা করে নেওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করেছে হামজার দল। শেফিল্ডের সুযোগ হারানোর দিনে লিডস ইউনাইটেডকে সঙ্গে নিয়ে পরের মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগে খেলা নিশ্চিত করেছে বার্নলি।
চ্যাম্পিয়নশিপের সর্বশেষ ৫ ম্যাচের ৪টিতে হারা শেফিল্ডের প্রিমিয়ার লিগে ওঠার সুযোগ অবশ্য একবারে শেষ হয়ে যায়নি। বর্তমানে ৪৪ ম্যাচে ৮৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তৃতীয় স্থানে আছে হামজার দল। লিগে আরও দুটি ম্যাচ বাকি থাকলেও তৃতীয় স্থানটি নিশ্চিত শেফিল্ডের। লিগ রাউন্ড শেষে পয়েন্ট তালিকার তিন থেকে ছয় নম্বরে থাকা দলগুলো খেলে প্লে-অফ। দুই লেগের সেমিফাইনালের পর ফাইনাল পেরিয়ে একটি দল সুযোগ পাবে পরের মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগ খেলার।
গতকাল সুযোগ হারানোর দিনে শেফিল্ড হারলেও পুরো ম্যাচে ছন্দে ছিলেন হামজা। রাইট ব্যাক পজিশনে খেলতে খেলা হামজা ৪৭টি পাস দিয়েছিলেন, এর ৪১টি সতীর্থকে খুঁজে পেয়েছে। এর মধ্যে ফাইনাল থার্ডে পাস দিয়েছিলেন ৬টি। তিনবার ট্যাকল করে দুবার সফল হয়েছেন। প্রতিপক্ষের পা থেকে বল কেড়ে নিয়েছেন ৭বার। আর সব মিলিয়ে বল ক্লিয়ার করেছেন ৯ বার।
ম্যাচ শেষে বার্নলি সমর্থকদের রোষানলে পড়েছিলেন হামজা সহ শেফিল্ডের বেশ কয়েকজন ফুটবলার। বার্নলি সমর্থকেরা মাঠে প্রবেশ করেন। হামজাদের দিকে আক্রমণাত্মক আচরণ, কটূক্তি করতে থাকেন তারা। এ প্রসঙ্গে শেফিল্ড কোচ ক্রিস ওয়াইল্ডার বলেছেন, ‘রেফারি আমাদের বলেছিলেন, আমাদের চারপাশে নিরাপত্তা রক্ষীরা থাকবেন। কিন্তু মনে হয় তারা হারিয়ে গিয়েছিলেন!’
শেফিল্ড কোচ আরও বলেন, ‘ওরা (বার্নলি সমর্থকেরা) এসে যা করছিল, সেটা ছিল ভয়ঙ্কর। আমরা বুঝতে পারি যে, (প্রিমিয়ার লিগে সুযোগ পাওয়ায়) ওরা খুব আবেগি হয়ে পড়েছিল। কিন্তু ফুটবল ক্লাব (বার্নলি) ও নিরাপত্তা রক্ষীদের থেকে আমরা কোনো ধরনের সুরক্ষা পাইনি। রেফারিও বিষয়টা খেয়াল করেছেন।’