সাবেক বার্সেলোনা কোচ শাভি এরনান্দেসের ওপর এখনো রাগ কমেনি ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার রাফিনিয়ার। সর্বশেষ দুই মৌসুম কাতালান কোচের অধীনে নিয়মিত খেলার সুযোগ না পাওয়ায় যে ক্ষোভ জমেছিল, এই মৌসুমে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে যেন সেটারই বহিঃপ্রকাশ করছেন ২৮ বছর বয়সী তারকা।
শাভির অধীনে এমনই হাল হয়েছিল, শোনা যাচ্ছিল এই মৌসুমে বার্সেলোনা তাঁকে বিক্রি করে দেবে। তবে নতুন কোচ হানসি ফ্লিক এসেই মত বদলেছেন তাঁর। এবং এমনই খেলেছেন, এখন পর্যন্ত বালন দ’র জয়ের দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে তিনি।
শাভির অধীনে একটি লিগ জিতলেও রাফিনিয়ার ওপর আস্থা রাখতেন না কোচ। নিয়মিত একাদশে দেখা যেত না, আর একাদশে থাকলেও অধিকাংশ ম্যাচেই তাঁকে সবার আগে বদলি করতেন বার্সেলোনা কোচ। তাঁর চেয়ে উসমান দেম্বেলে, লামিন ইয়ামাল ও ফেরান তোরেসকেই এগিয়ে রাখতেন শাভি।
ইসাবেলা পাগলিয়ারির ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাফিনিয়া এ ব্যাপারে বলেছেন, ‘আমার মনে হতো কোচিং স্টাফ আস্থা রাখতে পারত না আমার ওপর। যখন অন্য কাউকে পেত না, তখন আমাকে খেলাত, আমি ৯০ মিনিট খেলতাম। যতটুকু সম্ভব আমি মাঠে দিতাম এবং ম্যাচে প্রভাব ফেলতাম। কিন্তু যখনই অন্য খেলোয়াড়কে পাওয়া যেত, কোনো চিন্তা ছাড়াই তাদের নেওয়া হতো আমার জায়গায়।’
শুধু একাদশ নির্বাচনের সময় না, রাফিনিয়ার সঙ্গে বৈষম্যে নাকি ম্যাচ পরিস্থিতির কথাও বিবেচনা করতেন না শাভি, ‘মাঝেমাঝে আমি ৬০ মিনিট সবকিছু করার পরও আমাকে তুলে নেওয়া হতো। একটা ভিডিও তো বিখ্যাত হয়ে গেছে, আমাকে তুলে নেওয়ার পর বেঞ্চে গিয়ে ঘুসি মারছি। আমার মনে হয়, ম্যাচটা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে (২০২৩ সালে ইউরোপা লিগে)। আমি খুব ভালো করছিলাম। গল করেছি, একটি গোল বানিয়েও দিয়েছি। যতদূর মনে পড়ে ম্যাচে তখন ২-২ এবং তখন আমাকে তুলে নিল।’
রাফিনিয়া এখনো এ নিয়ে আক্ষেপ করেন, ‘আমি মাত্রই খুব ভালো একটা সুযোগ সৃষ্টি করেছিলাম। খুব ভালো ছন্দে ছিলাম, এবং ভালো খেলছিলাম। কিন্তু আমাকেই সবার আগে তোলা হলো। আমি বিশ্বাসই করতে পারিনি।’
রাফিনিয়ার স্মৃতি অবশ্য বিভ্রান্ত করছে তাঁকে। সে ম্যাচে সবার শেষে ৮৩ মিনিটে বদলি করা হয়েছিল রাফিনিয়াকে। বদলির মিনিট সাতেক আগে গোল করে বার্সেলোনাকে সমতায় ফিরিয়েছিলেন তিনি।
শাভির অধীনে দুই মৌসুমে ৮৭ ম্যাচ খেলেছেন রাফিনিয়া। যার মধ্যে ৬০ ম্যাচে একাদশে ছিলেন, আর মাত্র ৮ ম্যাচে পুরো ৯০ মিনিট খেলতে পেরেছেন তিনি। দুই বছরে করেছিলেন মাত্র ২০ গোল। আর এই মৌসুমে এরই মধ্যে ৩১ গোল করেছেন। ৫২ ম্যাচের ৪৮টিতেই শুরু থেকে নেমেছেন, ৩৩ ম্যাচ পুরো ম্যাচ খেলেছেন।
শাভির সঙ্গে মিটমাট করে নিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু বার্সা কিংবদন্তি অনড় ছিলেন নিজের অবস্থানে। রাফিনিয়া জানিয়েছেন, ‘আমি পরিস্থিতির মিটমাট করতে চেয়েছি। বেশ কয়েকবার কথা বলেছি, কিন্তু কোনো পরিবর্তন আসেনি। নিজের মতোই চিন্তা করতেন তিনি।’