এক বছর চেষ্টার পর বর্তমানে রেয়াল মাদ্রিদের দায়িত্বে থাকা কার্লো আনচেলত্তিকে কোচ হিসেবে পেয়েছে ব্রাজিল ফুটবল। আর ইতালিয়ান কিংবদন্তিকে নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একটি ঐতিহ্য ফিরে আসছে ব্রাজিল ফুটবলে। ক্লাব বনাম জাতীয় দলের প্রীতি ম্যাচ দেখা যাবে আবার।
এক সময় ক্লাবগুলো বিভিন্ন দেশে সফর করতে গিয়ে জাতীয় দলের বিপক্ষে নিজেদের ঝালিয়ে নিত। ১৯৬৫ সালে ব্রাজিলের বিপক্ষে খেলে এসেছে আর্সেনাল। ১৯৯৯ সালে বার্সেলোনার শতবর্ষপূর্তি উদ্যাপন করতে কাতালান ক্লাব আমন্ত্রণ জানিয়েছিল ব্রাজিলকে।
২-২ গোলে ড্র হওয়া সে ম্যাচে ব্রাজিলের পক্ষে গোল করেছিলেন বার্সেলোনার জার্সিতে খেলা দুই ফরোয়ার্ড রোনালদো এবং রিভালদো। এদের মধ্যে রিভালদো তখন বার্সেলোনাতেই খেলতেন। ১৯৬১ সালে তো আনুষ্ঠানিক ম্যাচেই (কমিউনিটি শিল্ড) টটেনহামের মুখোমুখি হয়েছিল ইংল্যান্ড।
স্বয়ং কার্লো আনচেলত্তি এসি মিলানের জার্সিতে ক্যারিয়ার শেষ করেছেন এমনই এক প্রীতি ম্যাচ দিয়ে। ১৯৯২ সালে ফুটবলার হিসেবে নিজের শেষ ম্যাচটি আনচেলত্তি ব্রাজিলের বিপক্ষেই খেলেছিলেন।
এই শতাব্দীতে ক্লাব বনাম জাতীয় দলের প্রীতি ম্যাচ হারিয়েই গিয়েছিল। গত বছর লিওনেল মেসির ইন্টার মায়ামি এল সালভাদরের বিপক্ষে খেললেও এ ম্যাচ খুব একটা আগ্রহ জাগায়নি। মেসির কারণে মায়ামি এখন কিছুটা গুরুত্ব পেলেও বিশ্ব ফুটবলে ১০০-এর কাছাকাছি র্যাঙ্কিংয়ে থাকা এল সালভাদরের সঙ্গে সে ম্যাচ স্বাভাবিকভাবেই পাতে ওঠেনি।
আনচেলত্তির ব্রাজিলে কোচ হওয়ার সুবাদে সে খামতি দূর হচ্ছে। মাদ্রিদের সঙ্গে আনচেলত্তির চুক্তি ২০২৬ পর্যন্ত ছিল, তার এক বছর আগেই তাঁকে ছেড়ে দেওয়ায় বকেয়া বেতন নিয়ে একটি ঝামেলা সৃষ্টি হয়েছিল। সে ঝামেলায় আনচেলত্তির ব্রাজিল কোচ হওয়া নিয়েই শঙ্কা জেগেছিল।
পরে দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে। তখনই শোনা গিয়েছিল, সমঝোতার অংশ হিসেবে ব্রাজিলের সঙ্গে একটি প্রীতি ম্যাচ খেলবে রেয়াল মাদ্রিদ। ব্রাজিলিয়ান সংবাদমাধ্যম ও গ্লোবো বলছে, সেই গুঞ্জনটি বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। এখনো দিনক্ষণ বা ভেন্যু ঠিক না হলেও, আগামী ২৬ মে আনচেলত্তি আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রাজিলের দায়িত্ব নেওয়ার পরই সব দ্রুত সম্পন্ন হবে। আর সেক্ষেত্রে ভিনিসিয়ুস, রদ্রিগো, এন্দরিকরা কোন জার্সিতে খেলবেন- সে কৌতূহলও জাগছে।
দুই দফায় ছয় বছর মাদ্রিদের দায়িত্বে থেকে তিনটি চ্যাম্পিয়নস লিগ, দুইটি লা লিগা ও দুটি কোপা দেল রে জিতেছেন আনচেলত্তি। ব্রাজিল এর চেয়েও বড় চ্যালেঞ্জ তাঁর সামনে। ২০০২ সালের পর থেকে বিশ্বকাপ জিততে না পারা দেশটি তাদের স্বপ্নের ভার তাঁর কাঁধে তুলে দিয়েছে।
এখন দেখার বিষয়, দায়িত্ব পেয়ে আনচেলত্তির প্রথম ম্যাচটিই তাঁর সাবেক দলের বিপক্ষে খেলবেন কিনা। আগামী জুনেই ক্লাব বিশ্বকাপ। এর আগেই বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচ। এর আগেই দলকে বাজিয়ে দেখতে মাদ্রিদের মতো প্রতিপক্ষ পেলে সুবিধাই হবে আনচেলত্তির।