পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল দুদিন আগেই তাদের হেড কোচ হিসেবে কার্লো আনচেলত্তিকে নিয়োগ দিয়েছে। তবে কোচ নিয়োগ দেওয়ার পরেই কপাল পুড়েছে দেশটির ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি এদনালদো রদ্রিগেসের।
রিও দে জেনিরো’র এক আদালত ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশনের সকল পদকে স্থগিতের আদেশ দেন। সেই সঙ্গে আদালত সিবিএফের সহসভাপতি ফের্নান্দো সারনে - যিনি রদ্রিগেসের অপসারণের জন্য আবেদন করেছিলেন - তাঁকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট নিয়োগ দিয়েছেন। এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স তাদের এক প্রতিবেদনে ব্রাজিলের সভাপতির পদ হারানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। আদালতের এই রায় নিয়ে রয়টার্সের পক্ষ থেকে সিবিএফের কাছে মন্তব্য জানতে চাওয়া হলে তারা এই মুহূর্তে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি এদনালদো রদ্রিগেসের বিরুদ্ধে মূলত স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগে আদালত পুরো বোর্ডকেই সরানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার নথি থেকে দেখা গেছে, এই বছরের শুরুতে রদ্রিগেসের সঙ্গে একটি চুক্তিতে সাবেক সিবিএফ সভাপতি আন্তোনিও কার্লোস নুনেস দি লিমার স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ নিয়ে আদালত উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
সাবেক সভাপতির সঙ্গে করা সেই চুক্তি রদ্রিগেসকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত সংগঠনের (সিবিএফ) নেতা হিসেবে পুনঃনির্বাচিত করার অনুমতি দেয়।
রিও দি জেনিরোর আদালতের বিচারক গাব্রিয়েল দি অলিভেরা জেফিরো তাঁর রায়ে বলেছেন, নুনেসের আইনজীবী স্বাস্থ্যগত সমস্যার কথা উল্লেখ করেছেন যা তাকে শুনানিতে অংশ নিতে বাধা দিয়েছে। ২০১৮ সালে যখন তার মস্তিষ্কের ক্যান্সার ধরা পড়েছিল, তখন থেকেই সাবেক সভাপতির মানসিক ক্ষমতা নিয়ে সন্দেহ ছিল।
বিচারক আরও বলেন, ‘মানসিক অক্ষমতা এবং আন্তোনিও কার্লোস নুনেস দি লিমার স্বাক্ষর জালিয়াতির কারণে সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক পূর্বে অনুমোদিত পক্ষগুলির মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তিটি আমি বাতিল ঘোষণা করছি। বর্তমান সিবিএফ প্রশাসনের অবৈধতার স্বীকৃতিই এটির যৌক্তিক উত্তর। এই সংগঠন নেতৃত্বহীন থাকতে পারে না এবং আইনানুগভাবে নিয়মের ভেতরে থেকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া অপরিহার্য।’
রদ্রিগেসের এমন সভাপতির পদ চলে যাওয়া এই প্রথম নয়। এর আগেও ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে সিবিএফের নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে বিতর্কের পর রিও দি জেনিরো কোর্ট অফ জাস্টিসের রায়ে রদ্রিগেসকে সভাপতির পদ থেকে অপসারণ করা হয়।
যদিও এক মাস পরে ব্রাজিলের আইনমন্ত্রী গিলমার মেন্দেস ব্রাজিল জাতীয় দলকে ফিফা কর্তৃক নিষিদ্ধ করার ঝুঁকি উল্লেখ করে তাঁকে পুনর্বহালের নির্দেশ দেন।
কিন্তু ফিফা রদ্রিগেসের প্রত্যাবর্তনের পর নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি বাতিল করে দেয়, কারণ ফিফা ফুটবলে সরকারি হস্তক্ষেপ মেনে নেয় না। যদিও পরবর্তীতে চলতি বছরের মার্চে পুনঃরায় নির্বাচিত হন রদ্রিগেস। কিন্তু এবার ফের তিনি ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো অপসারণ হলেন।