চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে ইন্তের মিলানোর বিপক্ষে ৫-০ ব্যবধানের দাপুটে জয়- প্রথমবারের মতো ইউরোপ সেরা হওয়ার পর বাংলাদেশ সময় গতকাল রোববার মধ্যরাতে মাঠে নেমেছিল পারি সাঁ জার্মেই। ফাইনালের সেই দাপুটে পারফরম্যান্স ক্লাব বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচেও টেনে এনেছে ফরাসি ক্লাবটি। আর তাতে বিধ্বস্ত হয়েছে আতলেতিকো মাদ্রিদ।
ক্যালিফোর্নিয়ার রোস বোলে ম্যাচটি শুরু হয়েছিল স্থানীয় সময় বেলা ১২টায়। একদিকে মাথার ওপরে থাকা সূর্যের তপ্ত রোদ, অন্যদিকে জ্বলন্ত পিএসজি- ‘ডাবল’ উত্তাপে স্রেফ ধসে পড়েছে আতলেতিকো। ফাবিয়ান রুইস-দেজিরে দুয়ে-ভিতিনিয়াদের দুরন্ত পারফরম্যান্সে শেষ পর্যন্ত ৪-০ গোলের ব্যবধানে হেরেছে সিমিওনের দল।
স্কোরলাইন দেখেই অনুমান করা যাচ্ছে, ম্যাচটা কতটা একপেশে হয়েছে। ম্যাচের ৭৪ শতাংশ বলের দখলে রাখা পিএসজি ম্যাচে শট নিয়েছিল ১৬টি, যার ১১টিই ছিল গোলমুখে। অন্যদিকে আতলেতিকো শুধু একটা শটই গোলে রাখতে পেরেছে।
প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে আন্তোনিও গ্রিজমানের শট ঠেকিয়ে দেন জিয়ানলুইসি দোন্নারুম্মা। মজার বিষয়, ওই একই মিনিটে দারুণ এক প্রতি-আক্রমণে গোল করেন ভিতিনিয়া। অবশ্য ভিতিনিয়ার গোলটা ছিল পিএসজির দ্বিতীয় গোল। পর্তুগিজ মিডফিল্ডারের গোলের আগে ম্যাচের ১৯ মিনিটে পিএসজির প্রথম গোলটা করেন রুইস।
কাভিচা কাভারাৎসখেলিয়ার কাটব্যাকে বক্সের বক্সের বাইরে থেকে মাটি কামড়ানো জোরালো শটে জালে বল জড়ান স্প্যানিশ মিডফিল্ডার। আতলেতিকো গোলকিপার ইয়ান অবলাক বাঁদিকে লাফিয়েও বলের নাগাল পাননি। আর প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে ভিতিনিয়ার গোলটাও হয়েছে অবলাকের বাঁদিক দিয়ে।
২-০ গোলে পিছিয়ে বিরতিতে যাওয়া আতলেতিকো ম্যাচের ৫৭ মিনিটে অবশ্য একটা গোল ফিরিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু হুলিয়ান আলভারেসের গোলটা বাতিল করেছে ভিএআর। আক্রমণের শুরুতে বল দখলে নিতে দেজিরে দুয়েকে ফাউল করেছিলেন আতলেতিকো মিডফিল্ডার কোকে।
সে হতাশার রেশ কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই ৭৭ মিনিটে বড় ধাক্কা খায় আতলেতিকো। রেফারির সঙ্গে অযাচিত তর্ক করতে গিয়ে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন ক্লেমেন্ত লংলে। অবশ্য ওই হলুদ কার্ডের আগে যে আরেকটা গোল খায়নি আতলেতিকো, সেজন্য নিজেদের কিছুটা ‘ভাগ্যবান’ মনে করতেই পারে সিমিওনের দল!
সতীর্থকে দিতে গিয়ে বক্সের ভেতর প্রতিপক্ষ সেনি মায়ুলুর পায়ে বল তুলে দিয়েছিলেন অবলাক। ফরাসি মিডফিল্ডার নিজে শট না দিয়ে পাস দেন সুবিধাজনক জায়গায় থাকা আশরাফ হাকিমিকে। কিন্তু সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি মরক্কান রাইটব্যাক।
তাতে খুব একটা বড় ‘ক্ষতি’ হয়নি পিএসজির। ১০ জন হয়ে পড়া আতলেতিকোর জালে শেষভাগে আরও দুটি গোল দিয়েছে ফরাসি ক্লাবটি। নির্ধারিত সময়ের ৩ মিনিট আগে মায়ুলু, আর যোগ করা সময়ের শেষ মুহূর্তে পেনাল্টি থেকে স্কোরলাইন ৪-০ করেন কাং-ইন লি।
বড় জয় পেলেও যুক্তরাষ্ট্রের কন্ডিশন খেলায় প্রভাব ফেলেছে বলে জানিয়েছেন পিএসজি কোচ লুইস এনরিকে। অন্যদিকে কন্ডিশনকে ‘কঠিন’ উল্লেখ করে ভিতিনিয়া বলেছেন, ‘উত্থান-পতন নয়, বরং ফুটবলে সবচেয়ে কঠিন জিনিসটা হচ্ছে ধারাবাহিকতা বজায় রাখা। আমরা সেটার চেষ্টা করছি। দলের পারফরম্যান্স খুব ভালো ছিল, আমরা টুর্নামেন্টে ভালো শুরু পেয়েছি। একটু ব্যতিক্রমী আবহ ছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে এত মানুষ সকার দেখতে এসেছে, আমরা যেটাকে ফুটবল বলি। এটা আসলেই ভালো লাগার।’