ক্লাব বিশ্বকাপে ইন্টার মায়ামির ‘ঐতিহাসিক’ যাত্রা থেমেছে শেষে ষোলোতে। পিএসজির কাছে ৪-০ গোলে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বাদ পড়ার সপ্তাহখানেক পর আজ সকালে মেজর লিগ সকারের ম্যাচ খেলতে নামে ফ্লোরিডার ক্লাবটি।
কানাডার ক্লাব মন্ট্রিয়ালের বিপক্ষে ম্যাচের শুরুতেই অদ্ভুত ভুল করে বসেন লিওনেল মেসি! ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটে সতীর্থকে পাস দিতে গিয়ে সুবিধাজনক জায়গায় প্রতিপক্ষ স্ট্রাইকারকে বল তুলে দেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা। মেসির ভুল পাসে বল পেয়ে অনায়াসে সেটি জালে পাঠান মন্ট্রিয়াল স্ট্রাইকার প্রিন্স ওসেই ওয়ুসু।
পরে অবশ্য এর প্রায়শ্চিত্ত করেছেন মেসি। নিজে দুটি দারুণ গোল করেছেন, সতীর্থকে দিয়ে করিয়েছেন আরও একটি। মেসিময় ম্যাচে শেষ পর্যন্ত মায়ামি ম্যাচটা জিতেছে ৪-১ ব্যবধানে।
শুরুতে পিছিয়ে পড়ার পর ম্যাচে ফিরতে ৩৩ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে মায়ামিকে। এর মধ্যে ১৫ মিনিটে ইয়র্দি আলবার একটি শট পোস্টে লেগে ফেরত এসেছে। দুবার মেসির প্রচেষ্টা আটকে গেছে মন্ট্রিয়াল রক্ষণে। এছাড়া মেসির একটি পাস গোলে রূপান্তর করতে পারেননি তাদেও আলেনদে।
তবে ৩৩ মিনিটে মেসি-আলেনদে জুটিতেই ডেডলক ভেঙেছে মায়ামি। বুসকেতসের বাড়ানোর বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সামনে ডান দিকে থাকা আলেনদির দিকে বাড়ান মেসি। সেটা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ডানপ্রান্ত থেকে কাটইন করে বক্সের বাইরে থেকে দারুণ এক শটে কাছের পোস্ট দিয়ে জালে বল জড়ান আলেনদে।
৭ মিনিট পর মায়ামিকে লিড এনে দেন মেসি। নিজেদের অর্ধ থেকে বুসকেতসের লম্বা করে বাড়ানো বল মধ্যমাঠের কিছুটা সামনে থেকে হেডে ডানদিকে থাকা মেসির দিকে ঠেলে দেন সুয়ারেস। সে বল পেয়ে বক্সের ভেতর ঢুকে পড়েন মেসি। মন্ত্রিয়ালের দুই ডিফেন্ডারকে ড্রিবল করে চারজনের মধ্য থেকে বাঁপায়ের শটে স্কোরলাইন ২-১ করেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা।
দৃষ্টিনন্দন এ গোল করেই থেমে থাকেননি মেসি। ৬২ মিনিটে আরও একটি গোল করেছেন আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি । মেসির প্রথম গোলটা যদি দৃষ্টিনন্দন হয়, পরের গোলটা তাঁর সোনালী দিনগুলোকে মনে করিয়ে দেবে! প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের ঘোল খাইয়ে যেভাবে গোলটা করেছেন, কে বলবে, কিছুদিন আগে ৩৮তম জন্মদিনের কেক কেটেছেন মেসি!
মেসি বলটা পেয়েছিলেন মধ্যমাঠের কিছুটা সামনে। সেখান থেকে বক্সের দিকে ছুঁটতে ছুঁটতে ড্রিবল করে পেছনে ফেলেছেন জর্জ ক্যাম্পবেলকে। অবশ্য ক্যাম্পবেল পেছনে আঠার মতো লেগেই ছিলেন। এর সঙ্গে যোগ হয়েছেন পেছন থেকে ছুটে আসা কাদেন ক্লার্ক। আর সামনে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছেন ফের্নান্দো আলভারেস। হঠাৎ বাঁদিকে মোড় নিলেন মেসি। মায়ামির তিন ডিফেন্ডার পুরোপুরি বিভ্রান্ত।
মেসিকে ঠেকাতে ছুটে আসা রাইটব্যাক দাউয়িদ বুগাস-ও চেষ্টা চালালেন। কিন্তু তাঁকেও ড্রিবল করলেন মেসি। এরপর বাঁপায়ের জোরালো শটে পরাস্ত করলেন মন্ট্রিয়াল গোলকিপার জোনাথান সিরোইসকে।
মেসির এ গোলের আগে অবশ্য মায়ামি আরও একটা গোল পেয়েছে। ৬০ মিনিটে তাদেও আলেনদের পাসে বক্সের বাইরে থেকে জোরাল শটে গোলটি করেছেন তেলাস্কো সেগোভিয়া।
শুরুতে পিছিয়ে পড়েও শেষ পর্যন্ত ৪-১ ব্যবধানের বড় জয়ে পূর্ণাঙ্গ ৩ পয়েন্ট নিয়েই মাঠ ছেড়েছে মায়ামি। তাতে এমএলএসে ১৭ ম্যাচে ৩২ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার ষষ্ঠ স্থানে উঠে এসেছে হ্যাভিয়ের মাশ্চেরানোর দল।
অবশ্য মায়ামি পয়েন্ট টেবিলে পিছিয়ে পড়ার যথেষ্ট কারণ আছে! ক্লাব বিশ্বকাপের কারণে এমএলএসে মায়ামির কয়েকটি ম্যাচ স্থগিত হয়েছে। পয়েন্ট টেবিলে তাকালেই সেটা বোঝা যায়। শীর্ষে থাকা সিনসিনাটির পয়েন্ট ২১ ম্যাচে ৪২। ৪১ ও ৪০ পয়েন্ট নিয়ে পরের দুটি স্থানে আছে ন্যাশভিলে ও ফিলাডেলফিয়া ইউনিয়ন। তিনটি দলই মায়ামির চেয়ে ৪টি করে ম্যাচ বেশি খেলেছে।