শুল্কারোপের ‘খেলায়’ থামছেনই না মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রথমে দশকের ঘর থেকে শুল্কারোপের পরিমাণ বাড়িয়ে তিনি নিয়ে যান শতকের ঘরে। এবার আরও বাড়ালেন, গেলেন হাজারের ঘরে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার চারটি দেশের সোলার প্যানেলের ওপর সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৫২১ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।
ব্রিটিশ সংবাদমাদ্যম বিবিসি বলছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ কম্বোডিয়া, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও ভিয়েতনামের সোলার প্যানেলের ওপর সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৫২১ শতাংশ শুল্ক আরোপের এই ঘোষণা দিয়েছে আমেরিকার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এসব দেশের সোলার প্যানেলের প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা চীনের ভর্তুকি নিচ্ছে এবং মার্কিন বাজারে থাকা পণ্যগুলোতে প্রভাব ফেলছে।
বছর খানেক আগে এ নিয়ে তদন্ত শুরু করেছিল মার্কিন প্রশাসন। ওই সময় ক্ষমতায় থাকা মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে দেশটির সোলার প্যানেলের সরঞ্জাম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো আবেদন জানিয়েছিল, যাতে তাদের কার্যক্রম ঠিকঠাকমতো চালাতে সহায়তা করা হয়। তারা এসব দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোর কারণে বাজারে দাঁড়াতেই পারছিল না।
তদন্তের পর এবার নতুন এই ঘোষণা দিল ট্রাম্প প্রশাসন। তবে আরেকটি মার্কিন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কমিশনের মধ্যে সমঝোতা হওয়ার পর এই শুল্কের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে। এমন সিদ্ধান্ত এলে সর্বোচ্চ শুল্কের আওতায় পড়বে কম্বোডিয়ার কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। সোলার প্যানেলের সরঞ্জাম উৎপাদনকারী এসব প্রতিষ্ঠান আমেরিকায় রপ্তানি করতে চাইলে তাদেরকে সর্বোচ্চ ৩,৫২১% শুল্ক দিতে হবে।
কম্বোডিয়ার এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, তারা তদন্তের সময় মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে সহযোগিতা করেনি। তবে সবচেয়ে কম শুল্কের মধ্যে পড়তে পারে মালয়েশিয়ার প্রতিষ্ঠান জিঙ্কো সোলার, সর্বোচ্চ ৪১ শতাংশ। আর থাইল্যান্ডের ত্রিনা সোলারের ওপর শুল্কারোপ থাকবে ৩৭৫ শতাংশ।
এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে কোনো প্রতিষ্ঠান মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। উল্লেখ্য, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের শুরু থেকে আরোপিত শুল্ক এড়াতে অনেক চীনা সংস্থা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় তাদের কার্যক্রম স্থানান্তর করেছে। এবার সেসব প্রতিষ্ঠানকেই টার্গেট করল আমেরিকা।
আমেরিকান বাণিজ্য বিভাগের এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে দেশটির অ্যালায়েন্স ফর সোলার ম্যানুফ্যাকচারিং ট্রেড কমিটি। এই অ্যালায়েন্সের প্রধান পরামর্শদাতা টিম ব্রাইটবিল বলছেন, ‘এটি আমেরিকান ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের জন্য একটি উল্লেখ করার মতো বিজয়। আমরা দীর্ঘদিন ধরে জেনে আসছি, চীনের সম্পৃক্ত থাকা সৌর কোম্পানিগুলো সিস্টেমের সঙ্গে প্রতারণা করছে। এবার তা সত্য বলে বেরিয়ে এল।
মার্কিন ব্যুরোর পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২৩ সালে আমেরিকা এই চারটি দেশ থেকে প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলার সৌর সরঞ্জাম আমদানি করেছে।