দ্বিতীয়বার মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর এই প্রথম ইয়মেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুতি বাহিনীর ওপর বড় ধরনের বিমান হামলা চালিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এতে চার শিশুসহ ২৪ জন নিহত হয়েছে। এরমধ্যে ইয়েমেনের রাজধানী সানাতেই নিহত হয়েছে ১৩ জন।
শনিবার শুরু হওয়া এই হামলা কয়েক দিন, এমনকি কয়েক সপ্তাহও চলতে পারে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এ অবস্থায় হুতিদের লোহিত সাগরে জাহাজে হামলা বন্ধ করতে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। একইসাথে হুতিদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ইরানকেও হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প। এই বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে সহায়তা দেওয়া শিগগির বন্ধ করতে তেহরানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের এই হামলাকে যুদ্ধাপরাধ বলে মন্তব্য করেছে হুতি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ‘সমস্ত হুতি সন্ত্রাসীদের জন্য বলছি, আপনাদের সময় শেষ এবং আপনাদের আক্রমণ অবশ্যই থামতে হবে। আজ থেকে শুরু করুন। যদি তা না হয়, তাহলে আকাশ ভেঙে পড়বে।’
গত জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপর এটিই মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্ররে সবচেয়ে বড় সামরিক অভিযান। যুক্তরাষ্ট্র এমন এক সময়ে ইয়েমেনে হামলা শুরু করল যখন ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার চাপ বাড়াচ্ছে এবং পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে ইরানকে আলোচনার টেবিলে আনার চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র।
এদিকে হুতিদের রাজনৈতিক ব্যুরো যুক্তরাষ্ট্রের এই হামলাকে ‘যুদ্ধাপরাধ’ বলে অভিহিত করেছে। তাদের আশঙ্কা, যুক্তরাষ্ট্র তাদের হামলা ইয়েমেনের উত্তর প্রদেশেও সম্প্রসারিত করতে পারে।
হুতিরা তাদের বিবৃতিতে বলেছে, ‘যুক্তরাষ্ট্রের উসকানির জবাব দিতে আমরাও প্রস্তুত।’
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গতকাল শনিবার সানায় হুতিদের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত একটি ভবনে হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আব্দুল্লাহ ইয়াহিয়া নামের এক বাসিন্দা রয়টার্সকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভয়াবহ হামলায় পুরো মহল্লা ভূমিকম্পের মতো কেঁপে উঠেছে। আমাদের নারী ও শিশুরা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে।
এক দশকের বেশি সময় ধরে ইয়েমেনে সশস্ত্র সংগ্রাম করছে হুতিরা। ইয়েমেনের অধিকাংশ অঞ্চলই এখন তাদের দখলে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েরি হামলা শুরু হলে এর প্রতিবাদে লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ লক্ষ্য করে তারা ১০০ এর বেশি হামলা চালিয়েছে।
এরপর হুতিদের থামাতে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্দেশে হামলা শুরু হয়। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাশা অনুযায়ী কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জিত হয়নি। তাই নতুন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এসে আবারও হুতিদের ওপর হামলার নির্দেশ দিলেন।