ফের সংঘাতে জড়ালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তাঁর একসময়ের ঘনিষ্ঠ ধনকুবের ইলন মাস্ক। আমেরিকায় নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের সময় এসেছে বলে জানালেন মাস্ক। এর জবাবে কঠোর বার্তা দিলেন ট্রাম্প। তিনি বললেন, ভর্তুকির ওপরেই টিকে রয়েছে মাস্কের প্রতিষ্ঠান। ভর্তুকি না পেলে ব্যবসা বন্ধ করে তল্পিতল্পা গুটিয়ে মাস্ককে দক্ষিণ আফ্রিকায় ফিরে যেতে হতে পারে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, এবার প্রথমে আক্রমণটা শুরু করেন মাস্ক। তিনি এক্সে এক পোস্টে লেখেন, ‘যদি ব্যয় সংক্রান্ত খ্যাপাটে বিলটি পাশ হয়, তবে পরের দিনই ‘আমেরিকা পার্টি’ গঠিত হবে। আমাদের দেশে ডেমোক্র্যাট-রিপাবলিকান দলের বাইরে একটি বিকল্পের প্রয়োজন, যাতে সাধারণ মানুষ নিজেদের কণ্ঠস্বর খুঁজে পায়।’
এরপর নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লেখেন, মাস্ক যে পরিমাণ ভর্তুকি পেয়েছেন, তা হয়তো অতীতে আর কেউ পাননি। এই ভর্তুকি না পেলে মাস্ককে হয়তো ব্যবসা বন্ধ করে দক্ষিণ আফ্রিকায় ফিরে যেতে হবে।
উল্লেখ্য, মাস্ক আমেরিকার নাগরিক হলেও, জন্ম দক্ষিণ আফ্রিকায়। সেই প্রসঙ্গ টেনেই মাস্ককে খোঁচা দিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট।
ট্রাম্পের আরও দাবি, প্রেসিডেন্ট পদের জন্য তাঁকে সমর্থন করার অনেক আগে থেকেই মাস্ক জানতেন তিনি বৈদ্যুতিক গাড়ির বিরোধী। তিনি লেখেন, ‘বৈদ্যুতিক গাড়ি ঠিক আছে। কিন্তু সকলকে এই গাড়ি কিনতে বাধ্য করা উচিত নয়।’
ভর্তুকি বন্ধ হয়ে গেলে মাস্কের প্রতিষ্ঠানের কী পরিণতি হতে পারে সে কথা উল্লেখ করে ট্রাম্পের বক্তব্য, ‘আর কোনো রকেট উৎক্ষেপণ, উপগ্রহ বা বৈদ্যুতিক গাড়ি উৎপাদন থাকবে না এবং আমাদের দেশের ভাগ্য ফিরবে। হয়তো আমাদের সরকারি দক্ষতা বিষয়ক দপ্তরকে (ডিওজিই) এটি ভালোভাবে, কঠোরভাবে দেখার জন্য বলা উচিত। আমাদের অনেক অর্থ বাঁচাতে হবে।’
বস্তুত, ট্রাম্প দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরে ডিওজিইর শীর্ষ পদে বসেছিলেন মাস্ক। তবে সম্প্রতি দুজনের মনোমালিন্যের জেরে আমেরিকার প্রশাসনের ওই পদ থেকে সরে যান মাস্ক। ট্রাম্প ও মাস্কের মধ্যে সংঘাত যখন চরমে উঠেছিল, তখনও মাস্কের মুখে ‘আমেরিকা পার্টি’ নামটি শোনা গিয়েছিল।
ওই সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভোটাভুটির আয়োজন করেছিলেন মাস্ক। সেখানে তিনি প্রশ্ন রাখেন যে, আমেরিকায় একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের সময় হয়েছে কি না। মাস্কের এই প্রশ্নের উত্তরে ইতিবাচক উত্তর দেন ৮০ শতাংশ মানুষ। আর ভোটের সেই ফলাফল সম্বলিত পোস্ট শেয়ার করে মাস্ক লিখেছিলেন, ‘দ্য আমেরিকা পার্টি’। তা নিয়ে পরবর্তীতে মাস্ক আর কিছু খোলসা না করলেও অনেকেই মনে করছিলেন, নতুন দলের নামকরণেই ওই শব্দটি ব্যবহার করেছেন তিনি।