কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত বড় ধরনের কর ছাড় ও ব্যয় বিল পাস হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সিনেটের রিপাবলিকান সদস্যরা খুব অল্প ব্যবধানে বিলটি পাস করাতে সক্ষম হন। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য স্থানীয় সময় আজ বুধবার বিলটি প্রতিনিধি পরিষদে উঠতে যাচ্ছে। এই ধাপ উতরে গেলে বিলটি চূড়ান্ত হবে, যা হবে ট্রাম্পের ‘বড় জয়’।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, এই বিলে কর কমানো, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি কমানো, সেনাবাহিনীর সক্ষমতা বাড়ানো ও অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে খরচ বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। তবে এ বিল চূড়ান্ত হলে আমেরিকার জাতীয় ঋণের পরিমাণ আরও ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি ডলার বেড়ে যাবে।
বিলটির চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য প্রতিনিধি পরিষদে পাঠানো হয়েছে। তবে সেখানকার কয়েকজন রিপাবলিকান সদস্য ইতিমধ্যেই বিলের কিছু শর্তের বিরোধিতা করেছেন।
৪ জুলাই আমেরিকার স্বাধীনতা দিবসের আগেই ট্রাম্প বিলটিতে স্বাক্ষর করে সেটি আইনে পরিণত করতে চান। প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার মাইক জনসনও বলেছেন, তিনি সেই সময়সীমার মধ্যেই কাজ শেষ করতে চান।
মার্কিন কংগ্রেসের সিনেট ও প্রতিনিধি পরিষদে রিপাবলিকানদের নিয়ন্ত্রণ থাকলেও বিলটি নিয়ে রিপাবলিকানদের মধ্যেও মতভেদ দেখা দিয়েছে। কারণ, বিলটি দেশটিতে দ্রুত বাড়তে থাকা ৩৬ লাখ ২০ হাজার কোটি ডলারের জাতীয় ঋণের বিষয়টিকে সামনে নিয়ে এসেছে। এ বিলে মার্কিন কেন্দ্রীয় সরকারের নিজেদের নির্ধারিত ঋণসীমা আরও ৫ লাখ কোটি ডলার বাড়ানোর প্রস্তাব রয়েছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই কংগ্রেস যদি এই সীমা না বাড়ায়, তাহলে ভয়াবহ ঋণখেলাপির ঝুঁকি তৈরি হবে।
এই বিলে কম আয়ের মার্কিন নাগরিকদের জন্য মেডিকেইড নামের স্বাস্থ্য কর্মসূচি ও খাদ্যসহায়তা কর্মসূচির খরচ থেকে প্রায় ৯৩ হাজার কোটি ডলার কাটার কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে ডেমোক্রেটিক পার্টির সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মেয়াদকালে পরিবেশবান্ধব জ্বালানির জন্য দেওয়া অনেক সুবিধাও বাতিলের কথা বলা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার সিনেটে বিলটি ৫১-৫০ ভোটে পাস হয়। বিলের পক্ষে-বিপক্ষে সমান ভোট পড়ায় মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স ‘টাই’ ভেঙে বিলের পক্ষে ভোট দেন।
বিলটির বিপক্ষে ভোট দেওয়া ডেমোক্র্যাটদের ৪৭ সদস্যের সঙ্গে ৩ জন রিপাবলিকানও যোগ দেন। তাঁরা হলেন—নর্থ ক্যারোলাইনার টম টিলিস, মেইনের সুসান কলিন্স ও কেনটাকির র্যান্ড পল। সিনেটে গতকাল ভোটাভুটির আগে রাতভর বিতর্ক চলে। রিপাবলিকান সিনেট সদস্যরা বিলের খরচ ও আমেরিকার স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার ওপর এর প্রভাব নিয়ে ব্যাপক আলোচনা করেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, এর আগে গত মে মাসে প্রতিনিধি পরিষদে এই বিলের প্রাথমিক খসড়া অনুমোদন পায়। ওই সময়ও এটি মাত্র এক ভোটের ব্যবধানে অনুমোদন পেয়েছিল। এবার সিনেটে পাস হওয়া বিলও প্রতিনিধি পরিষদে একই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারে।