প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলে আরও বড় ধরনের ভূমিকম্প হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাপান সরকার। গত সোমবার এক সরকারি প্রতিবেদনে জাপান বলেছে, প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলে ৮ থেকে ৯ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানতে পারে এবং এতে ৩ লাখ মানুষের মৃত্যু হতে পারে। আর অর্থনৈতিক ক্ষতি হতে পারে ১ দশমিক ৮১ ট্রিলয়ন ডলার।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, গত সোমবার জাপানের মন্ত্রিপরিষদ কার্যালয় ভূমিকম্পের আশঙ্কা সংক্রান্ত প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে। এতে বলা হয়েছে, ভয়াবহ ভূমিকম্পের কারণে সুনামি সৃষ্টি হতে পারে এবং সুনামির ফলে যে বন্যা হবে, তাতে ২১৪ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন অর্থনৈতিক ক্ষতি হতে পারে।
জাপান বিশ্বের সবচেয়ে ভূমিকম্পপ্রবণ দেশগুলোর একটি। জাপান জানিয়েছে, এই ভয়াবহ ভূমিকম্পের সম্ভাব্য উৎপত্তস্থল হতে পারে ‘নানকাই ট্রফ’ নামে সমুদ্রের তলদেশের একটি এলাকা। আর ভূমিকম্পটির মাত্রা হতে পারে ৮ থেকে ৯। আগামী ৩০ বছরের মধ্যেই এমন মহাভূমিকম্পের আশঙ্কা করছে জাপান।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, যদি ৯ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে, তবে এই অঞ্চল থেকে ১২ লাখের বেশি মানুষকে সরিয়ে নিতে হবে, যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশ। আর যদি শীতকালে গভীর রাতে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে, সেক্ষেত্রে সুনামি ও ভবনধসে ২ লাখ ৯৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এই ‘নানকাই ট্রফ’ জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূল থেকে প্রায় ৯০০ কিলোমিটার (৬০০ মাইল) দূরে অবস্থিত, যেখানে ফিলিপাইন সমুদ্র প্লেট ইউরেশিয়ান প্লেটের নীচে চাপা পড়ছে। এখানকার টেকটোনিক স্ট্রেনগুলোতে সাধারণত ১০০ থেকে ১৫০ বছরে একবার বড় ধরনের ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
গত বছর জাপান প্রথমবারের মতো ‘মহাভূমিকম্পের’ সতর্কতা জারি করেছিল। সরকারি সতর্ক বার্তায় বলা হয়েছিল, উপকূলে ৭ থেকে ৯ মাত্রার মহা শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানতে পারে।
এর আগে ২০১১ সালে ৯ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল জাপানে। ওই ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্ট সুনামিতে উত্তর–পূর্ব জাপানের একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ধ্বংস হয়ে ১৫ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গিয়েছিল।