সম্প্রতি ভারতের সীমান্তবর্তী অরুণাচল প্রদেশের ২৭টি জায়গার নাম এককভাবে প্রকাশ করেছে চীন। যে অঞ্চলগুলোর নামকরণ চীন করেছে, তার অধিকাংশই ভারতের মধ্যে। আর এসব এলাকা চীনের মানচিত্রে যুক্ত করেছে তারা। এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বেইজিংয়ের এই প্রচেষ্টাকে ‘অকার্যকর ও হাস্যকর’ বলে অভিহিত করা হয়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে বলছে, গত ১১-১২ মে অরুণাচল প্রদেশের ২৭টি এলাকার নাম নতুন করে রাখে চীন। এরপর সেগুলো প্রকাশ করে চীনের সিভিল এভিয়েশন মিনিস্ট্রি। এর মধ্য দিয়ে ভারতের এই এলাকা আবারও নিজেদের দাবি করল চীন। এ নিয়ে অবশ্য দেশটির পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে কঠোর বার্তা দিয়েছে ভারত। আগেও এমন প্রতিক্রিয়া দিয়ে আসছিল ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। তবে চীন তাতে কর্ণপাত করেনি।
গতকাল মঙ্গলবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, ‘আমরা লক্ষ্য করেছি যে, চীন ভারতের অরুণাচল প্রদেশের বিভিন্ন স্থানের নামকরণের জন্য নিরর্থক ও অযৌক্তিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। আমাদের নীতিগত অবস্থানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আমরা এই ধরণের প্রচেষ্টাকে স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করছি। অরুণাচল প্রদেশ ভারতের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল, আছে ও থাকবে। নতুন করে নামকরণ এই অনস্বীকার্য বাস্তবতাকে পরিবর্তন করবে না।’
এর আগে ২০২৪ সালের এপ্রিলে ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্য অরুণাচল প্রদেশে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) বরাবর বিভিন্ন স্থানের ৩০টি নতুন নামের চতুর্থ তালিকা প্রকাশ করেছিল চীন। তবে দেশটির ভারতীয় ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে স্থানের নাম পরিবর্তনের চেষ্টা সেবারই প্রথম ছিল না।
ওই সময় রাষ্ট্র পরিচালিত চীনা সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস জানিয়েছিল, চীন অরুণাচল প্রদেশের ভৌগোলিক নামের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। অরুণাচল প্রদেশকে বেইজিং জাংনান নামে স্বীকৃতি দেয়। নাম পরিবর্তন করা ৩০টি স্থানের মধ্যে রয়েছে ১২টি পাহাড়, চারটি নদী, একটি হ্রদ, একটি পর্বত গিরিপথ, ১১টি আবাসিক এলাকা ও এক টুকরো জমি। নামের তালিকা ছাড়াও, চীনা মন্ত্রণালয় বিস্তারিত অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ এবং অঞ্চলগুলোর একটি হাই রেজুলেশনের মানচিত্রও প্রকাশ করে।
তারও আগে ২০১৭ সালে বেইজিং অরুণাচল প্রদেশের ছয়টি স্থানের জন্য নামের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করেছিল। এরপর ২০২১ সালে ১৫টি স্থানের একটি দ্বিতীয় তালিকা প্রকাশ করা হয়, ২০২৩ সালে আরও ১১টি।
এদিকে, ভারত অরুণাচল প্রদেশে চীনের ভূখণ্ড দাবি করার প্রচেষ্টা প্রত্যাখ্যানে অটল। দেশটি দাবি করে আসছে, রাজ্যটি দেশের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং নতুন করে নামকরণ এই বাস্তবতাকে পরিবর্তন করবে না।