রাশিয়ার চার সাংবাদিককে সাড়ে ৫ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত। গতকাল মঙ্গলবার রাশিয়ার নাগাতিনস্কি ডিস্ট্রিক আদালত ‘চরমপন্থা’র দায়ে ওই সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এই রায় দেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
সারাপ্রাপ্ত সাংবাদিকেরা হলেন—আন্তোনিনা ফাভোরস্কায়া, কনস্তান্তিন গাবোভ, সের্গেই ক্যারেলিন ও আরতিয়ম ক্রিগের। এই চার সংবাদিক রাশিয়ার বিরোধীদলীয় প্রয়াত নেতা অ্যালেক্সি নাভালনি প্রতিষ্ঠিত দুনীতিবিরোধী ফাউন্ডেশনের (এফবিকে) সঙ্গে কাজ করতেন বলে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। নাভালনির সংগঠনটিকে রুশ সরকার আগে থেকেই ‘চরমপন্থী’ হিসেবে ঘোষণা করেছিল।
পরে শুনানি শেষে আদালত গতকাল তাঁদের দোষী সাব্যস্ত করেন এবং সাড়ে ৫ বছর করে কারাদণ্ডের রায় দেন।
আদালতের রায়ের পর চার সংবাদিকই তাঁদের বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁরা বলেছেন, সাংবাদিক হিসেবে পেশাগত দায়িত্ব পালনের কারণেই তাঁদের শাস্তি পেতে হচ্ছে।
এদিকে এ রায়কে ঘিরে আন্তর্জাতিক সাংবাদিক সমাজ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, আদালতের এই রায় রাশিয়ায় ভিন্নমত দমন–পীড়নের সর্বশেষ নজির। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে মস্কো ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু করার পর থেকে এ ধরনের দমন-নিপীড়ন আরও তীব্র হয়েছে।
দণ্ডপ্রাপ্ত সাংবাদিকদের মধ্যে আন্তোনিনা ফাভোরস্কায়া ও আর্তিয়ম ক্রিগার ছিলেন সোতা ভিশন নামের স্বাধীন সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত। কনস্তান্তিন গাবোভ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে একজন ফ্রিল্যান্সার প্রযোজক হিসেবে কাজ করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে রয়টার্সও। আর সের্গেই ক্যারেলিন একজন ফ্রিল্যান্স ভিডিও সাংবাদিক। তিনি অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসে (এপি) নিয়মিত প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন।
নাভালনি দীর্ঘদিন ধরে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সবচেয়ে শক্তিশালী সমালোচক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি আর্কটিক অঞ্চলের একটি কারাগারে ১৯ বছরের সাজা ভোগ করা অবস্থায় ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে মাত্র ৪৭ বছর বয়সে মারা যান।