ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের পাহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন একজন ভুক্তভোগী। গতকাল মঙ্গলবারের ওই হামলায় স্বামী মঞ্জুনাথকে হারানো পল্লবী নামের এক নারী ভারতের স্থানীয় এক সংবাদমাধ্যমকে ঘটনার বিবরণ দেন। তিনি এ সময় বলেন, হামলাকারী তাঁকে বলেছিলেন, তারা তাঁকে মারবেন না। তিনি যেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ঘটনা জানান।
আজ মঙ্গলবার ওই নারী বলেন, তিনি এবং তাঁর ১৮ বছর বয়সী ছেলের সামনেই মেরে ফেলা হয় তাঁর স্বামীকে। এরপর তাঁদের মেরে ফেলার জন্য আসেন সন্ত্রাসীরা। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, ওই নারীর ভাষ্যমতে, ‘আমরা পাহেলগামে আছি, আর আমার স্বামী আমার চোখের সামনেই মারা গেছেন। আমি কাঁদতে বা প্রতিক্রিয়া জানাতে পারিনি। বুঝতেও পারিনি কী ঘটেছে। আমি কর্ণাটকের শিবমোগা থেকে আমার স্বামী মঞ্জুনাথ এবং আমাদের ছেলে অভিজেয়ার সঙ্গে এখানে এসেছিলাম।’
পল্লবী বলেন, ‘আমার সঙ্গে আমার গাড়ির চালক ছিলেন। তিনি একজন ভালো মানুষ। তিনি আমাকে বলেছিলেন, হিন্দুদের টার্গেট করা হচ্ছে। আরও তিনজন আমাদের নিরাপদে যেতে সাহায্য করেছিলেন। আমি চাই আমার স্বামীর মরদেহ বিমানে করে নিয়ে যাওয়া হোক। আমাদের তিনজনেরই একসঙ্গে ফেরা উচিত।’
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি লক্ষ্য করেছি যে, তিন থেকে চারজন আক্রমণকারী ছিলেন। আমার স্বামী নিহত হওয়ার পর আমি একজন সন্ত্রাসীর মুখোমুখি হয়ে বলেছিলাম, তুমি আমার স্বামীকে মেরে ফেলেছ, আমাকেও মেরে ফেলো। আমার ছেলেও তার মুখোমুখি হয়ে বলেছিল, তুমি আমার বাবাকে মেরে ফেলেছ, আমাদেরও মেরে ফেলো। সন্ত্রাসী উত্তর দিয়েছিলেন,আমি তোমাকে মারব না। মোদিকে গিয়ে বলো।’
পল্লবী আরও বলেন, ‘সন্ত্রাসীরা আমাদের সামনেই ছিল। তারা সেনাবাহিনীর পোশাক পরে ছিল না। প্রায় সকল পুরুষকেই লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল। অনেক নবদম্পতি ছিল এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কেবল স্বামীদের ওপর আক্রমণ করা হয়েছিল। নারী ও অন্যান্যরা কম হামলার শিকার হন। হিন্দুদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল। সেখানে প্রায় ৫০০ পর্যটক উপস্থিত ছিলেন।’
ওই নারী আরও বলেন, ‘আমরা ঘোড়ায় চড়ে সেখানে গিয়েছিলাম। আমার ছেলে সকাল থেকে কিছু খায়নি, তাই আমার স্বামী তার জন্য কিছু রুটি আনতে গিয়েছিলেন। প্রথমে আমরা গুলির শব্দ শুনতে পাই এবং ভেবেছিলাম সেনাবাহিনী গুলি চালিয়েছে। তারপর লোকেরা দৌঁড়াতে শুরু করে। আমি দেখলাম আমার স্বামী ইতিমধ্যেই রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন। তার মাথায় গুলি লেগেছে। আমি নির্বাক হয়ে তার মরদেহের পাশে বসেছিলাম।’