বন্দুক হামলায় ২৬ জনের প্রাণহানির ঘটনায় থমকে যাওয়া ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। গতি ফিরছে পর্যটনে। আসতে শুরু করেছেন পর্যটকেরা। তবে পর্যটকদের সংখ্যা এখনও অনেকটাই কম।
আজ রোববার এসব তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে। প্রতিবেদন বলছে, অঞ্চলটি আবারও দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যটকদের স্বাগত জানাতে শুরু করেছে।
কলকাতা এবং বেঙ্গালুরু থেকে আসা দর্শনার্থীরা ইন্ডিয়া টুডের সাথে কথা বলে এই অঞ্চলের নিরাপত্তার প্রতি আস্থা প্রকাশ করেছেন। উদ্বেগ সত্ত্বেও অনেকেই ভ্রমণ পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন।
কলকাতার একজন পর্যটক বলেন, কাশ্মীর এখন নিরাপদ, সবকিছু খোলা আছে, পর্যটকরা নিরাপদ, সবাই আসছে, তাই যদি আপনার কোনো পরিকল্পনা থাকে তবে দয়া করে আসুন।
গুজরাটের সুরাটের একজন পর্যটক মোহাম্মদ আনাস সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর সাথে কথা বলেছেন। তিনিও একই অনুভূতি প্রকাশ করেছেন। তাঁর মতে, পেহেলগামে ব্যবসা স্বাভাবিকভাবেই চলছে।
তিনি বলেন, চিন্তার কিছু নেই। সেনাবাহিনী, সরকার এবং স্থানীয়রা আমাদের সাথে আছে এবং আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে... ঘটনার পর আমরা ভীত ছিলাম, আমরা তাৎক্ষণিকভাবে চলে যেতে চেয়েছিলাম, কিন্তু স্থানীয়রা এবং সেনাবাহিনী আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে এবং আমরা আমাদের ভ্রমণ শেষ করেছি।
বিদেশি নাগরিকেরাও স্বস্তির কথা বলেছেন। ক্রোয়েশিয়ার এক নারী পর্যটক বলেন, আমরা এখানে ৩-৪ দিন ধরে আছি এবং আমরা খুব নিরাপদ বোধ করছি। আপনার দেশ খুব সুন্দর, এবং আমাদের কোনো সমস্যা হয়নি। কাশ্মীর সুন্দর এবং নিরাপদ... মানুষ খুব দয়ালু। আমরা কাশ্মীরে পৌঁছানোর একদিন আগে এই ঘটনার কথা শুনেছিলাম। আমরা যাইহোক এখানে এসেছি। আমরা নিরাপদ বোধ করছি।
ক্রোয়েশিয়ার আরেক পর্যটক বলেন, এখানে আমার দারুণ অনুভূতি হয়েছে। এখানে আমার অনেক বন্ধু তৈরি হয়েছে। আমার কোনো অস্বস্তি লাগেনি... এটা এমন কিছু নয় যা নিয়মিত ঘটে, মাঝেমধ্যে ঘটে এবং সর্বত্রই ঘটে... পৃথিবীতে কোথাও কোনো নিরাপদ স্থান নেই।
গত ২২ এপ্রিল একদল সন্ত্রাসী কাশ্মীরের পেহেলগামের বৈসরান তৃণভূমিতে ছুটি কাটাতে আসা পর্যটকদের ওপর গুলি চালায়। এতে ২৬ জন নিহত হন। তখন কাশ্মীর থেকে পর্যটকদের অনেকে স্থান ত্যাগ করে ফিরে যান।
রাজ্যের পর্যটন শিল্পের ওপর বিরাট আঘাতের আশঙ্কায় মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ পর্যটকদের কাশ্মীর এড়িয়ে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, আমি পর্যটকদের মধ্যে ভয় বুঝতে পারছি। যারা এখানে ছুটি কাটাতে আসেন তারা কোনো ভয় অনুভব করতে চান না... তবে আমি তাদের বলতে চাই যে, এই সময়ে যদি তারা কাশ্মীর ছেড়ে চলে যান, তাহলে আমাদের শত্রুরা জয়ী হতে পারে। তারা পর্যটকদের লক্ষ্যবস্তু করেছিল কারণ তারা পর্যটকদের কাশ্মীর থেকে বের করে দিতে চেয়েছিল।