প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলওসি) ও জম্মু-কাশ্মীর সীমান্তে বিনা উসকানিতে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে পাকিস্তানকে সতর্ক করে দিয়েছে ভারত। দুই দেশের কর্মকর্তাদের মধ্যে হটলাইনে আলাপের সময় ভারতের পক্ষ থেকে এই সতর্কবার্তা দেওয়া হয়। এই আলাপে যুক্ত ছিলেন ভারত ও পাকিস্তানের সামরিক কার্যক্রমের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, গত মঙ্গলবার এসব কর্মকর্তাদের মধ্যে হটলাইনে আলাপ হয়। গত সপ্তাহে পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কয়েকদিন ধরে বিনা উসকানিতে গুলিবর্ষণের পর এই আলোচনা ও সতর্কীকরণ এসেছে। এএনআই বলছে, জম্মু ও কাশ্মীরের কুপওয়ারা ও পুঞ্চ জেলার বিপরীতে থাকা এলাকায় গত ২৭-২৮ এপ্রিল রাতে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় ভারতের সেনাবাহিনী।
হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, ২৬-২৭ এপ্রিল রাতে তুতমারি গালি ও রামপুর সেক্টরের বিপরীতে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গুলিবর্ষণের কার্যকর জবাব দেয় ভারতীয় সেনাবাহিনী। ভারতের দাবি, পেহেলগামে ২৫ জন ভারতীয়সহ ২৬ জন নিহত হওয়ার পর থেকে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর পাকিস্তানের যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন বৃদ্ধি পাচ্ছে। লঙ্ঘন এখন আন্তর্জাতিক সীমান্তেও ছড়িয়ে পড়েছে। গত সপ্তাহ থেকে নিরাপত্তা বাহিনী কাশ্মীর উপত্যকায় সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান জোরদার করেছে।
এদিকে, পেহেলগাম হামলার পর থেকে ভারত সরকার পাকিস্তানের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে। হামলার একদিন পর নিরাপত্তা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি (সিসিএস) বৈঠক করে এবং সীমান্তবর্তী সন্ত্রাসী হামলায় পাকিস্তানের সমর্থনের জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এর মধ্যে রয়েছে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত রাখা এবং আটারিতে ইন্টিগ্রেটেড চেক পোস্ট বন্ধ করা। ভারত হাইকমিশনের সংখ্যাও কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।।
এদিকে, ভারতের সশস্ত্র বাহিনীকে অভিযানের ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল, চিফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল অনিল চৌহান, সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দিভেদি, বিমানপ্রধান এয়ার মার্শাল এপি সিং এবং নৌপ্রধান অ্যাডমিরাল দিনেশ ত্রিপাঠির সঙ্গে বৈঠকে মোদি এ নির্দেশ দেন।
কাশ্মীরে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান অব্যাহত রেখেছে ভারত। দুই দেশের সীমান্ত রেখায় প্রতিরাতেই গোলাগুলি হচ্ছে। ভারতের নেওয়া পদক্ষেপের প্রেক্ষিতে পাকিস্তানও বেশ কিছু পাল্টা ব্যবস্থা নিয়েছে। এক পাকিস্তানি মন্ত্রী দাবি করেছেন, ভারত থেকে ২৪–৩৬ ঘণ্টার মধ্যে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।