ভারতের ছত্তিসগঢ়ে যৌথবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে শীর্ষ মাওবাদী নেতা কেশব রাও ওরফে বাসভরাজু নিহত হয়েছেন। পুলিশের খাতায় তাঁর মাথার দাম ছিল দুই কোটি টাকা। তিনি একা নন, ২৭ মাওবাদী নিহত হয়েছেন যৌথবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে। আজ বুধবার মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্সে এক পোস্টে এই তথ্য জানান ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার অনলাইন বলছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঘোষণা করেছিলেন, ২০২৬ সালের মধ্যে দেশকে মাওবাদীমুক্ত করা হবে। তারপর থেকেই দেশের বিভিন্ন জায়গায় মাওবাদী দমন অভিযান শুরু হয়। সেই অভিযানের অংশ হিসেবেই বুধবার সকালে ছত্তিসগঢ়ের নারায়ণপুরের অবুঝমাঢ়ে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয় মাওবাদীদের। এই দুর্গম পাহাড়ি এলাকা অবুঝমাঢ় মাওবাদীদের শক্ত ঘাঁটি বলেই পরিচিত।
গোপন সূত্রে পুলিশের কাছে খবর ছিল, অবুঝমাঢ়ে লুকিয়ে রয়েছেন এক মাওবাদী কমান্ডার। প্রথমে তাঁর পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। তবে পরে জানা যায়, ওই কমান্ডারই হলেন বাসভরাজু। তিনি সিপিআইয়ের (মাওবাদী) সাধারণ সম্পাদক বলে জানা গেছে।
এই অভিযানের পর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এক্সে লিখেছেন, ‘দেশকে নকশালবাদ থেকে মুক্ত করতে এটি একটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য। আজ ছত্তিসগঢ়ের নারায়ণপুরে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে ২৭ জন মাওবাদীর মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সিপিআই-মাওবাদীর সাধারণ সম্পাদক নাম্বালা কেশব রাও ওরফে বাসভরাজু। নকশালবাদের বিরুদ্ধে তিন দশকের লড়াইয়ে এই প্রথম আমাদের বাহিনীর অভিযানে সাধারণ সম্পাদক পদমর্যাদার কোনো মাওবাদী নেতার মৃত্যু হয়েছে।’
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, এই সংঘাত চলেছে টানা ৫০ ঘণ্টা। এ নিয়ে মাইক্রো ব্লগিং সাইট এক্সে পোস্ট করেছেন খোদ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও।
বাসভরাজু এর আগে কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনের প্রধান ছিলেন এবং পরে সাধারণ সম্পাদক হন, যা মাওবাদীদের সর্বোচ্চ পদ। জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) এবং তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্র প্রদেশের পুলিশ বাহিনী তাঁকে খুঁজছিল এবং তাঁর জন্য ১.৫ কোটি রুপি ( প্রায় ২ কোটি টাকা) পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। কর্মকর্তারা বলছেন, তাঁর মৃত্যু এই অঞ্চলে বিদ্রোহীদের জন্য একটি বড় ধাক্কা, যা মাওবাদী নেতৃত্ব এবং পুনর্গঠনের প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করতে পারে।
সূত্র জানিয়েছে, দণ্ডকারণ্য বিশেষ জোনাল কমিটির নেতা মধুকেও হত্যা করা হয়েছে।