সাম্প্রতিক সংঘাতের সময়ে ভারতীয় বিমানবাহিনীর রাফাল যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার পাকিস্তানি দাবিকে ‘ভুল’ বলে অভিহিত করেছেন ডাসল্ট এভিয়েশনের প্রধান নির্বাহী (সিইও) এরিক ট্র্যাপিয়ার। আজ শনিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ১৮।
এরিক ট্র্যাপিয়ার নিউজ১৮–কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘পাকিস্তান এই মিথ্যা প্রচারণা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিয়েছে।’ একই সময়ে এরিক ট্র্যাপিয়ার এ কাথাও বলেন, ‘ভারত সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি, তাই প্রকৃতপক্ষে কী ঘটেছে, আমরা জানি না। আমারা শুধু এটুকু জানি, পাকিস্তানের প্রচারণাটি ভুল।’
রাফায়েল বিমানের কার্যকারিতা নিয়ে আলোচনা–সমালোচনার জবাবে এরিক ট্র্যাপিয়ার বলেন, ‘একটি অভিযানের লক্ষ্য পূরণ হয়েছে কিনা, তার ওপর নির্ভর করে অভিযানটির সাফল্য। কতটুকু ক্ষতি হয়েছে বা হয়নি, তার ওপর ভিত্তি করে যুদ্ধের অর্জন নির্ধারিত হয় না। যখন সত্য বেরিয়ে আসবে, তখন অনেকেই অবাক হতে পারেন।’
২০১৯ সালে সামরিক ও বাণিজ্যিক উড়োজাহাজ প্রস্তুতকারী ফরাসি প্রতিষ্ঠান ডাসল্টের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের চুক্তি করে ভারত। ওই চুক্তির ফলে ভারতের বিমান বহরে রাফাল যুদ্ধবিমান যুক্ত হয়।
গত ২২ এপ্রিল ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহতের জেরে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘অপারেশন সিন্দুর’ নাম দিয়ে হামলা চালায় ভারত। ওই সময় পাকিস্তানও পাল্টা হামলা চালায় ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে।
এরপর পাকিস্তান দাবি করে, তারা সংঘাতের সময়ে ভারতের তিনটি রাফাল যুদ্ধবিমান, একটি এসইউ–৩০ এবং একটি মিগ–২৯ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে।
প্রথম দিকে পাকিস্তানের দাবিকে অস্বীকার করলেও পরে গত ৩১ মে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুগবার্গকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান অনীল চৌহান পাকিস্তানের দাবিকে কিছুটা স্বীকার করে নেন। তিনি বলেন, ‘যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। বরং কেন সেগুলো ভূপাতিত হয়েছে সেটিই গুরুত্বপূর্ণ।’ তবে কয়টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হয়েছে, তা উল্লেখ করেননি তিনি।
ভারতীয় সেনাপ্রধান আরও বলেন, ‘কেন এসব যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হয়েছে, কী ধরনের ভুল হয়েছে—সেটিই গুরুত্বপূর্ণ। সংখ্যা গুরুত্বপূর্ণ নয়। ভালো দিক হলো আমরা আমাদের কৌশলগত ভুল বুঝতে পেরেছি, সংশোধন করেছি এবং দুদিন পর আবার আমাদের সকল যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে দূরপাল্লার লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছি।’