১২ বছর ধরে চাকরি করছেন পুলিশ কনস্টেবল হিসেবে। কিন্তু একদিনও ডিউটিতে যাননি। এরপরও তিনি চাকরিতে টিকে আছেন বহাল তবিয়তে। শুধু টিকে আছেন বললে কম বলা হবে, প্রতি মাসে পাচ্ছেন বেতনও। ১২ বছরে সেই বেতন ও ভাতা মিলিয়ে মোট ৪০ লাখ টাকা পকেটে গেছে তার।
এমন চিত্রই দেখা গেছে ভারতের মধ্যপ্রদেশে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে বলছে, মধ্যপ্রদেশের বিদিশা জেলায় এই ঘটনা কর্তৃপক্ষের নজরে আসার পর তলব করা হয় ওই কনস্টেবলকে। এর কারণ জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, তাঁর মানসিক সমস্যা রয়েছে। এ কারণে ডিউটিতে আসতে পারেননি।
২০১১ সালে কনস্টেবল পদে নিয়োগ পান ওই ব্যক্তি। মধ্যপ্রদেশ পুলিশ বিভাগে যোগ দেন তিনি। প্রাথমিকভাবে তাঁর কর্মস্থল হিসেবে ঠিক করা হয় ভোপাল পুলিশ লাইন্স। জয়েন করার পরপরই সাগর পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে প্রশিক্ষণ নিতে যান তিনি।
কিন্তু সেই প্রশিক্ষণে যাননি তিনি। এর পরিবর্তে বিদিশায় বাড়িতে ফিরে আসেন। কোনো ছুটি না নিয়ে কিংবা সংশ্লিষ্টদের না জানিয়ে তিনি তাঁর প্রশিক্ষণের যাবতীয় তথ্য পাঠান ভোপাল পুলিশ লাইন্সে। সেখানেও এসব তথ্য যাচাই করা হয়নি। তিনি প্রশিক্ষণে ছিলেন না, এই তথ্য সেন্টার থেকে দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে ভোপাল থেকেও কেউ কোনো প্রশ্ন করেননি।
মাসের পর মাস চলে যায়, তিনি আর ডিউটিতে আসেন না। একসময় বছর পার হতে থাকে, তবুও তিনি আসেননি ডিউটিতে। কিন্তু তাঁর নাম সেখানে ছিল, কোনো মাসেই বেতন আটকে থাকেনি। একসময় গিয়ে দেখা যায়, মোট ২৮ লাখ রুপি পেয়েছেন এই কনস্টেবল।
২০২৩ সালে প্রথম এই ঘটনা নজরে আসে। ওই বছর ২০১১ সালে জয়েন করা পুলিশ কর্মকর্তাদের মূল্যায়ন হয়। ওই সময় সংশ্লিষ্টরা এই কনস্টেবলকে আর খোঁজে পাচ্ছিলেন না। এমনকি পুলিশ কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও তাঁকে চিনতেন না। এরপর তাঁর কার্যক্রম দেখতে গিয়ে কর্তৃপক্ষের নজরে আসে, তিনি কোনো কাজই করেননি।
তাঁকে জরুরি তলব করা হলে তিনি এসে জানান, তাঁর মানসিক সমস্যা ছিল। এ কারণে এত বছর কাজে যুক্ত হতে পারেননি। এমনকি এই দাবির পক্ষে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও দেখান ওই ব্যক্তি। এ ছাড়া তিনি কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। তবে এখন পর্যন্ত দেড় রাখ রুপি ফিরিয়ে দিয়েছেন এই কনস্টেবল। বাকি অর্থও ফিরিয়ে দেবেন বলে জানিয়েছেন।