আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের আদেশ অমান্য করে গাজার রাফাহতে নির্বিচারে বোমা হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। গতকাল রোবার রাফাহর তাল-আস-সুলতান এলাকার একটি শরণার্থী শিবিরে বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলে। এতে অন্তত ৩৫ জন নিহত হয়েছেন।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ওই ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছিলেন কয়েক শ বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি। সেখানে বোমা ফেলে অন্তত ৩৫ জনকে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছে ইসরায়েলি বাহিনী। নিহতদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।
এদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় জাবালিয়া, নুসিরাত ও গাজা সিটি এলাকার শরণার্থী শিবিবিরগুলোতে ইসরায়েলি হামলায় ১০৬ জন নিহত হয়েছেন।
মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, কয়েক মাস পর গতকাল রোববার তেল আবিবে হামাসের রকেট হামলার পর রাফহতে বোমা হামলা চালাল ইসরায়েল। রাফাহর এমন একটি শরণার্থী শিবিরে হামলা চালানো হয়েছে, যেটিকে ইসরায়েল ‘নিরাপদ অঞ্চল’ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিল।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) দাবি করেছে, ওই এলাকায় হামাসের জঙ্গিরা আশ্রয় নিয়েছিল। তাই অভিযান চালানো হয়েছে। এ অভিযানে হামাসের দুই সিনিয়ন কর্মকর্তা নিহত হয়েছে।
তবে হামাসের পক্ষ থেকে তাদের দুই সিনিয়র কর্মকর্তার নিহত হওয়ার বিষয়টি সম্পর্কে কিছুই জানানো হয়নি।
এদিকে সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, বোমার আঘাতে একটি তাঁবুতে বড় অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, গত শনিবার ইসরায়েলি বেশ কয়েকজন সেনাকে আটকে ফেলার দাবি করেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস।
হামাসের সশস্ত্র শাখা আল কাসেম বিগ্রেডের মুখপাত্র আবু উবাইদা বলেন, ‘উত্তরাঞ্চলের জাবালিয়া এলাকায় যুদ্ধের সময় একটি টানেলে ব্যাপক লড়াই করে আমাদের যোদ্ধারা। এ সময় ইহুদিদের কুপোকাত করা হয়। ইসরায়েলি সেনাদের কেউই বেঁচে ফিরে যেতে পারেনি। মারা গেছে কিংবা আহত হয়েছে।’
তবে হামাসের এই দাবি মিথ্যা বলে জানিয়েছে ইসরায়েল। এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলছে, এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি।
গত সাত মাসের বেশি সময় ধরে গাজায় অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত প্রায় ৩৬ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৮০ হাজারের বেশি মানুষ।