ইয়েমেনে ইরান–সমর্থিত বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুতিদের বিরুদ্ধে শনিবার থেকে বড় পরিসরে হামলা শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্রে। এতে ১৯ জন নিহত হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘যদি তারা না থামে, তাদের জীবনকে নরকে পরিণত করা হবে।’
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, লোহিত সাগরে চলাচলকারী ইসরায়েলি জাহাজগুলোতে দীর্ঘদিন ধরেই হামলা চালাচ্ছিল হুতি। এর প্রতিবাদে হুতিদের ওপর পাল্টা হামলা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
হুতিদের প্রধান সমর্থক ইরানকে সতর্ক করে দিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘ইরানের অবশ্যই হুতিদের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করা উচিত। ইরান যদি যুক্তরাষ্ট্রকে হুমকি দেয়, তবে তাদেরকে উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে। আর এতে আমরা কেউই ভালো থাকব না।’
একজন মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হুতিদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের হামলা কয়েক দিন অথবা এক সপ্তাহজুড়েও চলতে পারে।
গত জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নেন ডোনাল্ড জে ট্রাম্প। এরপর এটিই মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্ররে সবচেয়ে বড় সামরিক অভিযান। যুক্তরাষ্ট্র এমন এক সময়ে ইয়েমেনে হামলা শুরু করল যখন ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার চাপ বাড়াচ্ছে এবং পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে ইরানকে আলোচনার টেবিলে আনার চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র।
এদিকে হুতিদের রাজনৈতিক ব্যুরো যুক্তরাষ্ট্রের এই হামলাকে ‘যুদ্ধাপরাধ’ বলে অভিহিত করেছে। তাদের আশঙ্কা, যুক্তরাষ্ট্র তাদের হামলা ইয়েমেনের উত্তর প্রদেশেও সম্প্রসারিত করতে পারে।
হুতিরা তাদের বিবৃতিতে বলেছে, ‘যুক্তরাষ্ট্রের উসকানির জবাব দিতে আমরাও প্রস্তুত।’
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গতকাল শনিবার সানায় হুতিদের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত একটি ভবনে হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আব্দুল্লাহ ইয়াহিয়া নামের এক বাসিন্দা রয়টার্সকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভয়াবহ হামলায় পুরো মহল্লা ভূমিকম্পের মতো কেঁপে উঠেছে। আমাদের নারী ও শিশুরা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে।
এক দশকের বেশি সময় ধরে ইয়েমেনে সশস্ত্র সংগ্রাম করছে হুতিরা। ইয়েমেনের অধিকাংশ অঞ্চলই এখন তাদের দখলে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েরি হামলা শুরু হলে এর প্রতিবাদে লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ লক্ষ্য করে তারা ১০০ এর বেশি হামলা চালিয়েছে।
এরপর হুতিদের থামাতে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্দেশে হামলা শুরু হয়। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাশা অনুযায়ী কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জিত হয়নি। তাই নতুন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এসে আবারও হুতিদের ওপর হামলার নির্দেশ দিলেন।