ইয়েমেনে ইরান–সমর্থিত বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুতিদের বিরুদ্ধে বড় পরিসরে হামলা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। শনিবার শুরু হওয়া এ হামলায় এখন পর্যন্ত ৩১ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। আজ রোববার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদন বলছে, লোহিত সাগরের জাহাজে হামলার প্রতিবাদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুতিদের বিরুদ্ধে বড় আকারের সামরিক হামলা শুরু করেছেন। এই হামলা বেশ কয়েকদিন ধরে চলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ট্রাম্প হুতিদের প্রধান সমর্থক ইরানকে সতর্ক করে বলেছেন, তাদের অবিলম্বে এই গোষ্ঠীর প্রতি সমর্থন বন্ধ করতে হবে। তিনি বলেন, যদি ইরান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে হুমকি দেয়, আমেরিকা সম্পূর্ণরূপে জবাবদিহি করবে এবং আমরা এতে খুশি হব না!
ইরানের বিপ্লবী গার্ডের শীর্ষ কমান্ডার রোববার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন, হুতিরা স্বাধীন এবং তাদের নিজস্ব কৌশলগত এবং কর্মক্ষম সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। আমরা আমাদের শত্রুদের সতর্ক করে দিচ্ছি, ইরান যদি তাদের হুমকি কার্যকর করে তবে তারা চূড়ান্ত এবং ধ্বংসাত্মক প্রতিক্রিয়া জানাবে।
একজন মার্কিন কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, গত জানুয়ারিতে ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে মধ্যপ্রাচ্যে সবচেয়ে বড় মার্কিন সামরিক অভিযানের প্রতিনিধিত্ব করে হুতিদের বিরুদ্ধে চালানো এ হামলা।
ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে পোস্ট লিখেছেন, হুথি সন্ত্রাসীদের উদ্দেশে বলছি, তোমাদের সময় শেষ এবং আজ থেকেই তোমাদের আক্রমণ বন্ধ করতে হবে। যদি তা না করা হয়, তাহলে তোমাদের ওপর এমন নরক নেমে আসবে যা তোমরা আগে কখনও দেখেনি!
রোববার এক হালনাগাদ তথ্যে হুথি পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আনিস আল-আসবাহী বলেছেন, মার্কিন হামলায় কমপক্ষে ৩১ জন নিহত এবং ১০১ জন আহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
এ হামলাকে হুথিদের পক্ষে যুদ্ধাপরাধ বলে বর্ণনা করা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, আমাদের ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনী প্রতিক্রিয়া জানাতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত।
এক দশকের বেশি সময় ধরে ইয়েমেনে সশস্ত্র সংগ্রাম করছে হুতিরা। ইয়েমেনের অধিকাংশ অঞ্চলই এখন তাদের দখলে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েরি হামলা শুরু হলে এর প্রতিবাদে লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ লক্ষ্য করে তারা শতাধিক হামলা চালিয়েছে।
এরপর হুতিদের থামাতে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্দেশে হামলা শুরু হয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাশা অনুযায়ী কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জিত হয়নি। ট্রাম্পের নির্দেশে তাই ফের হামলা শুরু হলো।