দেড় বছর ধরে চালানো নির্বিচার হামলায় বিধ্বস্ত গাজাতে সর্বাত্মক অবরোধ জারি রেখেছে ইসরায়েল। জরুরি খাদ্য ও ওষুধ প্রবেশেও বাধা দিচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। ফলে ভূখণ্ডটিতে পোলিও টিকা প্রবেশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে সেখানকার ৬ লাখের বেশি শিশু।
তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েল পোলিও টিকা গাজায় প্রবেশ করতে না দেওয়ায় ৬ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি শিশু ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
গতকাল মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় জানায়, ‘টিকা ঢুকতে না দেওয়ার কারণে পোলিও প্রতিরোধে চতুর্থ পর্যায়ের ক্যাম্পেইন বন্ধ হয়ে গেছে। টিকা সরবরাহ বন্ধ হলে ৬ লাখ ২ হাজারের বেশি শিশু সারা জীবনের জন্য পক্ষাঘাতগ্রস্ত বা স্থায়ীভাবে পঙ্গু হয়ে যেতে পারে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘গাজার শিশুদের স্বাস্থ্যের অবস্থা বর্তমানে নজিরবিহীন ও ভয়াবহ। প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও নিরাপদ খাবার পানির পুরোপুরি অভাব রয়েছে ভূখণ্ডটিতে।’
২০২৪ সালের আগস্টে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রথম ১০ মাস বয়সী এক শিশুর শরীরে পোলিও শনাক্ত করে। এরপর সেপ্টেম্বর থেকে ইসরায়েলি আগ্রাসনের মধ্যেই মুখে খাওয়ানোর পোলিও টিকাদান কার্যক্রম চালানো হয়। তিনটি ধাপে এই টিকাদান কার্যক্রম পরিচালিত হয়। প্রথম ধাপে ৫ লাখ ৬০ হাজারের বেশি শিশু টিকা পায়। দ্বিতীয় ধাপে ১০ বছরের নিচের ৫ লাখ ৫৬ হাজার ৭৭৪ শিশু এবং তৃতীয় ধাপে আরও ৫ লাখ ৯০ হাজার শিশুকে পোলিও টিকা দেওয়া হয়।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, সম্পূর্ণ সুরক্ষার জন্য গাজার শিশুদের মুখে খাওয়ানো পোলিও টিকার অন্তত দুটি ডোজ গ্রহণ করা প্রয়োজন। তবে হামলায় বিধ্বস্ত অঞ্চলটিতে দুর্ভিক্ষের একাধিক খবর সত্ত্বেও গত ২ মার্চ থেকে গাজার ক্রসিং বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। ফলে ভূখণ্ডটিতে প্রয়োজনীয় সরবরাহ প্রবেশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। জরুরি খাদ্য ও ওষুধ প্রবেশ পর্যন্ত বাধাগ্রস্ত হচ্ছে গাজায়।