ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেটের প্রধান রোনেন বার পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। আগামী ১৫ জুন তিনি পদত্যাগ করবেন।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, গতকালে সোমবার এক বিবৃতির মাধ্যমে নিজের পদ থেকে অব্যাহতি নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন রোনন বার। তাঁর এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে রোনেন বারের সম্পর্কের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য হয়ে পড়েছে।
বিবৃতিতে রোনেন বলেন, ‘আমি আমার ৩৫ বছরের চাকরিজীবনের ইতি টানতে যাচ্ছি। আগামী ১৫ জুন আমি পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই সময়সীমার মধ্যে একজন যোগ্য ও পেশাদার উত্তরসূরীকে বেছে নেওয়া এবং তার হাতে দায়িত্ব অর্পণ করা হবে।’
ইসরায়েলের সবচেয়ে প্রভাবশালী নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেট। এটি সাধারণত সন্ত্রাস ও সন্ত্রাসী হামলার তদন্ত করে থাকে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে দক্ষিণাঞ্চলে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের হামলার তদন্তে ছিল শিন বেট। ওই হামলায় ১২০০ জনের বেশি ইসরায়েলি প্রাণ হারিয়েছেন।
তবে গত বেশ কয়েক মাস ধরে নেতানিয়াহু এবং তার নেতৃত্বাধীন যুদ্ধাকালীন মন্ত্রিসভার সঙ্গে দ্বন্দ্ব চলছিল শিন বেটের। তদন্তের গতিপ্রকৃতি ও ফলাফল প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার মন্ত্রিসভার কট্টরপন্থী সদস্যদের প্রত্যাশা অনুযায়ী না হওয়ায় শিন বেট এবং রোনেন বারের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছিলেন তারা।
গত ১৬ মার্চ নেতানিয়াহু প্রকাশ্যে বলেন, তিনি রোনেন বারের ওপর থেকে আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন। এর আগেও তিনি বলেছিলেন, রোনন তাঁর পদে বহাল থাকলে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান ও সরকারি কর্মকর্তাদের নিরাপত্তায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোননকে বেশ কয়েকবার চাকরিচ্যুত করারও চেষ্টা করেছিলেন নেতানিয়াহু। কিন্তু দেশজুড়ে প্রতিবাদ ও সমালোচনার মুখে তিনি হাল ছেড়ে দেন। পরে ইসরাইলের সুপ্রিম কোর্ট রোনেনকে চাকরিচ্যুত করার চেষ্টার ওপর স্থগিতাদেশ দেন।
স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, সরকারবিরোধী বিক্ষোভ দমন করতে রোনানকে বিক্ষোভকারীদের মধ্যে গুপ্তচর নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিলেন নেতানিয়াহু, কিন্তু এই নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করেন রোনেন বার। এরপর থেকেই রোনেনের সঙ্গে সম্পর্কের চূড়ান্ত অবনতি হয় নেতানিয়াহুর।