জাফর এক্সপ্রেস ট্রেন ছিনতাইয়ের রেশ কাটতে না কাটতেই এবার পাকিস্তান আর্মির ওপর ভয়াবহ হামলা চালানো হয়েছে। আজ রোববার বেলুচিস্তানে সেনাবাহিনীর একটি গাড়িবহরে হামলা চালানো হয়। বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। বিএলএ দাবি করছে, হামলায় কমপক্ষে ৯০ জন পাকিস্তানি সেনাকে হত্যা করা হয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, নিহত হয়েছেন অন্তত ৭ জন, আহত ২১।
ইন্ডিয়া টুডে, টাইমস অব ইন্ডিয়াসহ বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম বলছে, আজ সকালে বেলুচিস্তানের রাজধানী শহর কোয়েটা থেকে তাফতানের উদ্দেশে যাচ্ছিল এই সেনা গাড়িবহর। সে সময়েই হামলা চালায় বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আরসিডি হাইওয়েতে হামলার ঘটনা ঘটে। প্রথমে পরপর বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণ ঘটে এবং তারপর প্রচণ্ড গুলিবর্ষণ শুরু হয়। এই হামলার পর তড়িঘড়ি অ্যাম্বুলেন্স এবং নিরাপত্তা বাহিনীকে ঘটনাস্থলের দিকে ছুটে যেতে দেখা গেছে, এবং হাসপাতালগুলোতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।
হামলার দায়িত্ব স্বীকার করে বিএলএর মুখপাত্র জিয়ান্দ বালুচ বলেন, ‘কয়েক ঘণ্টা আগে বিএলএর আত্মঘাতী শাখা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বহরকে লক্ষ্য করে হামলা চালায়। সেখানে আটটি বাস ছিল, যার মধ্যে একটি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে।’
পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানায়, ‘কোয়েটা থেকে তাফতানগামী নিরাপত্তা বাহিনীর একটি গাড়িবহরে হামলা চালানো হয়। সাতটি বাস ও দুটি গাড়িকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়। একটি বাসকে আইইডি (বিস্ফোরক) বোঝাই একটি গাড়ি আঘাত করে। সম্ভবত এটি একটি আত্মঘাতী হামলা, অন্যটি রকেট-চালিত গ্রেনেড (আরপিজি) দিয়ে করা হয়েছিল।’
পুলিশ জানিয়েছে, বিস্ফোরণের পরপরই আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, পরিস্থিতি সামাল দিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী এলাকাটি ঘিরে রেখেছে এবং তদন্ত চলছে।
গত ১২ মার্চ বিএলএ কোয়েটা থেকে পেশোয়ারগামী জাফর এক্সপ্রেস হাইজ্যাক করে। এই ট্রেনে ৪০০ জনের বেশি যাত্রী ছিলেন। সংগঠনটি পাকিস্তান সরকারের কাছে বেলুচ নেতাদের মুক্তি এবং বেলুচিস্তান থেকে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের অপসারণের দাবি জানিয়েছিল। এর জন্য, বিএলএ শাহবাজ সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিল। কিন্তু পাকিস্তান সেনাবাহিনী বন্দীদের মুক্তির অভিযান শুরু করে এবং প্রায় ৩০ ঘণ্টা পর পাকিস্তানি সেনা দাবি করে, তারা সমস্ত বন্দীদের মুক্ত করে আনতে সক্ষম হয়েছে। এর সঙ্গে জড়িত ৩৩ জন বেলুচ যোদ্ধাকে হত্যা করেছে।