ভারতকে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ বন্ধ করে অর্থপূর্ণ সংলাপ শুরু করার আহ্বান জানিয়েছে পাকিস্তান। আজ শনিবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের উন্মুক্ত বিতর্কে ভারতের বক্তব্যের জবাবে এই আহ্বান জানান জাতিসংঘে পাকিস্তানের স্থায়ী মিশনের মানবাধিকারবিষয়ক কাউন্সিলর সায়মা সেলিম।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে।
সায়মা সেলিম বলেন, ভারত আবারও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচারের আশ্রয় নিয়েছে। কিন্তু কোনো ধরনের বিভ্রান্তির মাধ্যমেই তথ্য গোপন করা সম্ভব নয়। ভারত বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে স্পষ্ট আগ্রাসন চালিয়েছে এবং আমার দেশে এবং বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসবাদ ও হত্যাকাণ্ডের পৃষ্ঠপোষকতা করছে।’
ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করে সিন্ধু নদীর পানিচুক্তি স্থগিত করে মোদি সরকার। এ প্রসঙ্গে সায়মা সেলিম বলেন, ‘পাকিস্তানের ২৪ কোটি মানুষের জীবনরেখা হিসেবে কাজ করে এমন নদীর প্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করে ভারত নিজেদরকেই বিতর্কিত করছে। পানি কখনো যুদ্ধের অস্ত্র হতে পারে না।’
পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় পাকিস্তানের সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করে সায়মা বলেন, ‘ভারতের যদি লুকানোর কিছু না–ই থাকত, তাহলে তারা এই ঘটনার সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও স্বাধীন তদন্তে সম্মত হতো।’
গত ২২ এপ্রিল পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হন। এ হামলার জন্য ভারত তাৎক্ষণিকভাবে পাকিস্তানকে দায়ী করলেও এখনো কোনো তথ্য প্রমাণ দেখাতে পারেনি। অন্যদিকে পাকিস্তান শুরু থেকেই ভারতের এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
এরপর দুই দেশই পাল্টাপাল্টি বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নেয় এবং সামরিক সংঘাতে জড়ায়। শেষে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ভারত ও পাকিস্তান।
সায়মা জানান, ৬ থেকে ১০ মে পর্যন্ত ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে স্পষ্ট আগ্রাসন চালিয়েছে। বিনা উসকানিতে নিরীহ বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এসব হামলায় ৭ জন নারী ও ১৫ জন শিশুসহ ৪০ জন নিহত হয়েছেন এবং ১০ জন নারী ও ২৭ জন শিশুসহ ১২১ জন আহত হয়েছেন।
সায়মা সেলিম আরও বলেন, ‘ভারত যদি সত্যিই শান্তি, নিরাপত্তা এবং সুপ্রতিবেশীসুলভ সম্পর্কে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়, তাহলে তার উচিত রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট সন্ত্রাসবাদ বন্ধ করা।’