পাবনার চাটমোহর উপজেলার একটি ভুট্টা খেত থেকে সাত বছর বয়সী এক শিশুর বিবস্ত্র মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় ওই শিশুর মুখ পোড়া ছিল। পুলিশের ধারণা, ধর্ষণের পর ওই শিশুকে শ্বাসরোধে হত্যার করা হয়েছে। এরপর তার মুখ অ্যাসিড দিয়ে পোড়ানো হয়।
আজ মঙ্গলবার সকালে পাবনার চাটমোহর উপজেলার স্থানীয় একটি বিলের মধ্যে একটি ভূট্টা খেত থেকে ওই শিশুর বিবস্ত্র মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ সময় তাঁর মুখ ছিল পোড়া এবং ক্ষতবিক্ষত চিহ্ন।
ভুক্তভোগী ওই শিশু স্থানীয় একটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। তার বাবা দেশের বাইরে থাকেন।
এদিকে মরদেহ উদ্ধারের পর ঘটনাস্থলে এসে পরিচয় শনাক্ত করেন ওই শিশুর স্বজনেরা। এ সময় কান্নাজড়িত কণ্ঠে তারা জানান, পহেলা বৈশাখের দিন নতুন জামা পড়ে প্রবাসে থাকা বাবাকে ভিডিও কলে দেখিয়েছিল সাত বছর বয়সী ওই শিশু। এতে খুশি হয়েছিলেন প্রবাসী বাবা। বাবার সঙ্গে কথা শেষ করে সারাদিন ঘোরাঘুরি করে ওই শিশু। সন্ধ্যায় প্রতিবেশী দাদির বাড়িতে যাওয়ার কথা বলে বের হয় ওই শিশু। এরপর থেকে আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি তার। আজ তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, স্থানীয় একটি বিলের ভূট্টা খেতে ওই শিশুর বিবস্ত্র মরদেহ পড়ে ছিল। মুখে পোড়া ক্ষতবিক্ষত চিহ্ন। এ সময় পরনের প্যান্ট গলায় প্যাঁচানো ছিল। সকালে শিশুটির মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন তারা। পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিবারের লোকজন ওই শিশুর পরিচয় শনাক্ত করেন এবং পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে।
এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান সহকারী পুলিশ সুপার (চাটমোহর সার্কেল) আরজুমা আক্তার, চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুরুল আলম ও বড়াইগ্রাম থানার ওসি (তদন্ত) মাহবুবুর রহমান।
এ বিষয়ে চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুরুল আলম বলেন, স্থানীয়দের অভিযোগ এবং ধারণা করা হচ্ছে, ভুক্তভোগী শিশুকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। এরপর তাঁর মুখ অ্যাসিড দিয়ে পোড়ানো হয়েছে।
ওসি আরও বলেন, শিশুটির মরদেহের পরিচয় তার স্বজনেরা শনাক্ত করেছেন। মরদেহ উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
চলতি বছরের ৫ মার্চ মাগুরা শহরতলীর একটি এলাকায় বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয় এক শিশু। ৬ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নেওয়া হয়। ১৩ মার্চ দুপুরে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় শিশুটি। এ ঘটনায় ৮ মার্চ মাগুরা সদর থানায় শিশুটির মা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণ ও আহত করার অভিযোগে মামলা করেন। ওই মামলায় শিশুটির ভগ্নীপতি, বোনের শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে আসামি করা হয়। গ্রেপ্তারে পর বর্তমানে আসামিরা কারাগারে আছেন।