গত ৫ মাস ধরে ঝুলে আছে ৪৩তম বিসিএসে উত্তীর্ণ ২২৭ প্রার্থীর গেজেট। সরকার থেকে সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হলেও এখনো গেজেট হয়নি এসব প্রার্থীর। দাবি আদায়ে এক সপ্তাহ ধরে অনশন করছেন বঞ্চিতরা। এতে ৪ জন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
৪৩তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা শেষে ২০২৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর ২ হাজার ১৬৩ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। ভেরিফিকেশন শেষে ৯৯ জনকে বাদ দিয়ে গত বছরের ১৫ অক্টোবর ২ হাজার ৬৪ জনকে চূড়ান্তভাবে নিয়োগ দিয়ে প্রথম গেজেট প্রকাশ করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
আবার ৩০ ডিসেম্বর ওই প্রজ্ঞাপন বাতিল করে প্রথম সুপারিশকৃত ২ হাজার ১৬৩ জনের মধ্য থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অনুপস্থিত ৪০ এবং গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন বিবেচনায় সাময়িকভাবে অনুপযুক্ত ২২৭ সহ মোট ২৬৭ জনকে বাদ দিয়ে ১ হাজার ৮৯৬ জনকে নিয়োগের দ্বিতীয় প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
গত ৫ মাস ধরে এসব প্রার্থী তাদেরকে গেজেটভুক্ত করার দাবিতে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে। সরকারের পক্ষ থেকে সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হলেও কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি।
এবার এক সপ্তাহ ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আমরণ অনশনে বসেছেন বেশ কয়েকজন প্রার্থী।
একজন প্রার্থী বলেন, ‘এতো নিউজ হচ্ছে, এতো কিছু হচ্ছে কিন্তু তাদের পক্ষ থেকে আমরা এখনও পর্যন্ত কনসার্ন পাইনি। শুধু আশাই দেওয়া হয়েছে। এর কোনো বাস্তবায়ন তো নাই।’
গেজেট বঞ্চিতরা বলছেন, যারা নির্দোষ তাদের সবাইকে গেজেটভুক্ত করতে হবে। বিসিএস হওয়ার পরে চাকরিতে যোগ দিতে না পারায় সামাজিকভাবে হেয় হতে হচ্ছে।
একজন প্রার্থী বলেন, ‘গেজেট নিশ্চিত করা এবং সরকারি চাকরিতে যে ভ্যারিফিকেশন নীতিমালা আছে সেটা স্বচ্ছ করতে হবে। দুই তিন কর্মদিবসে যে কাজটা হয়ে যায় সেটা আজকে ৫ মাসেও হচ্ছে না।’
শিক্ষকরা বলছেন, নিরপরাধদের চাকরি থেকে বঞ্চিত করা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুশাদ ফরিদী বলেন, ‘কোনো লিগ্যাল গ্রাউন্ড ছাড়া, যৌক্তিক কারণ ছাড়া যারা এতো বছর ধরে, এতো সাধ্য সাধনার পর সরকারি চাকরি পেলো তাদেরকে এভাবে অন্যায়ভাবে বঞ্চিত করা, এটা আমার কাছে মনে হয় অমার্জনীয় অপরাধ।’
এদিকে এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেওয়া হয়নি। তবে সমস্যা সমাধানে কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।