সেকশন

বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫, ৪ আষাঢ় ১৪৩২
Independent Television
 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কি ঢাকা বা বাংলাদেশের বাইরে?

আপডেট : ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৪৫ পিএম

রাস্তাগুলো পুরোনো। তার চেয়েও বড় কথা এটির অবস্থান একেবারেই রাজধানীর মাঝখানে। ফলে শহরের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তের সংযোগের কাজটি এসব রাস্তা দিয়েই হয়। এসব রাস্তার দুই প্রান্তে আবার বেশ কিছু হাসপাতাল আছে। কিন্তু হঠাৎ করেই একদিন ওইসব রাস্তায় ঢোকার মুখে জানা গেল, এসব রাস্তায় নাকি ‘বহিরাগত যান’ নিয়ন্ত্রণ করা হবে! আর তার জন্য হুট করেই আপনাকে বহনকারী যানটিকে আটকে দেওয়া হলো। ঢুকতে দেওয়া হলো না।

আপনার কি রাগ হবে? ক্ষুব্ধ হবেন? নাকি অপমানিত বোধ করবেন?

প্রাথমিকভাবে অবশ্যই মেজাজ খারাপ হবে। কারণ, ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার জন্যই আপনি সেখানে গিয়েছেন। নিশ্চয়ই জরুরি কাজ ছিল। হুট করে সেখানে আপনার যাত্রা আটকে দিয়ে যদি বলা হয়, সাত সমুদ্র ঘুরে যেতে হবে, তবে মেজাজ খারাপ হওয়া স্বাভাবিক। রাজধানী ঢাকায় এমনিতেই গাড়ির চাপ থাকে, জট থাকে। সুতরাং ঘুরপথে যেতে আপনার বাড়তি সময় লাগবেই। সেই সঙ্গে আপনার আগে থেকে নির্ধারিত কাজটিতেও দেরি হবে। আর যদি হাসপাতালের সংশ্লিষ্টতা থাকে, তবে মেনে নিতেই হবে এই হঠাৎ আটকানোর সিদ্ধান্ত আপনাকে আঘাত করবে একেবারে প্রত্যক্ষভাবে। জীবন-মরণের ব্যাপারও হতে পারে তা।

অথচ এই কাজটি গত ১৩ ডিসেম্বর করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে দৈনিক প্রথম আলোতে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, ‘সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বাইরের যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ক্যাম্পাসের সাতটি প্রবেশপথে তল্লাশিচৌকি বসিয়ে গতকাল শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেল থেকে সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়। বিষয়টি আগে থেকে না জানার কারণে অনেক মানুষ যানজটে আটকা পড়ে ভোগান্তিতে পড়েন।’ একেবারে খবরের শুরুতেই দেওয়া তথ্যে এটি স্পষ্ট যে, বাইরের যান নিয়ন্ত্রণের এই সিদ্ধান্ত হঠাৎ করেই, কিছুটা চমকে দিয়েই আরোপ করা হয়েছে এবং এর জন্যই ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বহুল প্রচলিত ঢাবি সংশ্লিষ্ট সেই মিমের আদলেই যেন হুট করে বলে দেওয়া হলো–‘আগে গাড়ি ঢুকিয়ে দেখান!’ আর এসবে মূলত যারা ভোগান্তিতে পড়েছেন, তারা হলেন সাধারণ মানুষ। প্রকাশিত সংবাদের শিরোনামও ছিল এমন–‘হঠাৎ ক্যাম্পাসে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ, যানজট, ভোগান্তি’।

ছবি: সংগৃহীতএই নিয়ন্ত্রণের একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়ে এবং অবলীলায় রাজধানীবাসীকে সেভাবে না জানিয়ে বাস্তবায়নও করে ফেলে সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগ উপহার দেওয়ার পরের দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অবশ্য একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। তাতে জানানো হয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ের জন্য যান চলাচল নিয়ন্ত্রিত রাখা হবে। প্রক্টর অফিসের এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, শুক্র, শনি ও সরকারি ছুটির দিনগুলোয় বেলা ৩টা থেকে রাত ১০টা ও কর্মদিবসে বিকেল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত যান চলাচল নিয়ন্ত্রিত থাকবে। এ সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকারযুক্ত গাড়ি, জরুরি সেবা (অ্যাম্বুলেন্স, ডাক্তার, রোগী, সাংবাদিকসহ অন্যান্য সরকারি গাড়ি) ছাড়া অন্য কোনো যানবাহন ক্যাম্পাসের ভেতরে ঢুকতে পারবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতটি প্রবেশপথে ব্যারিকেড দিয়ে গাড়ি প্রবেশ নিয়ন্ত্রিত করা হবে বলেও জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এই সাতটি পথ হলো শাহবাগ, দোয়েল চত্বর, বার্ন ইউনিট, শিববাড়ি ক্রসিং, ফুলার রোড, পলাশী মোড় ও নীলক্ষেত। কর্তৃপক্ষের বক্তব্য অনুযায়ী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে ক্যাম্পাসে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণের মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এবার সাতটি ‘নিয়ন্ত্রিত’ পথ খেয়াল করুন। এগুলো আসলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক-একটি প্রান্ত। এসব প্রান্তেই আছে ঢাকা শহরের একেকটি এলাকা। ফলে আপনি যদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরের রাস্তা ব্যবহার করেন, তবে যতটা সহজে অন্যান্য প্রান্তে পৌঁছাতে পারবেন, ততটা সহজে ঘুরপথে পারবেন না। আবার এই রাস্তাগুলো বন্ধ করে দেওয়ায় অন্যান্য ঘুরপথের রাস্তায় যানবাহনের চাপ বাড়বে। ফলে জটও বাড়বে। সুতরাং আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট হবে। অন্যদিকে দিনের এমন সময়ে যান নিয়ন্ত্রণের কথা বলা হয়েছে, যে সময়টা বেশির ভাগের বাড়ি ফেরার সময়। আর জরুরি কাজ তো যেকোনো সময়ই পড়তে পারে।

সব মিলিয়ে জনভোগান্তি যে বাড়বেই, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। কেমন, সেটি জানতে আরেকটি সংবাদমাধ্যমের প্রকাশিত খবরে দৃষ্টি ফেলা যাক। গত ১৬ ডিসেম্বর দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের বাংলা সংস্করণের অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত একটি খবরের শিরোনাম ছিল—‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যানবাহন চলাচল সীমিত করায় বেড়েছে যানজট’। মূলত গত ১৫ ডিসেম্বরের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে এই সংবাদে বলা হয়েছে যে, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসে যান চলাচল সীমিত করায় আশপাশের এলাকাগুলোতে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এতে যানজট বেড়েছে শাহবাগ, দোয়েল চত্বর ও নীলক্ষেত এলাকায়। এর ফলে এসব এলাকা দিয়ে যাতায়াতকারী সাধারণ যাত্রীরা এখন ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।’ এই খবরে আরও বলা হয়েছে, অনেককেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় নষ্ট করে গন্তব্যে পৌঁছাতে হচ্ছে। সুতরাং ভোগান্তির মাত্রা নিশ্চয়ই বোঝা যাচ্ছে।

ছবি: সংগৃহীতদ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডে প্রকাশিত খবরে আরও বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় যেসব রাস্তায় যান চলাচল সীমাবদ্ধ করেছে, সেগুলোর বেশির ভাগই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সিদ্ধান্ত কার্যকর করার আগে তারা ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগ ও সিটি করপোরেশনের সঙ্গে আলোচনা করেছে। খবরে আরও বলা হয়েছে যে, যান নিয়ন্ত্রণে দায়িত্ব পালনকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির মোবাইল টিমের সদস্যরাও নাকি চাপ সামাল দিতে পারছে না।

সুতরাং, বোঝাই যাচ্ছে যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনেকটাই অপ্রস্তুত অবস্থায় ‘দেখি না কী হয়’ ঘরানার মনোভাব নিয়ে যান নিয়ন্ত্রণের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করে ফেলেছে। জনভোগান্তি যে হবে, সেটি আঁচ করতে পারাটা যেকোনো সুস্থ ঢাকাবাসীর পক্ষেই সম্ভব। কর্তৃপক্ষ তো কিছু ব্যক্তিরই সমষ্টি। তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ হিসেবে কাজ করা ব্যক্তিরাও এটি আঁচ করতে পেরেছিলেন নিশ্চয়ই। কিন্তু তারপরও ‘দেখি না কী হয়’ ঘরানায় তারা যান নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করে ফেললেন। এক্ষেত্রে সাধারণ জনমানুষের ভোগান্তির বিষয়টি যে কম গুরুত্ব পেয়েছে, তা কর্তৃপক্ষের কর্মকাণ্ডেই স্পষ্ট। এমনকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদও সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন যে, এ নিষেধাজ্ঞার ফলে তৈরি হওয়া সমস্যাগুলো তারা পর্যালোচনা করছেন। তবে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টিকেই তারা আগে গুরুত্ব দিচ্ছেন। অর্থাৎ, প্রক্টরের বক্তব্যেই পরিষ্কার যে, জনভোগান্তি নিয়ে ভাবনার গুরুত্ব অনেক কম।

এখন প্রশ্ন হলো, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কি গুরুত্ব নেই? কিংবা শিক্ষার্থীদের এই অনিরাপদবোধ কি হুট করেই হয়েছে? নাকি আগেও ছিল?

এই অধম নিজে যেহেতু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী, তাই অভিজ্ঞতার আলোকে দায়িত্ব নিয়েই বলা যায় যে, বাইরের যানবাহন সংক্রান্ত অনিরাপদবোধ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আগেও ছিল। এ নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে নানা দেরদরবারও হয়েছিল, দাবি উত্থাপিতও হয়েছিল। আজ থেকে প্রায় ১০ বছরেরও বেশি সময় আগে এ সংক্রান্ত আলাপের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি যে, ওই সময়ে ক্যাম্পাসে রাতের বেলায় ভারী যানবাহনের চলাচল সীমিত করাই মূল দাবি ছিল। সেই সঙ্গে প্রক্টরিয়াল টিমের অধীনে চেকপোস্ট বসিয়ে বাইরের যানবাহনের চলাচল শৃঙ্খলাবদ্ধ করার ওপরই জোর ছিল বেশি। কারণ ঢাকা শহরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌগলিক অবস্থানের বিষয়টি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মাথায় ছিল ভালোভাবেই। যান ঢুকতে না দিয়ে যে কখনোই বাস্তব কোনো সমাধান বের হবে না, তা ১০ বছর আগেও শিক্ষার্থীরা ঠিকই বুঝেছিলেন। তার ওপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর দিয়ে যাওয়া এসব রাস্তার মালিক তো বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নয়। তো, সাধারণ মানুষের ট্যাক্সের টাকায় গড়া রাস্তায় সেই সাধারণ মানুষদেরই চলতে বাধা দেওয়াটা কেমন হয়ে যায় না! অন্তত যুক্তিতে এক্ষেত্রে মুক্তি মেলে না।

অথচ এই কাজটিই এবার অবলীলায় করে ফেলা হলো। বাংলায় প্রচলিত ‘পরের ধনে পোদ্দারি’ নামের বাগধারাটি বোধহয় এমন পরিস্থিতি বোঝাতেই সৃষ্টি হয়েছিল। যে রাস্তার মালিক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, সেই রাস্তাতেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যান চলাচল নিয়ন্ত্রিত করে ফেলল। আবার তার কারণ হিসেবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টিকে ঢাল বানানো হলো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার গুরুত্ব আছে অবশ্যই। তবে তারাও দিনশেষে গণেরই অংশ। যদি নিরাপত্তা নিয়ে এতই দুশ্চিন্তা থাকে, তবে সেটি নিশ্চিতের আরও অনেক ব্যবস্থা নেওয়া যেত। কিন্তু তার জন্য অজস্র ঢাকাবাসীর ভোগান্তি উৎপাদনই কেন করতে হবে? আর সেটি করে কি সাধারণ মানুষের সঙ্গে বৈষম্যই করা হচ্ছে না? নাকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেলেই সাধারণের ভিভিআইপি মর্যাদায় শ্রেণি উত্তরণ ঘটে? সাধারণ রাজধানীবাসীরা এসব প্রশ্ন কিন্তু তুলতেই পারে। এসব প্রশ্ন ওঠার সাথে সাথেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আপামর শিক্ষার্থীরাও চেতনে–অবচেতনে সাধারণ মানুষের মনের আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে যেতে থাকবে খলচরিত্র হিসেবে। অথচ, সেটি কি কাঙ্ক্ষিত?

সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়াঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আসলে বাংলাদেশের জন্য কী? এ প্রশ্নের উত্তরটা পাওয়া যায় এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষক ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফার একটি সাম্প্রতিক ফেসবুক পোস্টে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তায় প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ের জন্য যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্তের বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন, ‘…এই ক্যাম্পাসকে আলাদা করলে কার লাভ হয় এসব ভাবনা না ভেবে খালি স্বার্থপরের মতো দরজা বন্ধ কইরেন না। অন্য দেশের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে তুলনা দিয়েন না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক দায়-দায়িত্ব। বাংলাদেশের অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের এইসব দায় থাকতেও পারে, নাও থাকতে পারে–আমাদের আছে। যখন এখানে পড়তে আসেন, এইসব দায় আপনাদের হয়ে যায়। ভুলে যেয়েন না! জনগণের ট্যাক্সের টাকায় আপনার পড়ালেখার অধিকার নিশ্চিত হয়, তাদের রাস্তা আটকানোর এবং উলটা রাস্তায় বাস চালায় আগায় যাওয়ার আপনেরা কেউ না!’

আশা করি, ঢাবি কর্তৃপক্ষের ক্যাম্পাসে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণের ধরণ ও অযৌক্তিকতার বিষয়টি এখন স্পষ্ট। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ বা বর্তমান শিক্ষার্থীদের আচরণ কেমন হওয়া উচিত, সেটি তো বুঝিয়ে দিয়েছেন সামিনা লুৎফা।

এখন না হয়, এই লেখার শুরুতেই তোলা অনুভূতি জানতে চাওয়া শীর্ষক প্রশ্নগুলোতে ফিরে যাওয়া যাক। এভাবে হুট করে কোনো রাস্তায় আপনাকে কেউ যেতে না দিলে, এই দেশের একজন নাগরিক হিসেবে আপনি কেমন বোধ করবেন? আপনার কি রাগ হবে? ক্ষুব্ধ হবেন? নাকি অপমানিত বোধ করবেন? উত্তর হলো, এতে রাজধানীতে বসবাসকারী যে কেউ বিরক্ত হতে বাধ্য, রেগে যাওয়াটাও অস্বাভাবিক বিষয় নয়। কারণ আপনাদের দেওয়া করের টাকাতেই রাস্তাগুলো, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়টিও হয়েছে এবং চলছে। তবে রাস্তায় তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানিয়ে তো আর এসব সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন ঠেকানো যায় না। তাই শেষটায় ওই রাস্তাগুলোর মুখে অগত্যা আটকেই যাওয়া যেকোনো নাগরিকের প্রচণ্ড অপমানবোধ হতেই পারে। কারণ, মানুষের ধর্মই হলো, সে নিয়ন্ত্রণ খুব একটা পছন্দ করে না। আর অন্যায্য নিয়ন্ত্রণ তো অবশ্যই নয়। তার প্রমাণ তো এই দেশ কয়েক মাস আগেই পেয়েছে!

তা রাজধানীবাসীর সেই অব্যক্ত ও ক্রমপ্রসারমান অপমানবোধের ক্ষতিপূরণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কীভাবে দেবে?

একটু ভেবে দেখার অনুরোধ রইল।

লেখক: উপবার্তা সম্পাদক, ডিজিটাল বিভাগ, ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশন

[এই মতামত লেখকের নিজস্ব। এর সঙ্গে ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের প্রাতিষ্ঠানিক সম্পাদকীয় নীতিমালার কোনো সম্পর্ক নেই।]

ঢাকা শহরে প্রতিদিন উৎপন্ন প্রায় ৬৪৬ টন প্লাস্টিক বর্জ্যের মাত্র ৩৭ শতাংশ পুনর্ব্যবহার হয় বলে ওয়েস্ট কনসার্ন‑এর ২০২০ সালের গবেষণায় জানা যায়। বাকি অংশ জমা হয় ল্যান্ডফিলে, নদী-নালায় ফেলা হয়, কিংবা...
এ দেশে আসলে কোন বিষয়টির অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটেছে, তাহলে তালিকার প্রথম দিকেই হয়তো চলে আসবে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমের ‘হা হা’ রিঅ্যাকশন!  স্বাভাবিকভাবেই যাদের বেশি হাসি পায় বা যারা অট্টহাসি দেয়,...
রমজান মাস চলছে, ৭ দিন পারও হয়ে গেছে। আস্তে আস্তে চলে আসছে ঈদের প্রস্তুতি। প্রতি ঈদেই রাজধানী ঢাকা প্রায় ফাঁকা হয়ে পড়ে। আর এমন শহরে স্বাভাবিকভাবেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে কিছুটা উদ্বেগ থাকেই। এটা...
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে এক আল্টিমেটাম শেষ হলো আজ সোমবার। প্রায় কাছকাছি সময়ের আরেকটি আল্টিমেটাম এসে হাজির। এবারও ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম। শেষ হবে আগামীকাল মঙ্গলবার। এই সময়ের মধ্যে পদত্যাগ...
ইরানের বিরুদ্ধে নেতানিয়াহুর যুদ্ধকে সমর্থন করা হবে একটি ভয়াবহ ভুল। যুদ্ধে না গিয়ে, ট্রাম্পের উচিত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে কাজ করে নেতানিয়াহুকে সংযত করা এবং জরুরিভাবে একটি কূটনৈতিক সমাধানের...
গত মৌসুমটা কোচ জর্জ জেসুদের অধীনে খুব একটা ভালো কাটাতে পারেনি হিলাল। প্রো লিগে দ্বিতীয় হয়ে মৌসুম শেষ করেছে দলটি। এছাড়া এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগে স্বদেশী আল আহলির কাছে হেরে বাদ পড়েছে টুর্নামেন্টের...
লোডিং...

এলাকার খবর

 
By clicking ”Accept”, you agree to the storing of cookies on your device to enhance site navigation, analyze site usage, and improve marketing.