গত অক্টোবরে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ডাগআউট থেকে ছাঁটাই হন এরিক টেন হাগ। ডাচ কোচের জায়গায় অন্তর্বর্তী হিসেবে নিয়োগ পান রুদ ফন নিস্তেলরয়। ৪ ম্যাচ পর ১১ নভেম্বর ম্যান ইউনাইটেডের কোচ হিসেবে নিয়োগ পান রুবেন আমোরিম।
৪০ বছর বয়সী এ পর্তুগিজ কোচ ইংলিশ ক্লাবটির দায়িত্ব নিয়েছেন সবে ৬ মাস পেরিয়েছে, এরইমধ্যে মুদ্রার দুই পিঠই দেখে ফেলেছেন। আমোরিমের অধীনে প্রিমিয়ার লিগে ক্লাব ইতিহাসে বাজে সময় পার করছে ইউনাইটেড। একের পর এক বেহাল পারফরম্যান্সে পয়েন্ট টেবিলের ১৬ নম্বরে নেমে গেছে রেড ডেভিলরা। অন্যদিকে ইউরোপা লিগে অপরাজিত থেকে দলকে ফাইনালে তুলেছেন আমোরিম।
দুই টুর্নামেন্টে বিপরীতমুখী অভিজ্ঞতার স্বাদ পাওয়া ৪০ বছর বয়সী কোচ এবার আলোচনায় এসেছেন ভিন্ন কারণে। ইউনাইটেডে দায়িত্ব নেওয়ার পর গত ৬ মাসে এখন পর্যন্ত ৪৯১টি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন আমোরিম! ফুটবল বিষয়ক সংবাদমাধ্যম গোলের এক প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রিমিয়ার লিগের মিডিয়া স্বত্বের চুক্তি অনুযায়ী, প্রতি ম্যাচের আগে অন্তত ১৫ মিনিটের জন্য হলেও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকতে হবে কোচকে। তবে অন্যান্য ক্লাবের তুলনায় তর্কসাপেক্ষে ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বেশি আলোচিত ক্লাবটিকে নিয়ে মানুষের আগ্রহ বেশি।
সেই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমোরিমের সাক্ষাৎকার বেশি বেশি প্রচার করে সংবাদমাধ্যমগুলো। নেটিজেনরাও তা আগ্রহ নিয়ে দেখে থাকেন। অনেক ক্ষেত্রে অন্য ক্লাবের কোচের সাক্ষাৎকারের চেয়ে বেশি অর্থ আয় করে সংবাদমাধ্যমগুলো।
যদিও ইউনাইটেড যতটা সম্ভব কম মিডিয়া উপস্থিতি চায়, কিন্তু সংবাদমাধ্যমগুলোর আগ্রহ এতটাই বেশি যে, অনেকটা চুক্তি করতে বাধ্য হয় রেড ডেভিল- এমনটাই জানিয়েছে গোল। এতে আমোরিমকেও যেতে হয় সংবাদ সম্মেলনে।
পর্তুগিজ এ কোচের অধীনে এখন পর্যন্ত প্রিমিয়ার লিগে ২৫টি ম্যাচ খেলেছে ইউনাইটেড। মিডিয়া স্বত্বের চুক্তি অনুযায়ী, ম্যাচের আগে-পরে ৫০বার তো সংবাদ সম্মেলনে এসেছেনই, এর পাশাপাশি এমইউ টিভিতেও সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ৫০বার। লিগের রাইট হোল্ডারদের কাছে ম্যাচের পরে কথা বলতে হয়েছে ১৭৫বার! এছাড়া সম্প্রচারকারী মিডিয়ার সঙ্গেও ম্যাচের আগে বসতে হয়েছে ২১বার। সব মিলিয়ে ২৫ প্রিমিয়ার লিগ ম্যাচেই ২৯৬ টি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন আমোরিম।
সাক্ষাৎকারে এমন এগিয়ে থাকলেও মাঠের পারফরম্যান্সে ক্রমাগত অবনতি হয়েছে ইউনাইটেডের। এই ২৫ ম্যাচে মোটে ৬টি ম্যাচ জিতেছে ইউনাইটেড। ৬ ড্রয়ের বিপরীতে হেরেছে বাকি ১৩টিতে।
শুধু প্রিমিয়ার লিগ নয়, ইউরোপা লিগেও সংবাদমাধ্যম এড়ানোর সুযোগ মেলেনি আমোরিমের। ইউরোপের দ্বিতীয় সেরা টুর্নামেন্টে ফাইনালের আগে এখন পর্যন্ত ১০টি ম্যাচ খেলেছে ইউনাইটেড। এ সময় সবমিলিয়ে আমোরিমকে সাক্ষাৎকার দিতে হয়েছে ১৫০ বার। গড়ে প্রতি ম্যাচে ১৫টি করে সাক্ষাৎকার! এছাড়া লিগ কাপ ও এফএ কাপের ৪ ম্যাচে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ৪৫ বার।
এখন হিসেব করুন। ৬ মাস, ৩৯ ম্যাচ। তাতে মোট সাক্ষাৎকার ৪৯১টি! গড়ে প্রতি ম্যাচে সাড়ে ১২টি করে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। এত বেশিবার সংবাদ সম্মেলনে যাওয়ার যাওয়া, এর মধ্যেও কোচিংয়ের দায়িত্ব সামলানো, ম্যাচের কৌশল সাজানো, ড্রেসিংরুম সামলানোর সময় কীভাবে সমন্বয় করছেন আমোরিম, সেটা নিয়েই এখন নতুন আগ্রহ জন্ম নিতে পারে!