সেকশন

শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৩০ মাঘ ১৪৩১
Independent Television
 

বোয়িং, এয়ারবাস নাকি দুটোই কিনবে বিমান

আপডেট : ০৭ মে ২০২৪, ১১:০২ পিএম

মার্কিন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং এবং ইউরোপীয় প্রতিষ্ঠান এয়ারবাসের কাছ থেকে উড়োজাহাজ কেনার প্রস্তাব পেয়েছে বাংলাদেশ। বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রী ফারুক খান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, দুটি প্রতিষ্ঠানই বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসকে তাদের উড়োজাহাজ কেনার জন্য ভালো প্রস্তাব দিয়েছে। 

এ পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে, বিমান কোন প্রতিষ্ঠান থেকে উড়োজাহাজ কিনবে। নাকি দুই প্রতিষ্ঠান থেকেই কেনা হবে উড়োজাহাজ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিমানের বহরে দুই ধরনের উড়োজাহাজই থাকতে পারে। তবে উড়োজাহাজ কেনার আগেই পরিকল্পনা করতে হবে এগুলোর সম্ভাব্য রুট নিয়ে। 

বিমানের বর্তমান যে বহর, তাতে বোয়িংয়ের তৈরি উড়োজাহাজের সংখ্যাই বেশি। বিমানের বর্তমান বহরে আছে ২১টি উড়োজাহাজ। এর মধ্যে বোয়িংয়ের তৈরি উড়োজাহাজ ১৬টি। আর বাকি ৫টি কানাডার প্রতিষ্ঠান বোম্বার্ডিয়ারের তৈরি ড্যাশ–৮। 

বিমানের বহরে আছে চারটি বোয়িং ৭৭৭, ছয়টি বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার এবং ছয়টি বোয়িং ৭৩৭। এর মধ্যে ৭৭৭ ও ড্রিমলাইনারগুলো টানা ১৬ ঘণ্টারও বেশি সময় উড়তে সক্ষম। এ ধরনের উড়োজাহাজ লং হউল হিসেবে পরিচিত। অন্যদিকে ৭৩৭ উড়োজাহাজগুলো মধ্যম ও স্বল্প দূরত্বের গন্তব্যে ব্যবহার করা হয়। 

বিমানের বহরে একসময় এয়ারবাসের উড়োজাহাজও ছিল। এ-৩১০ মডেলের দুটি উড়োজাহাজ দিয়ে বিভিন্ন রুটে যাত্রী পরিবহন করা হতো। কিন্তু মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় বছরখানেক আগে এগুলোকে বহর থেকে বাদ দেওয়া হয়।

 

বিমানমন্ত্রী ফারুক খান। ছবি: সংগৃহীতবিশ্বের বড় দুই উড়োজাহাজ নির্মাতার কাছ থেকে প্রস্তাব পাওয়া প্রসঙ্গে বিমানমন্ত্রী ফারুক খান বলেন, ‘ইউরোপে তারা এয়ারবাস বানায়, আমাদের বিমানের বহরে বোয়িং আছে। তারা আমাদের কাছে এয়ারবাস বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছে। এখন পর্যন্ত যতটুকু জানি, বেশ ভালো প্রস্তাব আমরা পেয়েছি। এরই মধ্যে বোয়িংও আমাদের ভালো প্রস্তাব দিয়েছে। সেগুলো এখন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছি। এ বিষয়ে বর্তমানে বাংলাদেশ বিমানের পক্ষ থেকে একটি মূল্যায়ন কমিটি করা হয়েছে। বাংলাদেশের জন্য যেগুলো ভালো হবে, সেগুলো আমরা বিবেচনা করব।’

ফারুক খান বলেন, ‘এয়ারবাস এরই মধ্যে অর্থনৈতিক প্রস্তাব দিয়েছে। সেগুলো ভালোভাবে পরীক্ষা করে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। এবারই তারা একটি সমঝোতা স্মারকে সই করার কথা বলেছিল। কিন্তু আমরা বলেছি, আগে মূল্যায়ন শেষ হোক, তারপর সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হবে।’ 

গত বছর প্রধানমন্ত্রীর ইউরোপ সফরের আগে এয়ারবাসের কাছ থেকে ১০টি উড়োজাহাজ কিনতে সমঝোতা স্মারকে সই করে বাংলাদেশ। একই বছর সেপ্টেম্বর ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ ঢাকা সফরে এসেও এয়ারবাস কেনার প্রস্তাব বিবেচনার আহ্বান জানান। পরে উড়োজাহাজ কেনার প্রস্তাব পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের কারিগরি কমিটি।

এ–৩৫০ বর্তমানে এয়ারবাসের জনপ্রিয় মডেলগুলোর একটি। ছবি: সংগৃহীত

প্রাথমিকভাবে এয়ারবাসের কাছ থেকে এ–৩৫০ মডেলের দুটি উড়োজাহাজ কিনতে আগ্রহী বিমান। আর বোয়িংও প্রস্তাব দিয়েছে অন্তত ২টি ৭৮৭ ড্রিমলাইনার বিক্রির। 

এ–৩৫০ বর্তমানে এয়ারবাসের জনপ্রিয় মডেলগুলোর একটি। ২০০৪ সালে নকশা করা এই উড়োজাহাজটি এয়ারবাস বাজারে আনে বোয়িংয়ের ৭৮৭ ড্রিমলাইনারের বাণিজ্যিক ব্যবহার শুরুর পর। 

এখন পর্যন্ত উড়োজাহাজটির দুটো ভ্যারিয়েন্ট বাজারে এসেছে। একটি এ–৩৫০–৯০০ আরেকটি এ–৩৫০–১০০০। এ–৩৫০–৯০০ এ ৩০০ থেকে ৩৫০ জন যাত্রী পরিবহন করা যায়। আর এ–৩৫০–১০০০ তে যায় ৩৫০ থেকে ৪১০ জন।

বোয়িংয়ের ড্রিমলাইনারও বেশ জনপ্রিয় উড়োজাহাজ। তবে সম্প্রতি এটির নির্মাণ প্রক্রিয়ায় ত্রুটির অভিযোগ উঠেছে। এরই মধ্যে অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে মার্কিন নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রিশন (এফএএ)। অভিযোগ ওঠার পর এই মডেলের উড়োজাহাজের উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছে বোয়িং। এফএএ–এর তদন্তে ত্রুটি ধরা পড়লে বিশ্বজুড়ে হাজারেরও বেশি ড্রিমলাইনার ওড়ানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে। যদিও বোয়িং বলছে, অভিযোগের ভিত্তিহীন। 

বিমানমন্ত্রী ফারুক খান বলেন, ‘এগুলো (অভিযোগ) নিয়ে বিভিন্ন ধরনের কথা এসেছে। বোয়িং বলছে, যে অভিযোগ তুলেছে, সে পাগল। এই মুহূর্তে এটাকে এতো সিরিয়াসলি নিচ্ছি না, এক্সেপ্ট বাংলাদেশ বিমানকে আমরা নির্দেশ দিয়েছি বোয়িংয়ের সাথে কথা বলে এই টেকনিক্যাল সাইটগুলো আরও ভালো করে জানো। আমাদেরও এ বিষয়ে যথেষ্ট কারিগরি দক্ষতা আছে নিজস্ব, দুটোকে নিয়েই আমরা দেখছি কোনো সমস্যা আছে কিনা। এখনও আমরা কোনো সমস্যা পাইনি। এটা শুধু বাংলাদেশের একার কাছে নেই। অনেক এয়ারলাইনস এগুলো ব্যবহার করে। সকলের সাথে আলোচনা করেই আমরা সিদ্ধান্ত নেব কী করা যায়। একটা উড়োজাহাজ… একজন বা দুজনের কথার ওপর ভিত্তি করে আমরা কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। তবে আমরা এ ব্যাপারে কনশাস। এ ব্যাপারে জানার চেষ্টা করছি।’ 

বিমানের বহরে বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনারের সংখ্যা ৬টি। ছবি: ইনডিপেনডেন্ট

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ পরিস্থিতিতে বোয়িংয়ের সঙ্গে দর কষাকষিতে কিছুটা বাড়তি সুবিধা পেতে পারে বাংলাদেশ। একদিকে বোয়িংয়ের সংকট আর অন্যদিকে এয়ারবাসের প্রস্তাব। দুটো মিলিয়ে সুবিধা আদায় করার সুযোগ কাছে লাগানোর পরামর্শ তাদের। 

এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ এটিএম নজরুল ইসলাম ইনডিপেনডেন্ট ডিজিটালকে বলেন, ‘বোয়িংয়ের প্রোডাকশন কমেছে। একবার যেহতু মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, তার একটা প্রভাব পড়বে। তাদের বাজার কিছুটা নিচের দিকে যাবে। আমি যতটুকু শুনেছি, বোয়িং বাংলাদেশকে অনেক কমে উড়োজাহাজ দিতে চায়। এই সুযোগ বাংলাদেশ নিতেই পারে। এটা নিয়ে যথেষ্ট দর কষাকষি করতে পারে।’ 

এই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘তাদের সঙ্গে চুক্তি করতে সমস্যা নেই। বরং বাংলাদেশ শর্ত দিতে পারে এফএএ–এর তদন্ত প্রতিবেদন দেখে কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কারণ, দিনশেষে বিমানের কিন্তু উড়োজাহাজ লাগবে। থার্ড টার্মিনাল খোলার পর অনেক বিদেশি এয়ারলাইনস এখানে আসবে। একটি ক্রয়াদেশ দেওয়ার পর উড়োজাহাজ পেতেও কিন্তু যথেষ্ট সময় লাগবে।’ 

এয়ারবাসের দেওয়া প্রস্তাবের বিষয়ে বিমানমন্ত্রী ফারুক খান বলেন, ‘ব্যাংক থেকে যে ঋণ দেওয়া হবে তার সুদ, সেই সঙ্গে টেকনিক্যাল বিষয়গুলোতে বেশ ভালো প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ১০টির মতো এয়ারবাস কিনতে চায়। তবে এ উড়োজাহাজ কিনতে কত টাকা লাগতে পারে, তা নির্ভর করবে কীভাবে প্রস্তাব আসে তার ওপর।’ 

বিমানের বহরে বোয়িংয়ের পাশাপাশি এয়ারবাসের উড়োজাহাজও থাকা উচিত বলে মনে করেন এটিএম নজরুল ইসলাম। তাঁর মতে, এতে বৈচিত্র্য আসবে। 

এটিএম নজরুল ইসলাম বলেন, ‘দুই ধরনের উড়োজাহাজই থাকা উচিত। বড় বড় এয়ারলাইনসগুলোতে স্পেয়ার উড়োজাহাজ থাকে। কিন্তু বিমান যদি এখন পরিকল্পনা করে তাহলে নতুন উড়োজাহাজ আসতে সময় লাগবে। উড়োজাহাজ যুক্ত করার সাথে সাথে এখন থেকেই রুট নিয়ে চিন্তা করতে হবে। বোয়িং বা এয়ারবাসের বিভিন্ন সাইজের উড়োজাহাজ আছে। বিমানকে রুট অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে হবে তার কোনটি প্রয়োজন। বড় এয়ারলাইনসগুলো তাদের বহরে দুই ধরনের উড়োজাহজই রাখে। আবার বোয়িংয়ের তুলনায় এয়ারবাসের জ্বালানি খরচ কম।’ 

সম্প্রতি দূরপাল্লার কয়েকটি নতুন রুট খুলেছে বিমান। এর মধ্যে কানাডার টরোন্টো, জাপানের নারিতা এবং ইতালির রোম রয়েছে। এর বাইরে যুক্তরাজ্যের লন্ডনেও নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা করছে বিমান। বিমানের পরিকল্পনা আছে বন্ধ হয়ে যাওয়া আরও কয়েকটি দূরপাল্লার রুট পুনরায় চালুর। এ অবস্থায় তাদের বহরে দূরপাল্লার ফ্লাইটে সক্ষম আরও কয়েকটি উড়োজাহাজ প্রয়োজন। বিমান উড়োজাহাজ কিনবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনটি, তা নির্ভর করছে দর কষাকষির ওপর।

করাচিভিত্তিক এয়ারলাইনস ফ্লাই জিন্নাহ শিগগিরই ঢাকা–করাচি রুটে ফ্লাইট শুরু করতে যাচ্ছে। সোমবার বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এএনআই।
হজ কার্যক্রমের কারণে আগামী ১ মে থেকে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ম্যানচেস্টার ফ্লাইট স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ। বুধবার বিমানের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। তবে...
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল আগামী নভেম্বরে যাত্রীদের জন্য খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক)। প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে ৯৯ শতাংশ। বৃহস্পতিবার...
এ বছরেই বাংলাদেশ থেকে সরাসরি পাকিস্তানে ফ্লাইট চলাচল শুরু হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির রাষ্ট্রদূত সৈয়দ আহমেদ মারুফ। সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে ঢাকা সফররত পাকিস্তানি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায়...
টেসলা ও স্পেসএক্সের প্রধান ইলন মাস্কের মালিকানাধীন স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা বাংলাদেশে চালু করার ব্যাপারে আলোচনা করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ...
বিলিয়নিয়ার ইলন মাস্কের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার এ দুজনের মধ্যে বৈঠক হয়েছে। এ সময় মহাকাশ, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন নিয়ে আলোচনা করেন নরেন্দ্র মোদি ও...
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে বিয়েবাড়িতে গান শোনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে বল্লমের আঘাতে ময়না নামে ১২ বছরের এক শিশু নিহত হয়েছে। পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের...
টেসলা ও স্পেসএক্সের প্রধান ইলন মাস্কের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বাংলাদেশ সময় আজ বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে এই ফোনালাপ হয়। তবে কী নিয়ে...
লোডিং...
পঠিতনির্বাচিত

এলাকার খবর

 
By clicking ”Accept”, you agree to the storing of cookies on your device to enhance site navigation, analyze site usage, and improve marketing.