কুমিল্লার মুরাদনগরের একটি গ্রামে বসতঘরের দরজা ভেঙে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (২৮ জুন) দিবাগত রাতে সামাজিকমাধ্যমে বিষয়টি ভাইরাল হলে নেটদুনিয়ায় প্রতিবাদের ঝড় উঠে। দোষীদের বিচারের দাবিতে প্রতিবাদ জানান শোবিজ তারকাদের অনেকে। এমন আবহে মুখ খুলেছেন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধনও। নারী নির্যাতন ও শ্লীলতাহানির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন তিনি। এমনকি অভিনেত্রী নিজে যখন সাইবার বুলিংয়ের শিকার হচ্ছেন, কিন্তু কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না—সে বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
রোববার (২৯ জুন) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টের এক পোস্টে জাতীয় পতাকার ছবি শেয়ার করে বাঁধন লিখেছেন, ‘‘আমি কি এই দেশে নিরাপদ? উত্তর সহজ: না। একদম না। দেশে প্রতিদিন মেয়ে ও নারী নির্যাতন, হয়রানি, হুমকি, অন্যায়ের শিকার হয়। আর আমরা কী করি? আমরা এটা সহ্য করি। আমরা পাল্টা লড়াই করি। এবং কিছু... তারা বেঁচে নেই। এই হিংস্রতার জন্য কেউ কেউ প্রাণ হারায়। তখনই—মৃত্যুর পর, অথবা নির্মম অন্যায়ের পর—মানুষ কি হঠাৎ করে ‘চিন্তাধারা হয়ে ওঠে?’’’
যোগ করে লেখেন, ‘সেখানে বিক্ষোভ আছে। হ্যাশট্যাগ আছে। অতঃপর তা বিলীন হয়ে যায়। এবং আমরা এগিয়ে যাই। এটাই বাস্তব যা আমরা বহু বছর ধরে মেনে নিয়েছি। এটা নতুন না।’
বাঁধন নিজেও বারবার সাইবার বুলিংয়ের শিকার হচ্ছেন, এমনকি হুমকি পাচ্ছেন—এমনটা উল্লেখ করে ওই পোস্টে তিনি বলেন, ‘এবার আমার কথা বলি। অনলাইনে যে পরিমাণ হুমকি পেয়েছি। ঘৃণাত্মক বক্তব্য, গুন্ডামি, হয়রানি—কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কি? না। কারণ, এই দেশে অনেক মানুষ বিশ্বাস করে যে আমি এটা প্রাপ্য। আমাকে খুন না করা হলে তারা মনে করে আমাকে হয়রানি করা ঠিক আছে। আমাকে অপমান করার জন্য। আমাকে চুপ করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে।’
সবশেষে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘সিস্টেমের উপর আমার অনেক দিন বিশ্বাস ছিল না। জুলাই বিপ্লবের পর আমি নিজেকে আশা করতে দিয়েছিলাম। আমি কিন্তু ভুল ছিলাম। এই ধরনের দুর্নীতিগ্রস্ত, পিতৃতুল্য দেশে আশাবাদী হওয়ার কোনো কারণ নেই। এটাই সত্যি কথা। এটাই বাস্তব। এবং আমাদের এটা মানতে বাধ্য করা হচ্ছে।’
প্রসঙ্গত, কুমিল্লার মুরাদনগরের সেই ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই নারীর মামলার প্রেক্ষিতে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মূল অভিযুক্ত ফজর আলীকে রোববার (২৯ জুন) ভোর পাঁচটার দিকে ঢাকার সায়েদাবাদ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে কুমিল্লার পুলিশ সুপারের কার্যালয়।