নদী ও মাটিতে নতুন এক দূষণের নাম পিফাস। চামড়া ও পোশাক কারখানা থেকে নির্গত ফ্লোরিন ও কার্বন (যৌগ) মিলে সৃষ্টি করছে এ দূষণ। ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ এলাকায় পিফাসের দূষণ বেশি। দুটি সংস্থার এক যৌথ গবেষণায় এমন তথ্য পাওয়া গেছে। গবেষকেরা বলছেন, এ দূষণ এখনই বন্ধ না করা গেলে ক্যানসার, লিভার, থাইরয়েডসহ বড় ধরনের স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিতে পড়বে মানুষ।
পোশাক কারখানায় আন্তর্জাতিক নানা ব্র্যান্ডের পণ্যে ব্যবহার হয় রাসায়নিক যৌগ পিফাস। বিশেষ করে পানি, তেল ও দাগ প্রতিরোধক বলে এর চাহিদা বেশি। আবার, ননস্টিক রান্না সামগ্রী, খাবারের মোড়ক, অগ্নিনির্বাপণ ফোমে ব্যবহার হয় অতিমাত্রায় ফ্লুরিন ও কার্বন। এ দুই রাসায়নিক মিলে সৃষ্টি হচ্ছে পিফাস। যা দূষিত করছে নদী, খাল ও মাটি।
এ সংক্রান্ত এক গবেষণাপত্র নিয়ে মতবিনিয় সভা হয় রাজধানীর একটি হোটেলে। সেখানে রাজনীতিবিদ ও পেশাজীবীরা বলেন, শিল্প কারখানা স্থাপনের আগে অবশ্যই পরিবেশগত সমীক্ষা করতে হবে।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জুনায়েদ সাকি বলেন, ‘যদি ৬৪ জেলার পাঁচ শ থানার পরিকল্পনা না করেন, কোথায় আসলে শিল্প করা যাবে, কোথায় কৃষি থাকবে আর কোথায় মানুষ থাকবে, তাহলে বাংলাদেশ আর সামনে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারবে না।’
সভায় বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ড. সাখাওয়াত হাসান জীবন জানান, পরিবেশ রক্ষার অঙ্গীকার থাকতে হবে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের।
বিএনপির চেয়ারপার্সনের এই উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের ৩১ দফা কর্মশালা দেওয়া হয়েছে। আপনারা মনে হয় অনেকে শুনেছেন, জানেন। সেখানে পরিবেশের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।’
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘যদি গুড গভর্নেন্স থাকে এবং আমাদের এই সরকার যদি কার্যকর ব্যবস্থা নেয় তাহলে আমাদের মানুষ কিন্তু একসেপ্ট করে নেয়।’
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ জানান, আর্সেনিকের মতো ভয়াবহ এই দূষণ। কিন্তু শিল্প কারখানার জন্য পরিবেশবান্ধব কর্মকৌশল গঠন হলেও তা বাস্তবায়ন হয় না।
এই উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা আর এটা অনুভব করতে পারি না, আমার দেশের মানুষ আর্সেনিকে মারা যায়, নানারকম দূষিত পানি এবং খাদ্যে মারা যায়। আমি তো সারাক্ষণ ওইটার মধ্যেই বাস করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘কোটি কোটি টাকা খরচ করি, অথচ ঠিক সময়ে ঠিক কাজটা করি না।’
পিফাস আমদানি বন্ধ ও এর বিকল্প রাসায়নিক ব্যবহার নিশ্চিতের দাবি জানান আলোচকেরা।