পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার সড়ক থেকে একটি প্রাইভেটকার খালে পড়ে দুই পরিবারের নারী শিশুসহ আটজন নিহতের ঘটনায় স্বজনদের কান্না থামছে না। এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ।
শুক্রবার পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার মাটিভাংগা ইউনিয়নের হোগলাবুনিয়া গ্রামে নিহত শাওনের পরিবারে গিয়ে দেখা যায়, কান্না করছে পরিবারটির সদস্যরা। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে শাওনের পরিবারের চারজন সদস্যের মরদেহ হস্তান্তরের পর বাড়িতে এনে গোসল জানাজা করানো হয়। এরপর পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় তাদের। নিহত শাওনের ভাই জাহিদ মৃধা এ তথ্য জানিয়েছেন।
নিহত শাওন (৩২) নাজিরপুরের হোগাবুনিয়া এলাকার মৃত আসাদ মৃধার ছেলে, আমেনা বেগম (২৫) শাওনের স্ত্রী, শাহাদাত (১০) শাওনের ছেলে ও আব্দুল্লাহ (৩ মাস) শাওনের ছেলে।
নিহত শাওনের ভাই জাহিদ বলেন, ‘বৃহস্পতিবার গভীর রাতে আমার ভাই ও তাঁর বন্ধুর পরিবারের আটজন প্রাইভেটকার দুর্ঘটনায় নিহত হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে আমরা শাওন, তাঁর স্ত্রী ও তাঁর দুই সন্তানের মরদেহ বুঝে পাই। বাড়িতে নিয়ে দাফন–কাফন সম্পন্ন করি। আমাদের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। মা বারবার মুর্ছা যাচ্ছেন। কী করব বুঝে উঠতে পারছি না।’
নিহত শাওনের শাশুরি জাকিয়া বেগম বলেন, ‘গতকাল রাত ১১টায় শাওন ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে শেষ কথা হয়। তখন তারা আমতলি ফেরিঘাটে ছিল। এরপরে আর তাদের সঙ্গে কোনো কথা বলতে পারিনি। গভীর রাতে কেউ একজন ফোন করে বলে ওরা পানিতে ডুবে মারা গেছে। একসঙ্গে চারটি কবর আমার আর কেউ নেই।’
নিহত শাওনের মামা কামরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা দীর্ঘ অপেক্ষার পরে আমার ভাগনের পরিবারের লাশ বাড়িতে এনে জানাজা শেষে রাতে দাফন করি। আমাদের পরিবারে এমন শোকের ছায়া নেমে আসবে কখনো বুঝিনি। আমাদের এলাকায় চলছে শোকের মাতম।’
পিরোজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) মুকিত হাসান খান বলেন, ‘প্রাইভেটকার দুর্ঘটনায় দুই পরিবারের আটজনের নিহতের ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিন কার্যদিবসের মধ্যে তারা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবেন। গতকাল বরিশাল বিভাগের রেঞ্জ ডিআইজি মোহাম্মদ মঞ্জুর মোরশেদ আলম স্যার ঘটনাস্থল পরিদর্শ করেছেন। তিনি নিহতদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে নগদ অর্থ প্রদান এবং পরিবহন সহায়তা করেন।’