চট্টগ্রামে সরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত ১৩টি সংস্থার কাছে ১২৭ কোটি টাকারও বেশি বকেয়া বিদ্যুৎ বিল কিছুতেই আদায় করা যাচ্ছে না। একাধিক নোটিশের পাশাপাশি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেও আদায় হচ্ছে না এই বকেয়া। এদিকে বকেয়া বিল অনাদায়ে জ্বালানি কেনার আর্থিক সংকটে পড়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। তবে বকেয়া পরিশোধের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে দাবি করেছে কোনো কোনো সংস্থা।
চট্টগ্রামের সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত ১৩টি প্রতিষ্ঠানের কাছে প্রতি মাসে ১৬ কোটি ১১ লাখ ৩৩ হাজার টাকার বেশি বিদ্যুৎ বিক্রি করে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু গত ৬ মাসে এসব প্রতিষ্ঠানের কাছে বকেয়া পড়েছে ১২৭ কোটি ৩ লাখ ৯৮ হাজার টাকা।
এসব সংস্থার মধ্যে রয়েছে পুলিশ বাহিনী, সিটি কর্পোরেশন, স্বাস্থ্য বিভাগ, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ, কোস্টগার্ড, গণপূর্ত বিভাগ, সড়ক ও জনপথ কর্তৃপক্ষ এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। একাধিক নোটিশ প্রদান ও ধরনার পর রোববার বিচ্ছিন্নকরণ অভিযানে নামে তারা। ৭ ঘণ্টার জন্য বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয় রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল সদর দপ্তর-সিআরবিতে। তবে এ বিষয়ে রেলওয়ে কার্যালয়ে গেলে কারও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, অনেকে বকেয়া পরিশোধের আশ্বাস দিয়েছে। নিয়মিত বিল না পাওয়ায় জ্বালানি কেনার আর্থিক সংকটসহ নানা সমস্যায় পড়েছে সংস্থাটি।
চট্টগ্রাম বিদ্যুৎ বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী অশোক কুমার চৌধুরী বলেন, ‘দক্ষিণাঞ্চল জোনে প্রায় ১২৭ কোটি টাকার মতো বিল জমা আছে। তাদের নোটিশও আছে। কিন্তু যেহেতু সরকারি সংস্থা সেহেতু ওইভাবে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা যাচ্ছে না। কিন্তু তারা আন্তরিক, এই বাজেটটা পাইলে হয়তো আমাদের টাকাটা দিয়ে দেবে।’
পিডিবির বকেয়া তালিকা অনুযায়ী, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কাছে রয়েছে সবচেয়ে বেশি বকেয়া ৬৩ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। তারা বলছে, বর্তমান মেয়রের আমলেই বকেয়া পড়েছে ২৫ কোটি টাকা, বাদবাকি বকেয়া আগের।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী শেখ মু তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমান মেয়ের দ্বায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে যে বিলগুলো সেগুলো আমরা নিয়মিত দিয়ে আসছি। এগুলো হয়তো দুই দিন, তিন দিন এরকম বকেয়া পড়ে, এগুলা সেরকম কোনো বকেয়া নাই। বকেয়া যেগুলো আছে সেগুলো অনেক আগের।’
চট্টগ্রামের বিভিন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্রে গড়ে প্রতিদিন ২ হাজার ১৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। পিক আওয়ারে বিদ্যুতের চাহিদা ১ হাজার ৪০৭ মেগাওয়াট।