শুক্রবার (২৭ জুন) জনপ্রিয় মাল্টিপ্লেক্স চেইন স্টার সিনেপ্লেক্সে একসঙ্গে মুক্তি পাচ্ছে হলিউডের ৪টি ছবি। আলোচিত হরর ছবি ‘মেগান’র সিক্যুয়েল ‘মেগান ২.০’ এবং ফর্মুলা ওয়ান ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপের উপর ভিত্তি করে নির্মিত ছবি ‘এফ ওয়ান’ আন্তর্জাতিকভাবে আজ মুক্তি পাচ্ছে। অন্যদিকে, জনপ্রিয় অ্যানিমেটেড ছবি ‘হাউ টু ট্রেইন ইওর ড্রাগন’ সিরিজের লাইভ-অ্যাকশন রিমেক ‘হাউ টু ট্রেইন ইওর ড্রাগন’ গত ১৩ জুন মুক্তির পরপরই যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের প্রেক্ষাগৃহে বেশ ভালো সাড়া ফেলেছে। এ বছর মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিগুলোর মধ্যে আয়ের দিক থেকে এ পর্যন্ত সেরা পাঁচ সিনেমার মধ্যে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে এটি।
এ ছাড়া এক দশকের দীর্ঘ অপেক্ষার পর পর্দায় এল ‘ফাইনাল ডেস্টিনেশন’ ফ্র্যাঞ্চাইজির নতুন ছবি ‘ফাইনাল ডেস্টিনেশন ব্লাডলাইনস’। এটিও দর্শক প্রত্যাশা পূরণে সমর্থ হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, বাংলাদেশের দর্শকদের কাছেও ভালো সাড়া পাবে ছবিগুলো।
মেগান ২.০
দুই বছর আগে মুক্তি পাওয়া মেগান ছবিটি যাঁরা দেখেছেন, তাঁরা ভুলে যাওয়ার কথা নয়! দ্য নিউইয়র্ক টাইমস রিপোর্ট করেছিল যে, ইউনিভার্সাল পিকচার্স মেগান-এর বক্স অফিস পারফরম্যান্স দেখে খুশি এবং একটি সিক্যুয়েলের পরিকল্পনা করেছে। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে পরিচালক জেরার্ড জনস্টোন সেই সিক্যুয়েলের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। কয়েক সপ্তাহ পরে ইউনিভার্সাল একটি মুক্তির তারিখ নিশ্চিত করে এবং ছবির নাম দেয় মেগান ২.০। আগের ছবির পরিচালক জেরার্ড জনস্টোন এবারও পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন। অ্যালিসন উইলিয়ামস ও ভায়োলেট ম্যাকগ্রা যথাক্রমে জেমা ও ক্যাডি চরিত্রে তাঁদের ভূমিকা পুনরায় পালন করেন। অ্যামি ডোনাল্ড, জেনা ডেভিস, ব্রায়ান জর্ডান আলভারেজ ও জেন ভ্যান এপসকে পূর্ববর্তী চরিত্রে পুনরায় দেখা যাবে। যেখানে ইভানা সাখনো, টিম শার্প, অ্যারিস্টটল আথারি ও জেমাইন ক্লিমেন্ট মূল চরিত্রে যোগ দেন।
মেগান ২.০ হলো একটি টেকনো-থ্রিলার ধরনের সিনেমা, যেখানে বিজ্ঞান-কল্পকাহিনী, হরর, অ্যাকশন ও সামাজিক উপপাদ্য একসাথে গাঁথা হয়েছে। প্রথম সিনেমার মতো এটি শুধু ভয় বা রোবটের খুনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এখানে এআই-এর নৈতিকতা, নিয়ন্ত্রণ এবং মানব-সম্পর্কে এর প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
এফ ওয়ান
ফর্মুলা ওয়ান ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপের উপর ভিত্তি করে নির্মিত হয়েছে এই ছবি। জোসেফ কোসিনস্কি পরিচালিত এ সিনেমার মাধ্যমে আবারও বিশ্বের চলচ্চিত্রমহলে আলোচনায় আসতে চলেছেন ব্র্যাড পিট। এই সিনেমায় ব্র্যাড পিটের পাশাপাশি অভিনয় করেছেন কেরি কনডন, হাভিয়ের বারডেম ও ক্যালি কুওকোসহ আরও অনেকে।
সনি হেইস একজন অভিজ্ঞ ফর্মুলা ওয়ান রেসার, যিনি ১৯৯০-এর দশকে প্রতিযোগিতা করতেন। কিন্তু মারাত্মক এক দুর্ঘটনার কারণে তাকে বাধ্য হয়ে অবসর নিতে হয়। অবসরের পর তিনি বিভিন্ন ছোট ছোট রেসিং প্রতিযোগিতায় অংশ নেন এবং জীবিকা নির্বাহ করতে শুরু করেন একজন ট্যাক্সি চালক হিসেবে, যা একেবারেই আলাদা এক জীবন। অনেক বছর পর পুরোনো বন্ধু এবং একটি ফর্মুলা ওয়ান দলের মালিক রুবেন তার সাথে যোগাযোগ করে। তারা সনিকে আবারও ফিরে আসার প্রস্তাব দেন। তবে এবার প্রতিযোগী হিসেবে নয়, একজন মেন্টর বা পরামর্শদাতা হিসেবে। তার দায়িত্ব হবে এক তরুণ, প্রতিভাবান রুকি ড্রাইভার জোশুয়া পিয়ার্সকে প্রশিক্ষণ দেওয়া। দ্বিধা থাকলেও, সনি আবার ফিরে আসেন সেই গতিময়, ঝুঁকিপূর্ণ দুনিয়ায় যেখানে নতুন প্রজন্ম, কর্পোরেট চাপ আর নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয় তাকে।
হাউ টু ট্রেইন ইওর ড্রাগন
জনপ্রিয় অ্যানিমেটেড সিনেমার লাইভ-অ্যাকশন রিমেক ‘হাউ টু ট্রেইন ইওর ড্রাগন’। একটি কাল্পনিক দ্বীপে বসবাসকারী ভাইকিংস ও ড্রাগনদের মধ্যে বন্ধুত্বের গল্প নিয়ে নির্মিত এটি। মূল অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্রটি ২০১০ সালে মুক্তি পায় এবং এর সিক্যুয়েলগুলো হলো ‘হাউ টু ট্রেইন ইওর ড্রাগন ২’ (২০১৪) ও ‘হাউ টু ট্রেইন ইওর ড্রাগন: দ্য হিডেন ওয়ার্ল্ড’ (২০১৯)।
এবারের সিনেমার মূল ধারণা হলো হিক্কাপ নামের এক তরুণ ভাইকিং, যে দেখতে সাধারণ কিন্তু উদ্ভাবনী। সে একটি আহত ড্রাগন টুথলেসের সাথে বন্ধুত্ব করে। তারা দুজনেই সমাজের প্রচলিত ধারণার বাইরে গিয়ে একে অপরের সাথে মিলেমিশে থাকতে শেখে। ড্রাগনদের প্রতি ভাইকিংসদের ধারণা সাধারণত ভয় ও ঘৃণা দিয়ে ভরা থাকলেও, হিক্কাপ ও বন্ধুত্ব তাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করে দেয় এবং তারা বুঝতে পারে যে ড্রাগনরা বন্ধু হতে পারে।
ফাইনাল ডেস্টিনেশন ব্লাডলাইনস
প্রায় এক দশকের দীর্ঘ অপেক্ষার পর ‘ফাইনাল ডেস্টিনেশন’ ফ্র্যাঞ্চাইজি ফিরল নতুন ছবি নিয়ে। মৃত্যু যে কী ভয়াবহ এবং কিছু মৃত্যু ন্যায়বিচারের স্বপক্ষে দাঁডায়, তা আগাগোড়াই উঠে এসেছে এই ফ্র্যাঞ্চাইজির পরতে পরতে। এর আগে পাঁচটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে সিরিজটির। পাঁচটি সিনেমার প্রতিটিই একটি ছোট দলকে কেন্দ্র করে আবর্তিত, যারা আসন্ন মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে যায়। যখন তাদের দলের একজন ব্যক্তি আকস্মিকভাবে ঘটনার পূর্বাভাস দেখতে পায় এবং আসন্ন গণমৃত্যু বিষয়ে তাদের সতর্ক করে। ভবিষ্যদ্বাণীকৃত মৃত্যু এড়ানোর পর বেঁচে থাকা ব্যক্তিরা একের পর এক অদ্ভুত দুর্ঘটনায় মারা যেতে থাকে। আবার কখনো কখনো তারা অন্য এক অদৃশ্য সত্তার দ্বারা প্রেরিত লক্ষণগুলো পড়ে মৃত্যু এড়াতেও সক্ষম হয়। ফ্র্যাঞ্চাইজিটি অন্যান্য হরর চলচ্চিত্রের তুলনায় আলাদাভাবে উল্লেখযোগ্য। কারণ এটি অ্যান্টাগনিস্ট হিসেবে গতানুগতিক কোনো ভয়ঙ্কর খুনিকে ব্যবহার করেনি। বরং মৃত্যুগুলো আশেপাশের পরিবেশ ও পরিস্থিতির সূত্র হেরফেরের মাধ্যমে ঘটে।