বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি থেকে মার্চ) চীনের বাজারে অ্যাপলের আইফোন বিক্রি হ্রাস পেয়েছে ৯ শতাংশ। প্রধান স্মার্টফোন ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে চীনের বাজারে কেবলমাত্র অ্যাপলের বিক্রিই কমেছে গত বছরের জানুয়ারি-মার্চ সময়ের তুলনায়। গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইডিসি প্রদত্ত তথ্যের ভিত্তিতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স গতকাল এক প্রতিবেদনে এমনটা জানিয়েছে।
বছরের প্রথম তিন মাসে আইফোনের বিক্রি হ্রাস পেলেও চীনের স্মার্টফোনের বাজারে নিজেদের পঞ্চম স্থান অবশ্য ধরে রাখতে পেরেছে অ্যাপল। জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত সময়ে অ্যাপল ৯ দশমিক ৮ মিলিয়ন ইউনিট আইফোন রপ্তানি হয়েছে চীনে, যেটা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৯ শতাংশ কম। এর ফলে চীনের বাজারে অ্যাপলের শেয়ার এর আগের তিন মাসের (১৭ দশমিক ৪ শতাংশ) তুলনায় জানুয়ারি-মার্চ সময়ে কমে দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ।
অ্যাপলের বিক্রি যেখানে উল্লেখযোগ্যহারে কমেছে সেখানে চীনের শীর্ষ স্মার্টফোন নির্মাতা শাওমি’র বিক্রি প্রথম প্রান্তিকে ৪০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৩ মিলিয়ন ইউনিট। শুধু তাই নয়, চীনের বাজারে সার্বিকভাবে স্মার্টফোনের বিক্রি বিগত ৩ মাসে বেড়েছে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ।
আইফোনের বিক্রি হ্রাস পাওয়া প্রসঙ্গে আইডিসি’র বিশ্লেষক ইউল ওং বলেছেন যে, অ্যাপল পণ্যের উচ্চমূল্যের কারণে তাঁরা জানুয়ারিতে ঘোষিত চীন সরকারের ভর্তুকি সুবিধা কাজে লাগাতে পারেনি। অথচ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠানগুলো এই সুবিধা কাজে লাগিয়ে প্রথম প্রান্তিকে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।
উল্লেখ্য, চীন সরকার স্মার্টফোন ও আরও কিছু কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক্স পণ্যে আকর্ষণীয় ভর্তুকি অফার করছে, যেখানে স্থানীয় মুদ্রায় ৬ হাজার ইউয়ানের (৮২০ ডলার) চেয়ে কম মূল্যের পণ্য কিনলে ক্রেতাকে ১৫ শতাংশ ফেরত দিচ্ছে সরকার। এর ফলে চীনের বাজারে বিগত ৩ মাসে সাশ্রয়ী ও মিডরেঞ্জ স্মার্টফোন ও কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক্স পণ্যের বিক্রি উল্লেখযোগ্যহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে আইফোনের দাম আরও বেশি হওয়ায় সরকারি এই ভর্তুকির সুবিধা নিতে পারেনি আমেরিকান এই প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানটি।
সম্প্রতি ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কনীতি ঘোষণার পর চীন-আমেরিকা শুল্কযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে অ্যাপল। কেননা আইফোন তৈরিতে যেমন তাঁরা চীনের ওপর নির্ভরশীল, ঠিক তেমনি আইফোন বিক্রিতেও চীনের বাজার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অ্যাপলের জন্য। নতুন এই শুল্কযুদ্ধের কারণে আইফোনের দাম তিনগুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে বলেও জানিয়েছেন বাজার বিশ্লেষকদের অনেকে। এই সকল আশঙ্কার প্রভাব পড়েছে অ্যাপলের শেয়ারদরেও। সম্প্রতি তাঁদের বাজারমূল্য ৩ ট্রিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে গেছে।
তথ্যসূত্র: রয়টার্স