কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের ইনিংসের শেষ ওভার সেটি। তার ওপর স্ট্রাইকে আগের ওভারে তিন ছক্কা হাঁকানো আন্দ্রে রাসেল। অনুমিতভাবে শেষ ওভারেও ক্যারীবিয়ান ব্যাটসম্যানের ব্যাটিং ঝড় দেখার আশায় ছিলেন ভিক্টোরিয়ানসের সমর্থকেরা। কিন্তু বাউন্ডারি তো দূরের কথা, রাসেলকে যেন বল বুঝতেই দিলেন না মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।
দুর্দান্ত বোলিংয়ে শেষ ওভারে মাত্র ৭ রান দিয়েছেন ২৭ বছর বয়সী ডানহাতি পেসার। সেখানেও আবার তিনটি ওয়াইড ও একটি ছিল নো বল। সাইফউদ্দিনের ওই ওভারে রাসেল ৫ বল খেলে নিতে পেরেছেন মাত্র ১ রান। বড় সংগ্রহের আশায় থাকা কুমিল্লা আটকে যায় ১৫৪ রানে। ফলে শিরোপা জয়ের পথটাও সহজ হয়ে যায় ফরচুন বরিশালের।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে সাইফউদ্দিনের ওভারটিকে গেম-চেঞ্জার হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন বরিশাল অধিনায়ক তামিম ইকবাল। ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া ওই ওভার নিয়ে মন্তব্য করেছেন সাইফউদ্দিন নিজেও। ম্যাচ শেষে জানিয়েছেন, নিজের ওপর বিশ্বাস ছিল, তাঁর ওভারে বাউন্ডারি মারতে পারবেন না রাসেল।
সাইফউদ্দিন জানিয়েছেন, শেষ ওভারে রাসেলের বিরুদ্ধে বল করার জন্য অধিনায়ক তামিম যখন তাঁকে বেছে নেন, সেটাই তাঁর আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে। জাতীয় দলের পেসারের ভাষ্য, ‘রাসেল আগের ওভারে যখন ছয়গুলো মারল, এরপর (তামিম) আমাকে সাহস দিয়ে বলেছিলেন ‘তুই এটা করতে পারবি।’ যে কারণে আমার আত্মবিশ্বাস ছিল যে, রাসেল আমাকে একটা বাউন্ডারিও মারতে পারবে না।’
পিঠের চোটের কারণে বরিশালের প্রথম ছয় ম্যাচে খেলতে পারেননি সাইফউদ্দিন। এরপর যোগ দিয়ে ফিরেছেন স্বরূপে। টুর্নামেন্টের মাঝপথে যোগ দিয়েও বরিশালের পক্ষে সর্বোচ্চ ১৫টি উইকেট শিকার করেছেন এ পেসার। সেটাও আবার ওভারপ্রতি সাত রানের কম খরচ করে। আবার ব্যাট হাতে ৪ ইনিংসে সুযোগ পেয়ে ১৮৫ স্ট্রাইকরেটে করেছেন ৬৩ রান। বিপিএলে এমন পারফরম্যান্সের পরেও আসন্ন শ্রীলঙ্কা সিরিজের দলে জায়গা হয়নি সাইফউদ্দিনের। তবে এ নিয়ে হতাশা নেই তাঁর।
সাইফউদ্দিন বলেছেন, ‘এ নিয়ে আমার কোনো আফসোস নেই। আল্লাহ যা করেন, ভালোর জন্যই করেন। বিসিবি আমার জন্য যেটা ভালো মনে করেছে, সেটাই করেছে। আমি একটানা অনেকগুলো বড় ম্যাচ খেলেছি। অবশ্যই আমার বিশ্রাম প্রয়োজন।’
শ্রীলঙ্কা সিরিজে ডাক না পাওয়াকে ইতিবাচক হিসেবেই নিচ্ছেন সাইফউদ্দিন। জানালেন, এতে আরও পরিপূর্ণভাবে ফিট হতে পারবেন তিনি, ‘যেহেতু দীর্ঘ বিরতির পরে অনেকগুলো বড় ম্যাচ খেলেছি, আমার শরীরে কিছু ব্যথা আছে। পুরোপুরি ফিট হয়ে, বোলিং ওয়ার্কলোডের জন্য প্রস্তুত হয়ে জাতীয় দলে ফেরাটাই আমার জন্য ভালো হবে।’