অস্ট্রেলিয়া সফরটা ভারত শুধু একটা কারণেই মনে রাখতে পারে – শিক্ষা! প্রথম টেস্টে ঘুরে দাঁড়িয়ে জয়ের পর যে বাকি চার টেস্টে হাঁসফাঁসই করেছেন রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিরা। শেষ পর্যন্ত ভারত হেরেছে ৩-১ ব্যবধানে। সিরিজের মাঝপথেই তো রবিচন্দ্রন অশ্বিন অবসর নিয়েছেন, সিরিজের পর কোহলি-রোহিতদের অবসরের আলোচনাও জোরেশোরে উঠেছে।
তবে কোহলি-রোহিতদের বাজে ফর্ম আর দলের একের পর এক অসহায় হারের মধ্যেও সিরিজে ভারতের হয়ে যদি কেউ লড়ে থাকেন, তিনি যাসপ্রীত বুমরা। বলতে গেলে ভারত সিরিজে যতটুকুই লড়াই করেছে, সেটা বুমরার কারণেই। কিন্তু সিরিজের পঞ্চম ও শেষ টেস্টের চতুর্থ দিনে পিঠের চোটের কারণে পঞ্চম দিনে আর মাঠে নামতে পারেননি সেই টেস্টে অধিনায়ক হিসেবে খেলা বুমরার।
এখন সেই বুমরাকে নিয়েই বড় দুশ্চিন্তায় পড়েছে ভারত। ঠিক কতদিন চোটের কারণে বাইরে থাকতে হতে পারে ৩১ বছর বয়সী পেসারকে, তবে শঙ্কা জেগেছে যে, আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি শুরু হতে যাওয়া চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেও তাঁকে না পেতে পারে ভারত। টুর্নামেন্টের বাকি যখন আর মাত্র ৪১ দিন, শঙ্কাটা ভারতকে না কাঁপিয়ে পারে না!
বুমরার চোট নিয়ে ভারতীয় দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাঁর পিঠের মাংসপেশিতে চিড় ধরা পড়েছে। পেসারদের ক্ষেত্রে খুবই নিয়মিত চোট এটি। এই চোটে ক্যারিয়ারে অনেকবারই ভুগেছেন বুমরা। ভারতের সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া এক প্রতিবেদনে লিখেছে, বুমরার মতোই যাঁরা এই চোটে ভুগেছেন, তেমন ক্রিকেটারদের অনেকে জানিয়েছেন, ‘টিম ম্যানেজমেন্ট যেমনটা বলেছে তেমন ব্যাক স্প্যাজমই যদি হয়ে থাকে’, তাহলে বুমরা হয়তো চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আগেই সেরে উঠবেন।
কিন্তু যদি চোটটা শেষ পর্যন্ত গ্রেড-১ স্ট্রেস ফ্র্যাকচার বলেই ধরা পড়ে, সে ক্ষেত্রে বড় একটা সময়ের জন্যই মাঠের বাইরে থাকতে হবে বুমরাকে। তেমন হলে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে তাঁকে পাওয়া নিয়ে শঙ্কাটা বড় হয়ে দেখা দেবে ভারতের জন্য।
চোটের প্রকারভেদ অনুযায়ী বিভিন্ন রঙ দিয়ে বোঝানো হয়, সেদিকে ইঙ্গিত করে ভারতের সাবেক এক টেস্ট বোলারকে উদ্ধৃত করে টাইমস অব ইন্ডিয়া লিখেছে, ‘পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চূড়ান্তভাবে কোন ধরনের চোট বলে রায় আসে, সেটির ওপরই সবকিছু নির্ভর করবে। ব্যাক স্প্যাজমকে সাধারণত কমলা রঙ দিয়ে দেখানো হয়, যেটা বোঝা আরও খারাপ কিছু হতে পারে তাই দ্রুতই বিরতি নেওয়া দরকার। আগেও একবার পিঠের নিচের দিকের অংশে স্ট্রেস ফ্র্যাকচারে পড়ায়, বুমরা এই অবস্থাটা যথাসময়েই বুঝতে পারার কথা, সে কারণেই হয়তো সিডনিতে (পঞ্চম টেস্টের পঞ্চম দিনে) বিশ্রাম নিয়েছে।’
বুমরা কেমন অনুভূতির কারণে সরে দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন, টাইমস অব ইন্ডিয়ায় নাম প্রকাশ না করা সেই পেসার সেটারও একটা ধারণা দিয়েছেন, ‘খুব সম্ভবত ও পিঠের ওপরের অংশে একটু টান অনুভব করেছে। ওর সার্জনের কাছে টেস্টের রিপোর্টগুলো চলে গেছে, দ্রুতই চূড়ান্তভাবে সবকিছু জানা যাবে। আমার ধারণা ওকে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির প্রাথমিক দলে রাখা হবে। চোটের কারণে বদলাতে হলে সেটা তো পরে করাই যাবে।’
ভারতের সাবেক ট্রেইনার রামজি শ্রীনিভাসানও এ নিয়ে বলেছেন, ‘আমিও মনে করি যদি শুধু স্প্যাজম হয়ে থাকে, তাহলে ও (চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আগে) ফিট হয়ে যাবে। এমনকি (অস্ট্রেলিয়া থেকে) দেশে ফেরার বিমানে ওঠার আগেই ওর ঠিকঠাক লাগতে শুরু করার কথা। তবে আমি নিশ্চিত নই। এই চোটটা হয় (শরীরের ওপর পড়া) চাপের কারণে, যেটা অনেক বেশি ক্রিকেট খেলার কারণে হতে পারে। যদি এটা গ্রেড ১ থেকে গ্রেড ৩ জাতীয় কোনো স্ট্রেস ফ্র্যাকচার হয়ে থাকে, তাহলে ওর সেরে উঠতে ১ থেকে ৬ মাস লেগে যেতে পারে।’