চ্যাম্পিয়নস ট্রফি নিয়ে পাকিস্তান ক্রিকেটে আলোচনা যেন থামার নামই নিচ্ছে না। একে তো বাজে পারফরম্যান্সের কারণে গ্রুপ পর্বেই বিদায়, এরপর ফাইনাল ম্যাচ আয়োজনের স্বপ্নটাও ভারত ধূলিসাৎ করে দেয়। সব মিলিয়ে পাকিস্তান ক্রিকেট নিয়ে যখন সমালোচনা চলছে, তখন আরেকটি ধাক্কা খেল দেশটির ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)।
চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আয়োজক পাকিস্তান হলেও নিজেদের মাটিতে কেবল একটি মাত্র ম্যাচই (নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে) খেলতে পেরেছে দলটি। গ্রুপ পর্বে বাদ পড়া পাকিস্তান গ্রুপে বাকি দুই ম্যাচের মধ্যে ভারতের সঙ্গে ম্যাচটি দুবাইয়ে গিয়ে খেলতে বাধ্য হয়েছে, আর বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচটি পণ্ড হয়েছে বৃষ্টিতে।
২৯ বছর পর নিজ মাটিতে আইসিসির কোনো টুর্নামেন্ট আয়োজন করে নিজ দেশে ম্যাচ খেলার তৃপ্তি পাকিস্তান পেল মাত্র এক দিন। সেই ম্যাচে আবার হারের জ্বালাও জুটেছে। এর সঙ্গে জ্বলুনি বাড়াতে আজ সামনে এসেছে টুর্নামেন্ট আয়োজন করে পাকিস্তানের লাভ-লসের হিসাব। টুর্নামেন্টটা আয়োজন করে পিসিবির ১০৩৩ কোটি টাকারও বেশি ক্ষতি গুনতে হচ্ছে বলে জানিয়েছে ভারতের গণমাধ্যম টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়া।
ভারতীয় এই গণমাধ্যম তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আয়োজন করার মাধ্যমে ৮৫ মিলিয়ন ডলার গচ্চা দিয়েছে। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১০৩৩ কোটি টাকারও বেশি।
আইসিসির এই টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে গিয়ে ১৮০০ কোটি পাকিস্তানি রুপি স্টেডিয়াম নির্মাণের ক্ষেত্রে খরচ করেছে পিসিবি। এত অর্থ খরচের পর পাকিস্তান গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হেরে বসে, এরপর দুবাইয়ে ভারতের বিপক্ষে হারে তো টুর্নামেন্ট থেকেই বিদায় নিশ্চিত হয়ে যায়। রাওয়ালপিন্ডিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে জয় দিয়ে টুর্নামেন্ট শেষ করতে চাওয়া পাকিস্তান শেষ ম্যাচটিতে বৃষ্টির কারণে নামতেই পারেনি।
মোহাম্মদ রিজওয়ানের দলের এমন ভরাডুবির পর পিসিবি টুর্নামেন্ট থেকে প্রাপ্তির হিসেব কষতে গিয়ে দেখল, তাদের আর্থিক অবস্থা দলের পারফরম্যান্সের চেয়েও খারাপ। স্টেডিয়ামের পেছনে ১৮০০ কোটি পাকিস্তানি রূপি খরচের পর টুর্নামেন্টের প্রস্তুতি বাবদ আরও ৪ কোটি ডলার খরচ করেছে পিসিবি। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪৮৬ কোটি টাকা।
টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়া তাদের প্রতিবেদনে আরও জানিয়েছে, পাকিস্তান আয়োজক দেশ হিসেবে আইসিসি থেকে হোস্টিং ফি বাবদ মাত্র ৬০ লাখ ডলার পেয়েছে। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৭৩ কোটি টাকা। এছাড়াও টিকিট বিক্রি ও স্পনসর থেকে কিছু আয় হয়েছে পিসিবির, তবে সেটা তাদের খরচের তুলনায় খুবই নগণ্য।
এমন আর্থিক ক্ষতির পর পিসিবি ম্যানেজমেন্ট তাদের ঘরোয়া ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ন্যাশনাল টি-টোয়েন্টি কাপে খেলোয়াড়দের বেতন প্রায় ৯০ শতাংশ কমিয়ে এনেছিল। কিন্তু পরে সমালোচনার মুখে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে।