ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সহ-মালিক জিম র্যাটক্লিফের শখের প্রকল্প নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ইউনাইটেডের থিয়েটার অব ড্রিমসকে বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ স্টেডিয়াম বানানোর জন্য জনগণের অর্থ ব্যবহার করার ইচ্ছা নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ১২৫ কোটি পাউন্ডের বিনিময়ে ইউনাইটেডের ২৫% মালিকানা বুঝে নিয়েছেন র্যাটক্লিফ। এর তিন বছর আগেই ১২ শ কোটি পাউন্ডের মালিক যুক্তরাজ্য ছেড়ে মোনাকোর নাগরিকত্ব নিয়েছেন শুধু কর ফাঁকি দেওয়ার উদ্দেশ্যে। আর এখন তিনি চাইছেন ইউনাইটেডের স্টেডিয়াম পুনর্গঠনের জন্য নির্ধারিত ২০০ কোটি পাউন্ড (৩১ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা) বাজেটের বড় অংশ পাবলিক ফান্ড থেকে নিতে চাইছেন তিনি।
তাঁর এমন প্রস্তাবে বেশ কয়েকজন মন্ত্রী বেশ আগ্রহ দেখাচ্ছেন। র্যাটক্লিফ দাবি করছেন, ইউনাইটেডের স্টেডিয়াম পুনর্গঠন প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ২০৩৯ সালের মধ্যে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে ৭৩০ কোটি পাউন্ড এনে দেবে। কিন্তু ইউনাইটেডের স্টেডিয়াম পুনর্গঠনের খরচের বড় একটা অংশ ক্লাব নয়, জনগণের তহবিল থেকে নেওয়ার পরিকল্পনা র্যাটক্লিফের।
লেবার এমপি গ্রাহাম স্ট্রিংগার গত সপ্তাহে এক কলামে প্রকল্পটিকে, ‘কর পলাতকের কাঁচা, অপরিণামদর্শী প্রকল্প’ ডেকেছেন। অবজারভারের সঙ্গে কথোপকথনে এই ইউনাইটেড সমর্থক বলেছেন, ‘পাবলিক ফান্ড ছাড়া এই স্টেডিয়াম হবে না। স্থানীয় বা কেন্দ্রীয় সরকারের কোনো অর্থই এখানে বিনিয়োগ প্রতিহত করতে হবে।’
পেট্রোকেমিক্যাল কোম্পানি ইনিওসের প্রধান র্যাটক্লিফ এরই মধ্যে মৌসুমের টিকিটের দাম বৃদ্ধি, কর্মীদের সুবিধা কমানো, খাবার বন্ধ ও স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের সুবিধা কমিয়ে সমর্থকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।
২০১৯ সালে খবর পাওয়া যায় ৪০০ কোটি পাউন্ড করের হাত থেকে বাঁচতে মোনাকোতে থিতু হতে যাচ্ছেন র্যাটক্লিফ। এবং পরের বছরেই সেটা বাস্তবায়ন করেন। আর ইউনাইটেডের দায়িত্ব পেয়ে এখন পর্যন্ত ৪৫০ জনকে ছাঁটাই করেছেন, কর্মীদের ক্যান্টিন বন্ধ করেছেন। সবদিক থেকে এত নিয়ন্ত্রণে মাঠের পারফরম্যান্সে দিন দিন অবনতি হচ্ছে ইউনাইটেডের। লিগে ১৩তম অবস্থানে রেড ডেভিলরা।
এরই মধ্যে ওল্ড ট্রাফোর্ডের আসন বাড়িয়ে এক লাখ করে স্টেডিয়াম পুনঃনির্মাণের ঘোষণা দিয়েছেন র্যাটক্লিফ। তাঁর দাবি, ২০০ কোটি পাউন্ডের এই প্রকল্প আইফেল টাওয়ারের মতো হবে- দর্শনার্থীদের ভিড় লেগে যাবে। দাবি করা হচ্ছে, প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে প্রতি বছর যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে ৭৩০ কোটি পাউন্ড যুক্ত হবে। কিন্তু এর মধ্যে শুধু স্টেডিয়াম থেকে আয় হবে ২৪ কোটি পাউন্ডের একটু বেশি।
স্যালফোর্ড ইউনিভার্সিটির ফাইন্যান্স ও ইকোনোমিক্স বিভাগের প্রধান টনি সাইম জানিয়েছেন, ‘আআর্থিক প্রভাবের বড় অংশ বাকি পুনর্নির্মাণ থেকে আসবে, স্টেডিয়াম থেকে না।’ তিনি জানিয়েছেন, এই প্রকল্পের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ পাবলিক ফান্ড থেকেই করা হবে।
বৃহত্তর ম্যানচেস্টারের মেয়র অ্যান্ডি বার্নহাম ও ওল্ড ট্রাফোর্ড পুনঃগঠন প্রকল্পের প্রধান সেবাস্তিয়ান কোর পছন্দ হয়েছে র্যাটক্লিফের প্রকল্প। বার্নহাম জোর দিয়ে বলছেন, স্টেডিয়াম বানাতে কোনো পাবলিক ফান্ড ব্যবহার করা হবে না।