বড় আশা নিয়ে গত জুনে ইউভেন্তুস তাঁকে নিয়োগ দিয়েছিল কোচ হিসেবে। আগের মৌসুমে বোলোনিয়াকে নিয়ে ইতালিয়ান লিগে চমক দেখিয়েছিলেন, তাঁর খেলানোর ধরনে পেপ গার্দিওলার সঙ্গেও মিল খুঁজে পেয়েছিলেন অনেকে। ইউভেন্তুস তাই তিন বছরের চুক্তিতে গত জুনে থিয়াগো মোত্তাকে নিয়োগ দিয়ে আশায় ছিল, বুঝি সুন্দর ফুটবলে অনেক কিছুই জিতবে তারা।
কিন্তু সে আশার গুড়ে বালি পড়তে সময় বেশি লাগেনি। লিগে তো অক্টোবরের পর থেকে মাঝে শুধু চার সপ্তাহ বাদে কখনো সেরা চারের মধ্যে থাকতে পারেনি ইউভেন্তুস, গত দুই মাসে একে একে চ্যাম্পিয়নস লিগ, কোপা ইতালিয়া থেকেও বাদ পড়েছে। এর মধ্যে লিগে সর্বশেষ দুই ম্যাচে বড় হারের পর ধৈর্যচ্যুতি হয়েছে ইউভেন্তুসের। আজ মোত্তাকে ছাঁটাই করেছে তারা। নতুন কোচ হিসেবে ইগর তুদরকে নিয়োগ দিয়েছে ইতালিয়ান ক্লাবটি।
লিগে গত জানুয়ারির শুরুর দিক পর্যন্ত অপরাজিত ছিল বটে ইউভেন্তুস, ২১তম ম্যাচে এসে প্রথম হার দেখেছে। তবে অপরাজিত থাকা বলতে যেমন দাপুটে অবস্থান বোঝায়, ইউভেন্তুসের তা ছিল না। ওই ২১ ম্যাচের মধ্যে ১৩টিতেই ড্র করেছে তারা! ফলে যা হওয়ার তা-ই হয়েছে, অক্টোবর পর্যন্ত লিগে সেরা চারের মধ্যে থাকলেও এরপর থেকে ৫-৬ নম্বরেই ঘোরাফেরা করেছে। মাঝে ফেব্রুয়ারিতে টানা পাঁচ ম্যাচে জেতায় তবু চার সপ্তাহ সেরা চারে ছিল, এই যা!
অন্য টুর্নামেন্টেও একই অবস্থা! গত মাসে কোপা ইতালিয়ায় এম্পোলির কাছে হেরে কোয়ার্টার ফাইনালেই শেষ হয়েছে ইউভেন্তুসের পথচলা। আর চ্যাম্পিয়নস লিগে তো আরও বেশি ধুঁকেছে। গ্রুপ পর্বে ৮ ম্যাচে ৩ জয়, ২ হার আর ৩ ড্র নিয়ে পয়েন্ট তালিকায় হয়েছে ২০তম, ফলে তাদের খেলতে হয়েছে শেষ ষোলোর প্লে-অফে। সেখানে পিএসভি আইন্দহফেনের কাছে দুই লেগ মিলিয়ে ৪-৩ গোলে হেরে বাদ পড়েছে।
এত কিছুর পরও ফেব্রুয়ারিতে লিগে টানা পাঁচ ম্যাচ জয়ের পর মনে হয়েছিল, বুঝি অবশেষে ঘুরে দাঁড়িয়েছে মোত্তার ইউভেন্তুস। লিগে সেরা চারে থাকতে পারলে হয়তো চাকরিটা বেঁচে যেত তাঁর। কিন্তু সর্বশেষ দুই ম্যাচে আতালান্তার কাছে ঘরের মাঠে ৪-০ গোলে হারের পর ফিওরেন্তিনার মাঠে ৩-০ গোলে হারে ইউভেন্তুসের কর্তাদের মোত্তাকে নিয়ে মোহ যেন গোত্তা খাওয়া ঘুড়ির মতো মাটিতে মিশে গেছে।
এই মুহূর্তে লিগে ২৯ ম্যাচ শেষে শীর্ষে থাকা ইন্তের মিলানের (৬৪ পয়েন্ট) চেয়ে ১৭ পয়েন্ট পিছিয়ে পাঁচ নম্বরে ইউভেন্তুস, চারে মোত্তার সাবেক দল বোলোনিয়ার পয়েন্ট ৫৩। এই অবস্থায় এসে ইউভেন্তুসের মনে হয়েছে, মোত্তা আর নয়।