ফেনীর আলোচিত উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা একরামুল হক হত্যাকাণ্ডের ১১ বছর পেরিয়ে গেলেও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৩৯ আসামির ১৬ জন এখনো গ্রেপ্তার হননি। এর মধ্যে ৮ জন জামিনে মুক্ত হয়ে ও ৮ জন হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই পলাতক। মামলার রায় ঘোষণার ৭ বছর পেরিয়ে গেলেও সাজা কার্যকর না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছে একারমের পরিবার।
রাষ্ট্রপক্ষ সূত্র জানা গেছে, কারাগারে থাকা মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ২৩ আসামির মধ্যে একজন মারা গেছেন। অন্য ২২ আসামির আপিল শুনানি বর্তমানে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও নাসরিন আক্তার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে নিষ্পত্তির জন্য কার্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত আছে। শিগগিরই আপিলের শুনানি হবে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা গ্রেপ্তার না হওয়া এবং হাইকোর্টে ৭ বছর ধরে আপিল শুনানি নিষ্পত্তি না হওয়ায় হতাশা ও ক্ষোভ জানিয়েছেন মামলার বাদী ও একরামের বড় ভাই জসীমউদ্দীন। তিনি বলেন, ‘সাজাপ্রাপ্তদের ফাঁসিতো হলোই না। পলাতকরা অনেকে বিদেশে আছে এবং ধরাছোঁয়ার বাইরে খুনের নির্দেশদাতারা। আসামিদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করতে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’
পুলিশ বলছে, দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে পলাতকদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। তবে পলাতক আসামিদের মধ্যে অন্তত ১৩ জনের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকলেও এ তথ্য অবগত নয় বলে জানান ফেনী মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) ইকবাল হোসেন। তিনি বলেন, ‘ঘটনাটি অনেকদিন আগের। যোগদানের পর এ বিষয়ে এখনো আমি অবগত না।’
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২০ মে ফেনী শহরের একাডেমী এলাকায় রাজনৈতিক বিরোধের জেরে ফুলগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান একরামুল হককে প্রকাশ্য গুলি করার পর গাড়িতে আগুন দিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ৫৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। ২০১৮ সালের ১৩ মার্চ মামলার রায়ে ৩৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এর মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির আদেল, তৎকালীন ফেনী পৌর কাউন্সিলর আব্দুল্লাহিল মাহমুদ শিবলীসহ ২২ আসামি কারাগারে রয়েছেন।