বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনকে জাপান জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভর করে তুলছে বলে অভিযোগ করেছে পরিবেশবাদী বিভিন্ন সংগঠন। তাদের দাবি, দেশটির উৎপাদন কেন্দ্রে ব্যবহার হচ্ছে কয়লা, তেল ও গ্যাস। এই নির্ভরতায় পরিবেশ, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে।
মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর শ্যামলী পার্কে ২২টি পরিবেশবাদী সংগঠন এ দাবি জানায়। তাদের দাবি, ভবিষ্যৎ পরিবেশ ঠিক রাখতে জাপানের সব বিদ্যুৎ প্রকল্প নবায়নযোগ্য জ্বালানীতে রূপান্তর করতে হবে।
পরিবেশ ধ্বংস করে হচ্ছে উন্নয়ন। সাথে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের ঝুঁকির কথা জানাতে জমায়েত হয় পরিবেশ কর্মীদের একাংশ। তাদের দাবি, দেশে বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে কয়লা, গ্যাস ও তেল নির্ভরতা বাড়ছে। যা দেশের পরিবেশকে সংকটের মুখে ফেলছে।
এ সময় একটি পাপেট শোতে মনুষ্যসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনে পরিবেশগত সংকটের বার্তা দেওয়া হয়।
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া একজন বলেন, ‘অতীত সরকার যদি ভুল করেও থাকে, বর্তমান সরকার এখন পর্যন্ত কেন সেসব পরিকল্পনা পরিবর্তন করেনি? আমাদের বর্তমান সরকারে যারা আছেন তাদেরকে অনুরোধ করব তারা যেন দ্রুত এ ধরনের প্রকল্পগুলো বন্ধের জন্য আইনগত ব্যবস্থা নেয়।’
দেশের জ্বালানি খাতে জাপানের বিনিয়োগ প্রায় ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই বিনিয়োগ মূলত মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণে। পরিবেশ গবেষকরা বলছেন, জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভরতা পরিবেশ, অর্থনীতি ও স্বাস্থ্য নিরাপত্তায় ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে।
ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিল বলেন, ‘প্রায় ৪০টির মতো নতুন এলএনজি প্ল্যান্ট এবং টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা আমাদের বাংলাদেশের জ্বালানি নীতিতে সন্নিবেশ করেছে জাপান। এই এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ ও এলএনজি বিস্তারের পরিকল্পনা বাংলাদেশের প্রাণ প্রকৃতি নষ্ট করে, আমরা করতে দিতে পারি না।’
ক্যাপসের সভাপতি ড. কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ‘জীবাশ্ম জ্বালানির ইনভেস্টমেন্ট বাংলাদেশে হচ্ছে এটি না আমাদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা দিচ্ছে, না জ্বালানি নিরাপত্তা দিচ্ছে, না স্বাস্থ্য নিরাপত্তা দিচ্ছে। চিকিৎসার পেছনে খরচ করতে হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। যে ইনভেস্টের নাম দিয়ে তারা (জাপান) বন্ধু হয়ে আমাদের দেশে আসছে, আমাদের স্বাস্থ্য খাতে আরও বেশি খরচ করতে হচ্ছে।’
জ্বালানি খাতে আরও এক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে জাপান। তাই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য পরিবেশবান্ধব জ্বালানি নীতি গঠনের দাবি জানায় পরিবেশ কর্মীরা।