এক সময়ের জনপ্রিয় তারকা দম্পতি তাহসান খান ও রাফিয়াত রশিদ মিথিলা। ২০০৬ সালে প্রেমের সম্পর্কের পরিণতি হিসেবে বিয়ে করেছিলেন তারা। এরপর দীর্ঘ ১১ বছরের সংসার জীবনের ইতি ঘটে ২০১৭ সালে। তাদের একমাত্র কন্যা আয়রা তেহরীম খান। বিচ্ছেদের পর থেকে দু’জনেই আলাদা জীবনযাপন করছেন, তবে মেয়ের অভিভাবকত্বে রয়েছে সমঝোতা।
সম্প্রতি একটি পডকাস্টে অতিথি হয়ে হাজির হয়েছিলেন মিথিলা। সেখানেই তাহসানের সঙ্গে বিচ্ছেদ, মেয়ের অভিভাবকত্ব এবং একক মাতৃত্ব নিয়ে অকপটভাবে কথা বলেন তিনি।
পডকাস্টে নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে গিয়ে মিথিলা বলেন, ‘বিচ্ছেদ তো সহজ না। খুবই কঠিন। আমি তখন অনেক ছোট, সদ্য মা হয়েছি। এমন একটা সময়ে জীবনের বড় সিদ্ধান্ত নিতে মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলাম না। আমি খুব ছোট ছিলাম। সদ্য মায়ের ভূমিকা নিয়েছি। আমার বিচার-বিবেচনা করার মতো অবস্থা ছিল না। সেই সময়ে আমি খুব কনফিউজড ছিলাম।’
তিনি আরও বলেন, ‘২০১৫ সালে আমরা সেপারেশনে গেছি, তারপর আরও দুই বছর গেছে। আমি অপেক্ষা করেছি, ভেবেছি যে এটা ঠিক হয়ে যাবে, ঠিক হয়ে যাবে। ২০১৭ সালে এসে সিদ্ধান্ত নিতে পারলাম যে মনে হয় সম্পর্কটা আসলেই কাজ করবে না। আমি ছিলাম তখন অনেক অল্প বয়সী এবং মা হিসেবেও তরুণী। আমি যে কোনো একটা ভালো–মন্দ বিচার করব বা কোনো একটা সিদ্ধান্তে আসব, সেটার শক্তিই আমার ছিল না। কারণ, আমার একটা ছোট বাচ্চা। আমার মানসিক অবস্থা ভালো ছিল না, যেখানে আমি কোনো একটা সিদ্ধান্ত নিতে পারব নিজের জীবনের।’
তাদের বিচ্ছেদ কেবল পারিবারিক ঘটনা হয়ে থাকেনি, বরং সামাজিকভাবে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছিল। মিথিলার ভাষায়, ‘মানুষ যা দেখেছে, তা বাস্তব ছিল না। তারা আমাদের কল্পনার একটা দম্পতি হিসেবে দেখেছে। বাস্তব জীবন ছিল একেবারেই আলাদা।’
বিচ্ছেদের আগে প্রায় দুই বছর সময় নিয়ে তারা সম্পর্কটা টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছিলেন বলে জানান মিথিলা। তবে সেই চেষ্টা শেষ পর্যন্ত সফল হয়নি। তিনি বলেন, ‘সব সম্পর্ক শেষ হওয়ার পেছনে একটা না, অনেকগুলো কারণ থাকে। আমি কারো প্রতি ক্ষোভ পুষে রাখি না। আমি পেছনে তাকিয়ে থাকি না।’
বিচ্ছেদের সময় মিথিলা আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী ছিলেন না, যা পরিস্থিতিকে আরও কঠিন করে তুলেছিল। এখন তিনি মনে করেন, প্রতিটি মেয়েরই উচিত আর্থিকভাবে স্বাধীন হওয়া, যেন জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো নিতে পারে।
সন্তানকে কেন্দ্র করে কোনো বিভেদ তৈরি হয়নি বলেই জানান মিথিলা। বরং তারা ‘কো-প্যারেন্টিং’-এর মাধ্যমে মেয়েকে বড় করছেন। ‘আয়রার বাবার সঙ্গে তার খুব ভালো সম্পর্ক। সে তার বাবাকে প্রচণ্ড ভালোবাসে। আমরাও তার জন্য একসঙ্গে উপস্থিত থাকার চেষ্টা করি’, বলেন মিথিলা।