করোনাকালীন সময়ে মানুষের মধ্যে রিমোট ওয়ার্কিংয়ের ধারণা বিস্তার লাভ করে। এ ধরনের কাজের সুবিধা হলো, কর্মীরা যেকোনো সময় এবং যেকোনো জায়গায় বসে কাজ সেরে ফেলতে পারেন।
এখন আবার জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে হাইব্রিড ওয়ার্কিং মডেল। এ পদ্ধতিতে কর্মীরা নির্দিষ্ট সংখ্যক দিনে অফিসে যাবেন এবং বাকি দিনগুলোতে বাসা থেকে কাজ করার সুযোগ পাবেন। ফলে মোটামুটি সবাই পালা করে অফিসে আসা যাওয়া করবেন। নিয়মটা এমন যে, এক দল যদি সোমবার এবং বুধবার অফিসে যায়, অন্যরা তাহলে যাবেন মঙ্গলবার এবং বৃহস্পতিবার।
এই প্রসঙ্গে চলে আসে হট-ডেস্কিংয়ের কথাও। এটি এমন একটি ফ্লেক্সিবল (নমনীয়) পদ্ধতি যেখানে কর্মীদের কাজের জন্য নির্দিষ্ট কোনো ডেস্ক থাকে না। একটিই ডেস্ক একাধিক সহকর্মীর সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে হয়। অনেকটা আগে আসলে আগে পাবেন ভিত্তিতে!
কিন্তু এতে সমস্যা কী! আসলে নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, রিমোট ওয়ার্ক এবং হট-ডেস্কিংয়ের ক্রমশ বৃদ্ধিমান সোশ্যাল ওয়ার্কার বা সমাজকর্মীদের জন্য নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।
যুক্তরাজ্যের বার্নমাউথ ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক গবেষণাটি করেছেন, যা ব্রিটিশ জার্নাল অব সোশ্যাল ওয়ার্কে ছাপা হয়েছে।
এ গবেষণার মূল লেখক ড. অ্যান্ডি পুলম্যান বলেন, ‘বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর মতো রিমোট ওয়ার্কিং এবং হটডেস্কিংয়ের প্রবণতা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মধ্যেও বেড়ে গেছে। কোভিডের সময় অনেক লোকাল অফিস বন্ধ হয়ে গেছে, আর বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে অনেক কর্মীই তাল মেলাতে পারছেন না।’
ঘরে বসে কাজ করতে পারায় বহু কর্মী উপকৃত হওয়ার কথা জানালেও অনেকেই একাকীত্ব, সহকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগে অসুবিধা এবং দলীয় সংস্কৃতির অনুপস্থিতির কথা জানিয়েছেন যা ধীরে ধীরে তাদের কাজের চাপ আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
নতুন যোগ দেওয়া কর্মীদের অসুবিধার কথাও তুলে ধরেছেন এই গবেষক। কর্মপরিবেশ বুঝতে না পারা এবং যথাযথ দিকনির্দেশনার অভাবে তাদের অবস্থা কতটা নাজেকাল হয় সে ব্যাপারে নিজের মত তুলে ধরেছেন ড. পুলম্যান।
কর্মীদের পাশাপাশি অফিসের ব্যবস্থাপকেরাও রিমোট ওয়ার্কিংয়ের ফলে ভুগছেনঅ অনলাইনে তাদের পক্ষে যথাযথ তত্ত্বাবধান করা কঠিন হয়ে উঠছে।
তাই বলে হাইব্রিড ওয়ার্কিংকে একেবারে বাদ দেওয়াটাও উচিত হবে না। সুস্পষ্ট পরিকল্পনা এবং সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে ঢাকার মতো জনবহুল শহরে হাইব্রিড ওয়ার্কিংয়ের ধারণা অত্যন্ত ফলপ্রসূ হতে পারে। এতে একদিকে কর্মীর খরচ সাশ্রয় হবে, আবার যানজট কমবে।