বয়স ধরে রাখার ক্ষেত্রে বোটোক্স দীর্ঘদিন ধরেই বেশ জনপ্রিয়। এটি ত্বকের বলিরেখা ও সূক্ষ্ম রেখাগুলো হ্রাস করতে এবং আত্মবিশ্বাস বাড়াতে দ্রুত কার্যকর সমাধান হিসেবে কাজ করে। যারা অ্যান্টি-এজিং সমাধানের প্রতি আসক্ত, তাদের জন্য এটি যেন এক ম্যাজিকাল টাচ।
তবে, মাইক্রোডোজিং বোটোক্স বা বেবি বোটোক্স আসার ফলে এই চিকিৎসায় নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। এটি আরও সূক্ষ্ম এবং স্বাভাবিক একটি উপায় কাজ করে। অনেকে তাই চিন্তায় পড়েন—তাহলে কোনটি বেছে নেবেন? এ বিষয়ে খ্যাতিমান কসমেটোলজিস্ট ডা. মনিকা কাপুর টাইমস নাউ নিউজে সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন।
পুরনো কিন্তু কার্যকর পদ্ধতি: ট্র্যাডিশনাল বোটোক্স
এই পদ্ধতিটি মুখের গভীর বলিরেখাগুলো কমানোর জন্য ব্যবহৃত হয়। ডা. কাপুর বলেন, ‘এতে তুলনামূলক বেশি মাত্রায় বোটুলিনাম টক্সিন ইনজেক্ট করা হয়। যা মুখের পেশীর চলাচল কমিয়ে দেয়। ফলে বলিরেখা কমে যায়।’
কপালের ভাঁজ, চোখের কোণের রেখা (ক্রো’স ফিট) এবং ভ্রুর মাঝখানের বলিরেখাগুলো মুখের সৌন্দর্য নষ্ট করে। ট্র্যাডিশনাল বোটোক্স এই ত্বককে মসৃণ করে। যা ৩-৬ মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয়। এটি বিশেষ করে তাদের জন্য, যারা ত্বকের গভীর থেকে বলিরেখা দূর করতে চান। সেই সাথে যারা দীর্ঘস্থায়ী সমাধান খুঁজছেন।
বেবি বোটোক্স আসলে কী?
মাইক্রোডোজিং বোটোক্স হলো এই ট্রিটমেন্টর আধুনিক সংস্করণ। ডা. কাপুরের ভাষায়, ‘এটি মুখের নির্দিষ্ট অংশে ছোট মাত্রায় ইনজেক্ট করা হয়, যা বলিরেখা সম্পূর্ণভাবে দূর না করে। বরং নরম করে এবং মুখের স্বাভাবিক অভিব্যক্তি বজায় রাখে। ফলে এটি একধরনের সতেজতা এনে দেয়। ত্বককে উজ্জ্বল দেখায় এবং মুখকে ওভারডোন বা কৃত্রিম দেখায় না।’
তিনি আরও বলেন, ‘মাইক্রোডোজিং বোটোক্স মূলত ২০ বা ৩০-এর কোঠায় থাকা তরুণদের জন্য বেশি কার্যকর। যারা এখনও তেমন বলিরেখার সম্মুখীন হননি। তবে ভবিষ্যতে বলিরেখা তৈরি হওয়ার প্রবণতা দূর করতে চান। তাদের জন্য এই পদ্ধতি আদর্শ।
এছাড়া যারা খুব সূক্ষ্ম পরিবর্তন চান। অথবা চেহারায় বড় পরিবর্তন না এনে তারুণ্য ধরে রাখতে চান। তাদের জন্য এটি একটি চমৎকার বিকল্প। যারা প্রথমবারের মতো বোটোক্স ব্যবহার করতে চান। তাদের জন্যও এটি নিরাপদ এবং ঝুঁকিমুক্ত উপায়।
দুই পদ্ধতির পার্থক্য
ডা. কাপুর ব্যাখ্যা করেন, যদিও ট্র্যাডিশনাল বোটোক্স এবং মাইক্রোডোজিং বোটোক্সের লক্ষ্য এক। অর্থাৎ সৌন্দর্য বৃদ্ধি। তবে দুটির মধ্যে মূল পার্থক্য হলো পদ্ধতি, স্থায়িত্ব এবং খরচ।
- ট্র্যাডিশনাল বোটোক্স: এটি তুলনামূলক বেশি কার্যকর। দীর্ঘস্থায়ী (৩-৬ মাস), তবে এটি কখনও কখনও মুখের স্বাভাবিক গড়নকে পরিবর্তন করতে পারে। যা কিছু মানুষের কাছে অস্বস্তিকর হতে পারে।
- মাইক্রোডোজিং বোটোক্স: এটি মুখের স্বাভাবিক ভাব বজায় রাখে। আর খুব সূক্ষ্মভাবে বলিরেখা কমায়। তবে এর
কম, ২-৩ মাস। ফলে নিয়মিত টাচ-আপ দরকার হয়, যা বেশি ব্যয়বহুল হতে পারে।
আপনার জন্য কোনটি সঠিক?
আপনার চাহিদা ও অগ্রাধিকার অনুযায়ী সঠিক বেছে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
- যদি আপনি গভীর বলিরেখা কমাতে চান। একটি চোখে পড়ার মতো পরিবর্তন চান। তাহলে ট্র্যাডিশনাল বোটোক্স ভালো হবে।
- যদি আপনি কেবল বলিরেখা প্রতিরোধ করতে চান। খুব স্বাভাবিকভাবে তারুণ্য ধরে রাখতে চান। তাহলে মাইক্রোডোজিং বোটোক্স আপনার জন্য উপযুক্ত।
সঠিক সিদ্ধান্ত নিন
যে পদ্ধতিই বেছে নিন না কেন, অভিজ্ঞ এবং যোগ্য একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। ত্বকের ধরন, মুখের গঠন এবং ব্যক্তিগত লক্ষ্য অনুযায়ী একজন বিশেষজ্ঞ আপনাকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, যথাযথ পরবর্তী যত্ন নিলে চিকিৎসার কার্যকারিতা আরও বৃদ্ধি পাবে। সেই সঙ্গে এড়ানো সম্ভব হবে।
আপনার সৌন্দর্যের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত নিন। আর নিজের আত্মবিশ্বাসকে আরও উজ্জ্বল করে।