বলিউডের অন্যতম ফ্যাশন আইকন দীপিকা পাড়ুকোন। ত্বকচর্চার ক্ষেত্রে তিনি সবসময় সহজতা এবং ধারাবাহিকতা বজায় রাখার উপর জোর দেন। হাইড্রেশন, ক্লিনজিং, ময়েশ্চারাইজিং এবং সান প্রোটেকশন, এই চারটি ধাপই তার উজ্জ্বল ত্বকের রহস্য।
দীপিকার ত্বক কীভাবে সবসময় এত উজ্জ্বল?
‘ইয়ে জাওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি’-এর নাইনা ‘তালওয়ার’ কিংবা ‘ককটেল’-এর ভেরোনিকার চরিত্রে মন জয় করার পাশাপাশি দীপিকা লাল গালিচায়ও চমক ছড়ান। তার ত্বক সবসময় এত উজ্জ্বল এবং প্রাণবন্ত কেন? মেকআপ ছাড়াও কীভাবে তিনি এই দ্যুতি ধরে রাখেন?
সম্প্রতি, নিজের স্কিনকেয়ার ব্র্যান্ডের মালিক দীপিকা প্যারিস ফ্যাশন উইকের লুই ভিতঁ’র শোতে অংশ নেন। এ সময় তিনি তার সৌন্দর্য ও স্কিনকেয়ার রুটিন নিয়ে কথা বলেন। যা আপনাদের জানার কৌতূহল আরও বাড়িয়ে তুলবে।
দীপিকা শুধুই ফ্যাশন আইকন নন
বলিউডের এই স্টাইল কুইন ভারতের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত অভিনেত্রীদের একজন। বৃটানিকা অনুসারে, অভিনয়ে আসার আগে তিনি জাতীয় পর্যায়ের ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় ছিলেন। ক্যারিয়ারের শুরুতে মডেলিং জগতে সফলতা অর্জন করার পাশাপাশি তিনি এখন লুই ভিতঁ’র ও কার্টিয়েরের গ্লোবাল অ্যাম্বাসেডর। এছাড়াও, মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা নিয়ে তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় খোলামেলা কথা বলেন, যা সত্যিই প্রশংসনীয়।
দীপিকার সহজ কিন্তু কার্যকর স্কিনকেয়ার রুটিন
সেলিব্রিটিদের ত্বক এত নিখুঁত কেন? তারা তো সারাদিন মেকআপে ঢাকা থাকেন! দীপিকা এ বিষয়ে বলেন, ‘আমার প্রতিদিনের কোনো মেকআপ রুটিন নেই, তবে আছে স্কিনকেয়ার রুটিন।’
আরও চমকপ্রদ ব্যাপার হলো, এটি সেই বহু ধাপের জটিল কোনো ট্রেন্ডি রুটিন নয়। বরং একটি মিনিমালিস্ট (সরল) পদ্ধতি। তিনি বিশ্বাস করেন ‘লেস ইজ মোর’ রুটিনের ওপর। তবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো তিনি কখনো কোনো বিষয় বাদ দেন না। যেমন সানস্ক্রিন ব্যবহার বা পর্যাপ্ত পানি পান, সবই করেন। তার মতে, ‘কম করো, কিন্তু নিয়মিত করো।’
দীপিকার স্কিনকেয়ার রুটিন আপনি কিভাবে অনুসরণ করবেন?
হাইড্রেশন (পানি পান): শরীর পর্যাপ্ত পরিমাণে হাইড্রেট রাখুন। পানি খাওয়া শুরু করুন। ভেতর থেকে গাট (পাচনতন্ত্র) যত ভালো থাকবে, ত্বকও তত সুন্দর দেখাবে। চাইলে নারকেলের পানি, শসা-ভেজানো পানি বা এক চিমটি লবণ মিশিয়ে পানি পান করতে পারেন। যা গরমকালে শরীরের পানিশূন্যতা দূর করবে।
ক্লিনজিং (ত্বক পরিষ্কার করা): ডাবল ক্লিনজিং পদ্ধতি বেশ কার্যকর। যদি শুষ্ক ত্বক থাকে, তবে এটি না করলেও চলবে। তবে তৈলাক্ত ত্বকের জন্য এটি খুবই দরকারি। প্রথমে তেল-ভিত্তিক ক্লিনজার দিয়ে মুখ পরিষ্কার করুন। এরপর আপনার নিয়মিত ফেসওয়াশ ব্যবহার করুন। এটি ত্বকের গভীরে জমে থাকা ময়লা দূর করতে সাহায্য করবে।
ময়েশ্চারাইজার (ত্বক আর্দ্র রাখা): আপনার ত্বকের ধরন যাই হোক না কেন, ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। এটি ত্বকের প্রাকৃতিক সুরক্ষা স্তর বজায় রাখে এবং র্যাশ বা ব্রণ কমায়।
সানস্ক্রিন (সূর্যের ক্ষতি থেকে রক্ষা): এসপিএফ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি ক্ষতিকর ইউভি রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে। বাইরে থাকুন বা ঘরে, সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। প্রতি ২-৩ ঘণ্টা পর পুনরায় লাগান।
ঠোঁট ও চোখের যত্ন: ঠোঁট এবং চোখের চারপাশের অংশও যত্নের প্রয়োজন। এসপিএফ সমৃদ্ধ লিপ বাম বা শিয়া বাটারযুক্ত বাম ব্যবহার করুন। চোখের যত্ন নিতে একটি ভালো আই ক্রিম ব্যবহার করুন।
কম কিন্তু নিয়মিত যত্নই ত্বকের সৌন্দর্যের আসল রহস্য। আপনি যদি ১০ ধাপের স্কিনকেয়ার রুটিন করতে না পারেন, তবে দীপিকার মতো মিনিমালিস্ট রুটিন মেনে চলুন। ত্বককে সুস্থ ও উজ্জ্বল রাখুন।