শাড়ির পাড়ে সোনালি বা রুপালি ঝিলিক দেখলেই মনটা খুশি হয়ে যায়। বিশেষ করে যদি সেটা হয় আসল জরি! কিন্তু এখন বাজারে অনেক শাড়িতেই এমন জরি থাকে যেটা দেখতে আসল মনে হলেও আসলে কৃত্রিম। তাই শাড়ি কেনার সময় একটু খেয়াল রাখা দরকার। সহজ কিছু উপায় আছে যেগুলো দেখে আপনি বুঝতে পারবেন, শাড়ির জরিটা সত্যিই আসল কিনা।
আলোতে জরির ঝিলিক দেখুন
আসল জরির একটা নরম, ধীর-স্থির দীপ্তি থাকে। এটি খুব বেশি ঝলমলে বা চকচকে হয় না। রোদে ধরলে জরির এই কোমল ঝিলিকটা বোঝা যায়। যদি জিনিসটা খুব উজ্জ্বল বা একেবারে প্লাস্টিকের মতো উজ্জ্বল দেখায়। তবে সেটি সম্ভবত কৃত্রিম জরি।
ওজন পরীক্ষা করুন
আসল জরিতে প্রকৃত ধাতব সুতো ব্যবহৃত হয়। যেমন, রুপা বা সোনার প্রলেপ দেওয়া তামা। তাই এসব শাড়ি বেশ ওজন হয়ে থাকে। শাড়ির একপাশ তুলে দেখুন। ওজন একটু বেশি লাগলে সেটি আসল জরির ইঙ্গিত হতে পারে। যদি কাপড়টা একদম হালকা হয়, তাহলে তা নকল হবার সম্ভাবনা বেশি।
পেছনের দিক দেখুন
আসল জরির কাজ সাধারণত খুব নিখুঁতভাবে বোনা হয়। তাই শাড়ির পেছনের দিকেও কাজটা ঝকঝকে ও গোছানো দেখাবে। যদি দেখেন পিছনে সুতো উল্টে আছে, কাজ এলোমেলো, বা খসখসে সেলাই। তাহলে সেটা আসল জরি নয় বলেই ধরে নিতে পারেন।
আগুনে পোড়ানোর পরীক্ষা (সাবধানে)
এই পরীক্ষাটি শুধুমাত্র অতিরিক্ত কোনও সুতো থাকলে বা অনুমতি থাকলে করা যায়। খুব ছোট করে একটি সুতো জ্বালিয়ে দেখুন। যদি জরি আসল হয়, তবে সেটা পোড়ার পর নরম ছাই হয়ে যাবে। আর যদি পলিথিনের মতো গলে শক্ত দলা তৈরি করে, তাহলে সেটা কৃত্রিম। তবে পুরো শাড়িতে যেন আগুন না লাগে, সেই দিকে খেয়াল রাখবেন।
বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিন
নিজে বুঝতে না পারলে পেশাদারদের শরণাপন্ন হন। কোনো অভিজ্ঞ তাঁত শিল্পী, হ্যান্ডলুম দোকানের মালিক, বা এমনকি কিছু গয়নার দোকানদারও আসল জরি চেনার দক্ষতা রাখেন। কয়েক মিনিটেই তারা বুঝিয়ে দিতে পারেন আপনার জরিটা আসল, না নকল।
জরি মানেই কেবল ঝকমক নয়। জরি মানে ইতিহাস, ঐতিহ্য আর নিখুঁত কারুকাজ। তাই আপনি যদি এমন শাড়ি কিনে থাকেন যেটির মূল্য অনেক, তা হলে একটু সচেতন থাকুন। আসল জরি শুধু দেখতেই নয়, পরতেও অন্যরকম। দেখে-শুনে কিনলে ঠকে যাবেন না।
তথ্যসূত্র: টাইমস নাউ