আমেরিকার ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আজ (বুধবার) প্রকাশিত নির্বাচনের ফলাফলে রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্প ইতোমধ্যেই ২৭৯ ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট পেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করেছেন। ডেমোক্রেট প্রার্থী কমলা হ্যারিসের প্রাপ্তি সেখানে ২২৩ ভোট। ফলে নির্বাচনে ট্রাম্পের জয় নিয়ে আর কোনো সংশয় নেই।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের বিজয়ের প্রেক্ষাপটে জনপ্রিয় ক্রিপ্টোকারেন্সি বিটকয়েনের দাম উঠেছে রেকর্ড উচ্চতায়। আজ (বুধবার) প্রথমবারের মতো বিটকয়েনের দাম কয়েনপ্রতি ৭৫ হাজার মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যায়। দিনের এক পর্যায়ে দায় পৌঁছয় রেকর্ড ৭৫,৩১৭.৫৯ মার্কিন ডলারে।
বিটকয়েনের দামে পূর্বের রেকর্ডটি (৭৩,৭৫০ ডলার) হয়েছিল চলতি বছরের ১৪ মার্চ তারিখে। অবশ্য মার্চের পর থেকে বেশিরভাগ সময়ই বিটকয়েনের দাম ৭০ হাজারের নিচেই অবস্থান করেছে। তবে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে গত প্রায় এক মাস ধরেই বিটকয়েনের দামে ঊর্ধ্বগতি লক্ষ করা গেছে। উল্লেখ্য, বিটকয়েনের এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ডে (ইটিএফ) গত ১১ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ৪ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থ প্রবাহ দেখা গেছে, যেটা বাজারে বিটকয়েনের উচ্চ চাহিদার দিকেই ইঙ্গিত করছে।
আজ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার দিনে বেশিরভাগ সময়ই বিটকয়েনের দাম ৭৪ হাজার ডলারের উপরে অবস্থান করেছে। এই রিপোর্ট লেখা সময় বিটকয়েনের দাম ছিল ৭৪,২৬৮.৮১ মার্কিন ডলার, এটিও গত মার্চের রেকর্ডের চেয়ে ৫০০ ডলার বেশি।
নির্বাচনের ফলাফল ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে আসলে বিটকয়েনের বাজারে নতুন রেকর্ড হতে পারে বলে অনেকেই অনুমান করেছেন। বিশেষ করে নির্বাচনী প্রচারণায় ক্রিপ্টোকারেন্সির পক্ষে স্পষ্ট অবস্থানের কারণে ট্রাম্প দারুন জনপ্রিয় হয়ে উঠেন ক্রিপ্টোকারেন্সি সংশ্লিষ্টদের মাঝে।
অন্য ক্রিপ্টোকারেন্সিগুলোতে কতটা প্রভাব পড়েছে?
ক্রিপ্টোকারেন্সির বাজারে ট্রাম্পের বিজয়ের ইতিবাচক প্রভাব শুধু বিটকয়েনেই সীমাবদ্ধ ছিল না। এই যেমন দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্রিপ্টোকারেন্সি ইথেরিয়াম-এর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৭ শতাংশ এবং ক্রিপ্টোকারেন্সির বাজারে তৃতীয় বৃহত্তম সোলানা’র দামে ১৫ শতাংশ ঊর্ধ্বগতি লক্ষ করা গেছে।
তবে সবচেয়ে বেশি দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ডগকয়েনে। আলোচিত এই ক্রিপ্টোকারেন্সিটির দাম প্রায় ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। এক্ষেত্রে অবশ্য নির্বাচনে ট্রাম্পের সহযোগী ও শীর্ষ প্রযুক্তি ব্যক্তিত্ব ইলন মাস্কের বড় অবদান রয়েছে। মাস্ক অনেকদিন ধরেই ডগকয়েনের পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছেন। সম্প্রতি মাস্ক দাবী করেছেন যে, ট্রাম্প বিজয়ী হলে তিনি তাঁর সরকারের ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি (DOGE) পরিচালনা করবেন। ফলে, ডগকয়েন নিয়ে ক্রিপ্টোকারেন্সি প্রেমীদের মধ্যে উতসাহ-উদ্দীপনা বৃদ্ধি পায়।
ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় ক্রিপ্টোকারেন্সি সহায়ক নীতিমালা তৈরির জোড়াল সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া ক্রিপ্টোকারেন্সির বাজারে লেনদেনে সরকারী নিয়ন্ত্রণ ও হস্তক্ষেপ কমে আসতে পারে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
তথ্যসূত্র: ফরচুন, ইকোনমিক টাইমস